নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বিশ্বকাপে আজ গুরুত্বপূর্ণ লড়াই বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার। যদিও বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের আশা কোনো দলেরই বেঁচে নেই আর। তবে আগামী চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জায়গা নিশ্চিত করার জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ আজকের ম্যাচটি।
দিল্লিতে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ২৭৯ রানে অলআউট হয়েছে শ্রীলঙ্কা। এর আগে বোলিং করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই কুশল পেরেরাকে ফিরিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। তার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন পেরেরা। ডাইভ দিয়ে ক্যাচটি লুফে নেন মুশফিক। ৪ রানে ফিরে যান পেরেরা। এরপর কুশল মেন্ডিস এবং পাথুম নিশাঙ্কা দেখেশুনে খেলতে খেলতে দলের রান বাড়াতে থাকেন। এই দুজনের ৬১ রানের জুটি ভাঙেন সাকিব।
৩০ বলে ১৯ রান করা মেন্ডিস সাকিবের বলে লং অনে ক্যাচ তুলে দেন। দৌড়ে এসে লঙ্কান অধিনায়কের ক্যাচটি লুফে নেন শরিফুল ইসলাম। তারপরের ওভারেই নিশাঙ্কাকে বিদায় করেন তানজিম হাসান সাকিব।বিশ্বকাপ অভিষেকে এটাই এই পেসারের প্রথম উইকেট। অসাধারণ ছন্দে খেলতে থাকা নিশাঙ্কাকে ইনসাইড এজে বোল্ড করে ফেরান তিনি। ফেরার আগে তার ব্যাটে আসে ৩৬ বলে আটটি চারে ৪১ রান। দলীয় ৭২ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।
২৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সাদিরা সামারাবিক্রমা সীমানার কাছে ক্যাচ দেন মাহমুদউল্লাহর হাতে। ৪২ বলে ৪ চারে ৪১ রান করেন তিনি। তার আউটের পর মাঠে বল মোকাবিলা করতে দেরি করে ফেলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। তখন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আবেদন করলে কিছুটা সময় নিয়ে আউটের সিদ্ধান্ত দেন আম্পায়ার। ক্ষুব্ধ হয়ে মাঠ ছেড়ে যান লঙ্কান ব্যাটার ম্যাথিউস। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ব্যাটার হিসেবে টাইম আউট হলেন তিনি।
নিয়ম অনুযায়ী, একজন ব্যাটার আউট হয়ে যাওয়ার পর পরবর্তী ব্যাটারকে ৩ মিনিটের মধ্যে খেলার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। কিন্তু ম্যাথিউস সেটি হতে পারেননি। উইকেটে গিয়ে তিনি দেখলেন, তাঁর হেলমেটের স্ট্র্যাপে কোনো একটা সমস্যা। সম্ভবত ওটা ছেঁড়াই ছিল। তিনি ড্রেসিং রুমে ইশারা করলেন নতুন হেলমেটের জন্য। অতিরিক্ত খেলোয়াড়ের মাধ্যমে নতুন হেলমেট আনতে কিছুটা দেরি হয়ে গেল। এই সময় ম্যাথিউসের বিপক্ষে ‘টাইমড আউটে’র আপিল করে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের আপিল ও ক্রিকেটের আইন মেনে ম্যাথিউসকে ‘টাইমড আউট’ দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না আম্পায়ারদের। অবশ্য এই বিষয় নিয়ে আম্পায়ারের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলেছেন শ্রীলঙ্কার এই ব্যাটার। একপর্যায়ে বিষয়টা নিয়ে সাকিবের কাছে গেছেন তিনি। কিন্তু সাকিব তাঁকে আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। কিন্তু আম্পায়াররা সিদ্ধান্ত বদলান নি। কোনো বল না খেলে ইতিহাসের অংশ হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় ম্যাথিউসকে।
সামারাবিক্রমা ও ম্যাথিউস ফেরার পর ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে নিয়ে ৭৮ রানের জুটি গড়েছিলেন আসালাঙ্কা। এই জুটি ভাঙেন মিরাজ। ডি সিলভা মিরাজের লেন্থ বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে চেয়েছিলেন। তবে বলের লাইন মিস করেন। বল চলে যায় মুশফিকুর রহিমের হাতে। প্রথম দফায় স্টাম্পিং করতে পারেননি মুশফিক। বল হাতে নেয়ার আগেই গ্লাভস দিয়ে তিনি স্টাম্প ভেঙে দিয়েছিলেন। যদিও এরপর বল হাতে নিয়ে স্টাম্প উপড়ে স্টাম্পিং পূর্ণ করেন মুশফিক। ফলে ফিরতে হয় ৩৬ বলে ৩৪ রান করা ডি সিলভাকে।
এরপর সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন আসালাঙ্কা। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পেয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। ১০৫ বলে ৬ চার ও ৫ ছয়ে ১০৮ রান করে তানজিম হাসান সাকিবের শিকারে পরিণত হন তিনি। ৩১ বলে ৩ চারে ২২ রান করে শরিফুলের বলে আউট হয়েছেন মাহেশ থিকসানা। বাংলাদেশের পক্ষে সফলতম বোলার অভিষিক্ত তানজিম সাকিব। ১০ ওভারে ৮০ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন তিনি। সাকিব ১০ ওভারে ৫৭ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন। ২ উইকেট শিকার করেছেন শরিফুলও। বাকি উইকেটটি মিরাজের ঝুলিতে গেছে।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/১১০
Discussion about this post