কাইয়ুম আল রনি, দিল্লী থেকে:: একবার কল্পনা করুনতো বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমের আবহটা আসলে কেমন? বিশ্বকাপ থেকে নয়, কল্পনায় নিয়ে আসুন আরো আগ থেকে। এশিয়া কাপ থেকে, বা তারও আগ থেকে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ইস্যুতে শুরু, এরপর এশিয়া কাপে ব্যর্থতা, আফগান সিরিজে হার, তামিম-সাকিব ‘এপিসোড’ মিলিয়ে আসলেই কি সুখী বাংলাদেশের ড্রেসিং রুম?
এশিয়া কাপের ব্যর্থতার গ্লানিতেই শেষ বিশ্বকাপ। সঙ্গী হলো তামিম-সাকিব অবসর কাণ্ড, ফিরে আসা, বাদ দেওয়া নাটক। যেনো হার মেনেছে সিনেমার দৃশ্যও। একজন ভিডিওয়া বার্তা ছাড়লেন দল বিমানে থাকতে, বিমান থেকে নামার পরই আসলো আরেক জনের পাল্টা ইন্টারভিউ। সবই যেনো অদৃশ্য পরিচালকের লিখে রাখা দৃশ্যের মঞ্চায়ন।
একটা বৈশ্বিক আসরের আগে যেমন ছন্দে থাকার কথা ছিলো বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের. এসব ঘটনার পর তারা কি আসলেই সেই ছন্দে ছিলেন, একটা সুখকর পরিবেশে ছিলেন? টাইগার ড্রেসিংরুমের পরিবেশতো সেই কবে থেকে কালো মেঘে ডাকা, ক্রিকেটার, কোচ আর কর্মকর্তাদের কোন্দলে ছিন্নভিন্ন ১৮ কোটি বাঙালির স্বপ্ন।
বিশ্বকাপের আগে সুস্থ পরিবেশে আনন্দ-বিনোদনে থাকার কথা যে ক্রিকেটারদের, বিশ্বকাপের আগেই সেই তারা দেখলেন দলীয় কোন্দল, নিয়মিত অধিনায়কের সরে যাওয়া,বাদ দেওয়া নাটক। ভারতের বিমান ধরার দিন সাক্ষাৎকারে যে অধিনায়ক জানালেন, সৈন্য রেখে কমান্ডর পালালে কি হবে? সেই অধিনায়কই সৈন্যদের বিশ্ব মঞ্চে রেখে গেলেন কি এমন জরুরী কাজে?
বিশ্বের সব আধুনিক-সুযোগ সুবিধার ভারতে কি তিনি অনুশীলনের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ পাননি, অনুশীলনের জন্য, রানে ফেরার জন্যই যে তাকে যেতে হলো দেশে । যেই যুদ্ধ জয়ের প্রস্তুুতিতে সৈন্যদের রেখে তিনি গেলেন দেশে, ফির এসে কি পেরেছেন সেই যুদ্ধ জিততে? আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশের কাছে আত্মস্পূর্ণই করেননি, ইডেনের পার্শ্বেই বয়ে চলা গঙ্গায় যেনো বিসর্জন দিয়েছেন কোটি বাঙালীর স্বপ্ন। ওপারের পদ্মা, এপারের গঙ্গায় ডুবিয়েছেন লাল-সবুজের ক্রিকেট তরী।
বাংলাদেশ দল যে একটা অসুখী দল, নানা রোগে আক্রান্ত দল বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সে সেটাই ফুটে উঠেছে। আইসিইউতে থাকা এই অসুখী দলটাকে টেনে তুলবে কে? অসুখী ঘরে সাফল্য কি আর এতো সহজে ধরা দেবে? সেই ‘কঠিন’ কাজটা সহজ করবেনটা কে? অধিনায়ক সাকিব থেকে শুরু করে সিনিয়র মুশফিকুর রহিম, হৃদয়, শান্ত, লিটনরা সবাইকে যে অসুখের রোগে ধরেছে। ফর্মহীনতার রোগ অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে রেখেছে?
ক্রিকেট বোর্ডের কর্তারা কি পারবেন ভবিষ্যতের জন্য এই অসুখের সংসারে ঔষধ প্রয়োগ করতে? ফর্মহীনতার রোগটাকে সরাতে দাওয়াই দিতে, নাকি রোগটা ছড়িয়েছে তাদের কাছ থেকেই। দিল্লীতে কি মিলবে এসুখের ঔষধ? ঘুরে দাঁড়াতে কি পারবে সাকিবরা। নাকি দশ দলের টুর্নামেন্টে দশম স্থান থেকেই সুন্দর বনের টিকিট ধরতে হবে বাঘেদের? ৬ নভেম্বর মঙ্গলবারই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের পর হয়তো মিলবে এই প্রশ্নের উত্তর। তবে অসুখের এই সংসারে সুখ আনবে কে? সেই প্রশ্নের উত্তর অজানা।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/০০
Discussion about this post