স্পোর্টস ডেস্ক:: আফগান ক্রিকেটে যেনো রুপকথার গল্প। দিল্লীর পর এবার লাহোরেও আফগানদের শিকার ইংল্যান্ড। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে ইংল্যান্ডকে বিদায় করে দিয়ে সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখলো আফগানিস্তান। ইব্রাহিম জর্দানের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেরা ইনিংসের কাছে বৃথা গেছে ইংলিশ ক্রিকেটার জো রুটের সেঞ্চুরির ইনিংস। শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৮ রানে হারিয়ে বিদায় করে দিলো আফগানিস্তান।
পরপর দুই হারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে বিদায় হলো ইংল্যান্ডের। এক জয় ও এক হার নিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা আফগানিস্তান টিকে আছে শেষ চারের লড়াইয়ে। গ্রুপের প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে দুই ম্যাচে তিন করে। আফগানদের পয়েন্ট দুই। শেষ ম্যাচ জিততে পারলে সম্ভাবনা থাকবে আফাগানদেরও।
লাহোরে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন আফগানিস্তানের অধিনায়ক হাসমতউল্লা শহিদী। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করে আফগান ব্যাটাররা সাত উইকেটে ৩২৫ রানের বিশাল পূঁজি গড়েন। ব্যাট হাতে লড়াই করেন ওপেনার ইব্রাহিম জর্দান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকে পর খুব বেশি ম্যাচ খেলা হয়নি এই তরুণের। তবুও ব্যাট হাতে তিনিই জ্বলে উঠেন শক্তিশালী ইংলিশ বোলিং লাইনআপের বিরুদ্ধে। খেলেন ১৭৭ রানের দুর্দান্ত ‘রেকর্ড’ গড়া এক ইনিংস। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যা ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ সংগ্রহ। ১৪৬ বলের ইনিংসে ১২টি চার ও ৬টি ছ্ক্কা হাঁকিয়েছেন আফগানিস্তানের তরুণ এই ব্যাটার।
ইব্রাহিম জর্দানের সেঞ্চুরর ম্যাচে অধিনায়ক হাসমতউল্লা শহিদী, আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও মোহাম্মদ নবীরাও খেলেছেন দায়িত্বশীল ইনিংস। তিন ছক্কা ও এক চরে ৩১ বলে ৪১ রান করেছেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। তিন ছক্কা ও দুই চারে ২৪ বলে ৪০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন মোহাম্মদ নবী। তিন বাউন্ডারিতে ৬৭ বলে ৪০ রানের ধের্য্যশীল ইনিংস খেলেছেন অদিনায়ক হাসমতউল্লা। তাতেই আফগানিস্তান সাত উইকেটে ৩২৫ রানের পূঁজি পায়।
ইংল্যান্ডের হয়ে জোফ্রা আর্চার তিনটি ও লিয়াম লিভিংস্টোন দু’টি করে উইকেট লাভ করেন।
৩২৬ রানের বিশাল লক্ষ্যে খেলতে নামা ৩০ রানেই ওপেনার ফিল সল্ট ও জেমি স্মিথের উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে। ১৩ বলে ১২ রান করে ফিল সল্ট ইনিংসের তৃতীয় ওভারের তৃতীয বলে দলীয় ১৯ রানে ফিরেন সাজঘরে। তিনে নামা জেমি স্মিথ সমান বলে করেন মাত্র ৯ রান। তার বিদায়ে দলীয় ৩০ রানেই দুই উইকেট হারায় ইংলিশরা।
তৃতীয় উইকেটে জো রুট ও বেন ডাকেট ৬৮ রানের জুটি গড়ে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেন। ১৭তম ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ৯৮ রানে ডাকেটের বিদায়ে ভাঙে সেই জুটি। চারটি বাউন্ডারিতে ৪৫ বলে ৩৮ রান করেন এই ওপেনার। এরপর থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে ইংলিশরা। এক প্রান্ত আগলে রেখে দারুণ ব্যাট করেন সেঞ্চুরিয়ান জো রুট। পঞ্চম উইকেটে বাটলারকে নিয়ে ৮৩ রানের জুটি গড়েন। ইনিংসের ৩৭তম ওভারের পঞ্চম বলে দলীয় ২১৬ রানে পঞ্চম উইকেটে বাটলারের বিদায়ে ভাঙে সেই জুটি। দুই ছক্কায় ৪২ বলে ৩৮ রান করেন ইংলিশ অধিনায়ক।
সপ্তম উইকেটে রুট জেমি ওভারটনকে নিয়ে ৫৪ রানের জুটি গড়ে দলকে প্রায় জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দেন। ইনিংসের ৪৬তম ওভারের পঞ্চম বলে দলীয় ২৮৭ রানে রুটের বিদায়ে হারের শঙ্কা জাগে ইংলিশদের। সাজঘরে ফেরার আগে ১১১ বলে ১২০ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন এই সেঞ্চুরিয়ান। এগারো চার ও এক ছক্কায় সাজান লড়াই করা ইনিংসটি। ২৮ বলে ৩২ রান করেন জেমি ওভারটান। ইংল্যান্ড ইনিংসের এক বল আগে অলআউট হয় ৩১৭ রানে।
আফগানিস্তানের হয়ে আজমতউল্লাহ ওমরজাই পাঁচটি ও মোহাম্মদ নবী দু’টি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটােয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০