স্পোর্টস ডেস্কঃ প্রথম বারের মতো অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের শিরোপা জেতার ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ দল। দুবাইয়ে ফাইনালে একচেটিয়া আধিপত্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ১৯৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন জুনিয়র টাইগাররা। শুধুমাত্র চ্যাম্পিয়ন নয়, টুর্নামেন্টে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। বাংলাদেশের করা ২৮২ রানের জবাবে মাত্র ৮৭ রানেই গুঁটিয়ে গেছে আমিরাতের ইনিংস।
গ্রুপ পর্বে টানা তিন জয়ে সেমি ফাইনালে উঠে শিবলি-রাব্বিরা। এরপর সেমি ফাইনালে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ৮ বারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে বাংলাদেশ। এবার সেই ফাইনালে স্বাগতিক আমিরাতকে হারিয়ে মরুর বুকে নতুন ইতিহাস গড়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এর আগে ২০১৯ সালের আসরে ফাইনাল খেললেও, শিরোপা জিততে পারেনি দল।
অপরদিকে আসরে গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের সাথে সেমি নিশ্চিত করে আমিরাত। গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কার মতো দলকে হারানোর পর, সেমি ফাইনালে পাকিস্তানকে বিদায় করে প্রথমবার ফাইনালে উঠে স্বাগতিকরা। তবে ফাইনালে এসে বাংলাদেশের কাছে স্রেফ উড়ে গেল দলটি। প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতার আশা অধরা থেকে গেল।
বাংলাদেশের দেওয়া ২৮৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই চাপে পড়ে আমিরাত শিবির। পঞ্চম ওভারে গিয়ে দলীয় ১২ রানে ওপেনার আরিয়ানশ শর্মাকে দিয়ে প্রথম উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। আকশাত রাইয়ের বিদায়ে দ্বিতীয় উইকেট হারায় দলীয় ২৮ রানের মাথায়। দুটি উইকেটই তুলে নিয়ে দলকে দারুণ শুরু এনে দেন পেসার মারুফ মৃধা।
এরপর থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে আমিরাত। জুনিয়র টাইগারদের বোলিং তোপের সামনে দাঁড়াতে না পেরে, শেষ পর্যন্ত ২৪.৫ ওভারে মাত্র ৮৭ রানে অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা। দলের পক্ষে ২ বাউন্ডারিতে সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন ধ্রুব পারাশার। ১১ রান আসে আকশাত রাইয়ের ব্যাট থেকে। এর বাইরে আর কেউই ব্যক্তিগত রান ডাবল ডিজিটে নিয়ে যেতে পারেননি।
বাংলাদেশের হয়ে মারুফ মৃধা ও রোহানতদৌল্লা বর্ষন সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট শিকার করেন। এর বাইরে ইকবাল হোসেন ইমন ও শেখ পারভেজ হোসেন জীবন ২টি করে উইকেট লাভ করেন।
এর আগে রোববার দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ফাইনালে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৮২ রানের বড় পুঁজি দাঁড় করায়। ১৪ রানেই নিজেদের প্রথম উইকেট ওপেনার জিসানকে হারায় বাংলাদেশ। কিন্তু আরেক ওপেনার আশিকুর রহমান শিবলি ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের ব্যাটে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় দল। দুজনে মিলে গড়েন ১২৫ রানের বড় জুটি। রিজওয়ান ৭১ বলে ১ ছক্কা ও ৪ চারে ৬০ রান করে আউট হন ধ্রুব পারাশরের ওভারে। এরপর শিবলিকে ৮৬ রানের জুটিতে সঙ্গ দেন আরিফুল ইসলাম।
একটা সময় সেঞ্চুরি তুলে নেন শিবলি। ১২৯ বলে তিন অংকের ঘরে পৌঁছান তিনি। আরিফুল আউট হন ঠিক ৫০ রান করে। মাত্র ৪০ বলে ৬ চারে এই ইনিংস সাজান তিনি। এরপর আহরার আমিন ৫ ও শিহাব জেমস ৩ রান করে দ্রুত বিদায় নেন। তাদের বিদায়ের পর দারুণ এক ক্যামিও ইনিংস খেলেন অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি। ১১ বলে ২ চার ও এক ছয়ে ২১ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
শিবলি শেষ পর্যন্ত ১৪৯ বলে ১২৯ রান করে আউট হন। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ১২টি চার ও ১টি ছয়ের মারে। চলতি এশিয়া কাপে এটি শিবলির দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। আগের চার ম্যাচে দুটি অর্ধশতক ও একটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ১১৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। আমিরাতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৭১ রান করেন তিনি। এরপর জাপানের বিপক্ষেও খেলেন ৫৫ রানের অনবদ্য এক ইনিংস।
এই ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতের হয়ে ৪টি উইকেট নেন আয়মান আহমেদ। ওমিদ রহমান নেন ২টি উইকেট। একটি করে উইকেট পান হার্দিক পাই ও ধ্রুব।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/সা
Discussion about this post