নিজস্ব প্রতিবেদক:: সেন্ট লুসিয়া টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে শতরানে পিছিয়ে আছে সফরকারী বাংলাদেশ। স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০৬ রানের লিড নিয়েছে। বাংলাদেশের করা ২৬৫ রান টপকে দলটি দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে ৫ উইকেটে ৩৪০ রানে।
৬৭ রানে শুন্য উইকেট নিয়ে দিন শুরু করা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সকালেই চমকে দেন বাংলাদেশের বোলাররা। দ্রুতই তুলে নেন চারটি উইকেট। এক রানের মধ্যেই তিন উইকেট শিকার করেন স্বাগতিকদের। তবে সকালের প্রথম সশনে চমকে দেওয়া সফরকারী বোলাররা দিনের বাকীটা সময় হতাশায় পুড়েছেন। কাইল মায়ার্সের সেঞ্চুরিতে লিড বড় করছে দলটি।
ইনিংসের ২৬তম ওভারের শেষ বলে দলীয় ১০০ রানে প্রথম উইকেট হারায় দলটি। ব্যক্তিগত ৪৫ রানে ওপেনার জন ক্যাম্পেবলকে ফিরিয়ে দেন শরিফুল। এরপরই জোড়া আঘাত করেন পেসার খালেদ। তার আগে অবশ্য মিরাজ ফিরিয়ে দেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ব্র্যাথওয়েটকে। দলীয় ১৩১ রানে ইনিংসের ৩৮ ওভারের প্রথম বলে স্বাগতিক অধিনায়ককে ব্যক্তিগত ৫১ রানে সাজঘরে পাঠান তিনি।
৩৯তম ওভারের প্রথম ও শেষ বলে দুটি উইকেট শিকার করে স্বাগতিকদের চমকে দেন পেসার খালেদ। ওভারের প্রথম বলে দলীয় ১৩১ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ২২ রান করা রায়মনকে বোল্ড করেন তিনি। ওভারের শেষ বলে রানের খাতা খুলার আগেই সাজঘরে পাঠিয়ে দেন বোনারকে। দিনের শেষ উইকেটটি হারায় স্বাগতিকরা দলীয় ২৪৮ রানের মাথায়। ইনিংসের ৭৪তম ওভারের চতুর্থ বলে ব্ল্যাকউডকে ফেরান মিরাজ। ৪০ রান করা এই ব্যাটার তার আগে পঞ্চম উইকেটে মায়ার্সকে নিয়ে ১১৬ রানের জুটি গড়েন।
ষষ্ট উইকেটে কাইল মায়ার্স ও ডি সিলভা প্রতিরোধ গড়েন। দিন শেষে তাদের জুটি অপরাজিত আছে ৯২ রানে। তের চার ও দুই ছয়ে ১৫০ বলে শতক হাঁকানো মায়ার্স অপরাজিত আছেন ১২৬ রানে। ডি সিলভা তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন ২৬ রানে। ১০৬ ওভারে পাঁচ উইকেটে দলটির সংগ্রহ ৩৪০ রান।
বাংলাদেশের হয়ে মিরাজ ও খালেদ ২টি করে এবং শরিফুল ১টি করে উইকেট শিকার করেছেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ কিছুটা ভাল শুরু করেছিলো। তবে হতাশ করেন মাহমুদুল হাসান জয়। তার বিদায়ের পর শান্তকে নিয়ে এগুচ্ছিলেন তামিম ইকবাল। দুর্দান্ত ব্যাট করা এই ড্যাশিং ওপেনার হাফ সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৪ রান দূরে থাকতেই ফিরলেন।
ইনিংসের ১২ ওভার পর্যন্ত নিরাপদেই কাটায় বাংলাদেশ। ১৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ওপেনার জয় ফিরে গেলে ভাঙে ৪১ রানের উদ্বোধনী জুটি। ৩১ বলে এক চারে ১০ রান করেন এই ওপেনার। তার বিদায়ের পরও অবিচল ছিলেন তামিম ইকবাল। ফিফটি থেকে মাত্র ৪ রান দূরে থাকতে তিনি ফিরেন সাজঘরে। দলীয় ৬৮ রানে তার বিদায়ে দ্বিতীয় উইকেট হারায় টাইগাররা। ৪৬ রানের ইনিংসেই তিনি ৯টি বাউন্ডারি হাঁকানা। ৬৭ বল খেলেন এই ওপেনার।
তামিমের বিদায়ের পর ইনিংসের ৩৪তম ওভারের চতুর্থ বলে শতরা পেরুনো বাংলাদেশ ১০৫ রানে হারায় তৃতীয় উইকেট। ব্যক্তিগত ৩৩ বলে ২৩ রানে ফিলিপসের এলবিডাব্লিউ’র ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফিরেন বিজয়। তার বিদায়ের পর শান্ত ফিরেন পরের ওভারেই। দলীয় ১০৫ রানেই বাংলাদেশ হারায় চতুর্থ উইকেট। ৩৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মায়ার্সের বলে তিনিও এলবিডাব্লিউ হন ব্যক্তিগত ২৬ রানে। ৭৩ বলের ইনিংসে চারটি চার হাঁকান তিনি। তার আগে দু’জনে মিলে তৃতীয় উইকেটে ৩৭ রানের জুটি গড়েন।
এরপর বাংলাদেশের ব্যাটাররা রীতিমতো যাওয়া-আসার মিছিল শুরু করেন। ৪ উইকেটে ১০৫ থেকে টাইগাররা অলআউট হয়ে যায় ৬৪.২ ওভারে ২৩৪ রানে। হাফ সেঞ্চুরিয়ান লিটন ব্যাট হাতে কিছু লড়াইয়ের চেষ্টা করেন। তবে ফিফটির পরপরই তিনি সাজঘরে ফিরলে বাংলাদেশের বড় স্কোরের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়। দলীয় ১৯১ রানে অষ্টম উইকেটে লিটন ফিরেন ব্যক্তিগত ৫৩ রানে। ৭০ বলের ইনিংসে আটটি চারের মার ছিলো। নবম উইকেটে এবাদত-শরিফুলের তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩৬ রানের জুটিতে বাংলাদেশ দুইশো রানের কোটা পেরুতে পারেনি। এবাদত ৩৫ বলে ২১ রানে অপরাজিত থাকেন। চারটি বাউন্ডারিতে সাজান তার ইনিংসটি। পাঁচ চারে ১৭ বলে ২৬ রান করেন শরিফুল। অধিনায়ক সাকিবের ব্যাট থেকে আসে ৮ রান। সোহান করেন ৭ রান। ৯ রান করে সাজঘরে ফিরেন মিরাজ।
ক্যারিবিয়ানদের হয়ে জোসেফ ৫০ রানে ৩টি ও সিলিস ৫৩ রানে ৩টি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০