নিজস্ব প্রতিবেদক: মাঠের ইনজুরি থেকে টাইফয়েড। মোটেই ভালো নেই তরুণ গতিদানব ইবাদত হোসেন। ইংল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে পড়েছিলেন সাইড স্ট্রেইনের ইনজুরিতে, এরপর জ্বর সেখান থেকে টাইফয়েড। শুক্রবার রাতে তার সাথে যখন মুঠোফোনে কথা বলছিলাম সবে মাত্র হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে উঠেছেন বিসিবি একাডেমি ভবনে। এর কিছুক্ষণ আগেই পেয়েছেন জীবনের সবচেয়ে আনন্দের খবর, সুখের খবর।
জাতীয় ক্রিকেট দলে সিলেট প্রতিনিধিতিত্ব হারিয়েছে বছর দুয়েক আগেই। সর্বশেষ সিলেটের হয়ে জাতীয় দলে খেলে ছিলেন আবুল হাসান রাজু। এরপর জাতীয় দলে আর কোন সুখবর নেই সিলেটের। সুযোগটা সিলেটবাসীকে এনে দিলেন বিমান বাহিনীর সদস্য ইবাদত। সিলেেটের এই ক্রিকেটার প্রথম বারের মত সুযোগ পেয়েছেন জাতীয় দলে। বহুদিন থেকে জাতীয় দলে সিলেটের ‘খড়া’ কাটলো ইবাদতের মাধ্যমেই।
নিউজিল্যান্ড সফরের বিসিবির ডাকা স্কোয়াডে সুযোগ মিলেছে ইবাদতের। কিন্তুু এত আনন্দের মাঝেও ভালো তিনি। মুঠোফোনে যখন কথা বলছিলেন তখন জ্বরটা যেনো বেড়ে যাচ্ছে জানিয়ে দোয়া চাইলেন সিলেট বাসীর কাছে।
নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে ইবাদত বলেন, এই স্বপ্নটা দেখে আসছিলাম দীর্ঘ দিন থেকেই। মনে মনে একটাই পণ ছিলো জাতীয় দলে খেলবো। সুযোগ পেয়ে কি রকম আনন্দ লাগছে সেটি আমি ভাষা দিয়ে প্রকাশ করতো পারবো না।
ইবাদতের উঠে আসা অতটা সহজ ছিল না। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার কাটলতলী গ্রামের এই ছেলে ছিলেন পরিবারের সবার বড় সদস্য। পাচঁ ভাই আর এক বোনের সংসাদের তিনি ভাইদের বড়। একমাত্র বড় বোনের বিবাহ হয়ে গেছে।
পরিবারের বড় ছেলে, তাই পরিবার সামলানোর দায়িত্বটা পড়েছিলো তার কাঁধেই। পরিবারের দায়িত্ব নিতে গিয়ে প্রিয় সখ ক্রিকেট খেলাকে বিসর্জন দিয়ে বেছে নেন বৈমানিকের জীবন।
২০১২ সালে বিমান বাহিনীতে চাকুরী নিয়ে ধরেন পরিবারের হাল। এ ভাবেই চলছিলো ক্রিকেটার ইবাদতের জীবন। কিন্তুু ভুলে যাননি কৈশোরের স্বপ্ন, দুরন্তপনার ক্রিকেট। কঠীন শৃঙ্খল জীবেনর ভিতরেই চালিয়ে গেছেন অনুশীলন। ফলটা তাই আজ পেয়ে গেলেন লাল-সবুজের স্কোয়াডে ডাক পেয়ে।
নিজের এতদূর আসার পেছনে বিমান বাহিহনীর সবচেয়ে বড় অবদান জানিয়ে ইবাদত বলেন, বিমান বাহিনীর প্রধান চীফ এয়ার মার্শাল আবু এহসান সুযোগ না দিলে আমার এতদূর আসা হতো। আমি কৃতজ্ঞ জানাই আমার প্রিয় কর্মস্থল বিমান বাহিনীর প্রতি।
চাকুরী করা অবস্থায় অনুশীন করা কতটা চ্যালেঞ্জের ছিলো জানতে কঠীন চ্যালেঞ্জের জীবন থেকে ক্রিকেটের রঙিন দুনিয়ায় আসা এই ক্রিকেটার বলেন, মোটেই সুখর ছিল না।
বিমান বাহিনীর স্কোয়াডন লিডার রাজিব, সাব্বির, আলমের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ইবাদত বলেন, স্যাররা আমাকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছেন। প্রতিটি সময়ই উনারা আমাকে সুযোগ করে দিতেন। কখনো অসহযোগিতা করেননি। এগিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা দিয়েছেন।
নিজের ব্যক্তিগত লক্ষ্য নিয়ে ইবাদত বলেন, সুযোগ পেয়েছি। এবার সুযোগটাকে কাজে লাগাতে চাই। এমন একটা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। এটা অন্য রকম এক আনন্দের মুহুর্ত।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/০০