টানা নবম জয়, বল হাতে মিরাজ-শরিফুল, ব্যাট হাতে মাহমুদউল্লাহ

0
6

স্পোর্টস ডেস্ক:: অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ। এক দিনের ফরম্যাটে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পাত্তাই দিচ্ছে না টাইগাররা। টানা নবম জয় তুলে নিয়েছে তামিম ইকবালের দল। টেস্ট ও টি-২০ সিরিজে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ নিজেদের ফেভারিট ফরম্যাট ওয়ানডের প্রথম ম্যাচেই স্বাগতিকদের হারিয়েছে ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে।

বল হাতে দলের জয়ে যেমন গুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন ম্যাচ সেরা হওয়া মিরাজ, শরিফুল-নাসুমরা, ব্যাট হাতেও সমান অবদান রেখেছেন ফর্মহীন থাকা আলোচিত, সমালোচিত টি-২০ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আর তাতেই বাংলাদেশ ওয়ানডে ফরম্যাটে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে টানা নবম জয় তুলে নিয়েছে।

দুই দল এখন পর্যন্ত ৪২টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে। যেখানে বাংলাদেশের জয় ১৯টি ম্যাচে। স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছে ২১টি ম্যাচে। আর পরিত্যক্ত হয়েছে ২টি ওয়ানডে ম্যাচ। ঈদুল আযহার দিনে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে ১৯তম জয়টি পেয়েছে টাইগাররা।

ব্যাট হাতে তৃতীয় ও পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ৪০ ও ৪৯ রানের দু’টি জুটিতেই বাংলাদেশ পেয়েছে ৬ উইকেটের বড় জয়। তৃতীয় উইকেটে শান্তকে নিয়ে ৭১ বলে ৪৯ রানের জুটি গড়ে ছিলেন। পঞ্চম উইকেটে নুরুল হাসান সোহানকে নিয়ে ৫৪ বলে ৪০ রানের জুটি গড়ে জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছেন।

তার আগে অবশ্য বোলাররা কাজটা সহজ করে দিয়ে ছিলেন। দুর্দান্ত মিরাজ ৪ উইকেট, শরিফুলের ৩টি উইকেট আর মুস্তাফিজের এক উইকেটের সঙ্গে নাসুমের কিপ্টেমি বোলিংয়ে প্রতিপক্ষকে ১৪৯ রানে আটকে দেয় টাইগাররা।

আগে ব্যাট করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুর্দান্ত শরিফুল-মিরাজদের তোপে পড়ে ১৪৯ রানের বেশি তুলতে পারেনি। জবাবে খেলতে নামা বাংলাদেশ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাটে ভর করে ৪ উইকেট হারিয়েই জয় তুলে নিয়েছে। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে গেলো ১-০ ব্যবধানে। ৩১.৫ ওভারে ১৫১ রান তুলে বাংলাদেশ।

১৫০ রানর টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটা অবশ্য ভাল হয়নি। আম্পায়ারদের ‘বিতর্কিত’ সিদ্ধান্তের বলি হয়ে সাজ ঘরে ফিরেন ওপেনার লিটন দাস। দলীয় ৯ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় টাইগাররা ইনিংসের তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বলেই। ব্যক্তিগত ১ রানেই সাজ ঘরে ফিরেন এই ওপেনার। আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল শান্তকে নিয়ে তখন এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। দ্বিতীয় উইকেটে দু’জনে মিলে গড়েন ৪০ রানের জুটিও।

দলীয় রান অর্ধশতকে আগেই তামিম ফিরেন সাজ ঘরে। ৪৯ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। চার চার ও এক ছয়ে ২৫ বলে ৩৩ রান করা টাইগার অধিনায়ক রানআউটের শিকার হয়ে ফিরেন সাজঘরে। তৃতীয় উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে জুটি গড়েন শান্ত। দু’জনে মিলে ৪৯ রান। এরপরই শান্তর বিদায়ে ভাঙে তাদের জুটি। ২০তম ওভারের তৃতীয় বলে দলীয় ৯৮ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় টাইগাররা। পাঁচ চারে ৪৬ বলে ৩৭ রানের দায়িত্বশীল এক ইনিংস খেলেন শান্ত।

এরপর উইকেটে আসা আফিফ দ্রুত ফিরে যান প্যাভেলিয়নে। ২৩তম ওভারের শেষ বলে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় রান তখন ১১১। ১৭ বলে ৯ রান করেন এই তরুণ ব্যাটার। তার বিদায়ের পর পঞ্চম উইকেটে সোহানকে নিয়ে জুটি গড়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দু’জনের জুটি থেকে আসে ৪০ রান। দুই চার ও এক ছয়ে ৬৯ বলে ৪০ রানে মাহমুদউল্লাহ ও এক ছয় এবং এক চারে ২৭ বলে ২০ রানে অপরাজিত থাকেন সোহান।

উইন্ডিজের হয়ে আকিল হোসেন, মটি ও নিকোলাস পুরানরা ১টি করে উইকেট লাভ করেন।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামা ক্যারিবিয়ানরা নির্ধারিত ৪১ ওভারে ৯উইকেটে মাত্র ১৪৯ রান তুলতে সমর্থ হন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মুস্তাফিজের শিকারে প্রথম উইকেট হারানো দলটি দ্বিতীয় উইকেট ইনংসের ১২তম ওভারে।ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই দলীয় ১ রানে মুস্তাফিজের শিকারে সাজঘরে ফিরে যান ওপেনার শাই হোপ। ১ বল খেলা এই ব্যাটার রানের খাতা খুলতে পারেননি।

আরেক ওপেনার মায়ার্স তখন ব্রুকসকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করছিলেন। তবে তাদের সফল হতে দেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। ইনিংসের ১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ৩২ রানের মাথায় ফিরে যান ওপেনার মায়ার্সও। ২৭ বলের ধীর গতির ইনিংসে ১০ রান করেন তিনি।

দলীয় ৫৫ রানেই তৃতীয় উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ২১তম ওভারের চতুর্থ বলে ব্রেন্ডন কিংকে সাজঘরে ফেরত পাঠান শরিফুল ইসলাম। মাত্র ৮ রান করেন এই ব্যাটার। পরের বলেই ব্রুকসকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রন এনে দেন এই বোলার। তিন চারে ৬৩ বলে মাত্র ৩৬ রান করেন এই ব্যাটার।

২৬তম ওভারের তৃতীয় বলে পঞ্চম উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। দলীয় ৭৪ রানের মাথায় মিরাজের বলে সাজঘরে ফিরেন রভম্যান পাওয়েল। ১১ বলে করেন মাত্র ৯ রান। ২৮তম ওভারেই প্রতিপক্ষের অধিনায়ক পুরানকে সাজঘরে পাঠিয়ে ম্যাচে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে থাকে টাইগাররা। দলীয় ৯১ রানের মাথায় ওই ওভারের চতর্থ বলে ব্যক্তিগত ১৮ রান পুরানকে প্যাভেলিয়েন ফেরত পাঠান মিরাজ।

দুই ওভারের পরেই সপ্তম উইকেট হারায় ক্যারিবিয়ানরা। দলীয় ৯৭ রানের মাথায় ৩১তম ওভারের চতুর্থ বলে রানআউটের শিকারে সাজঘরে ফিরেন আকিল হোসেন। ১২ বলে ৩ রান করা এই ব্যাটারকে দুর্দান্ত এক রানআউট করেন মিরাজ। স্বাগতিক ব্যাটারদের আর কেউই উইকেটে এসে রান তুলতে সফল হতে পারেননি। শেষ দিকে নামা ফিলিপস ও জেইডেন সিলসের ব্যাটে ১৪৯ রান তুলতে সমর্থ হয় দলটি। ২১ রানে ফিলিপস ও ১৬ রানে জেইডেন অপরাজিত থাকেন।

বাংলাদেশের হয়ে শরিফুল ৪টি, মিরাজ ৩টি ও মুস্তাফিজ ১টি করে উইকেট লাভ করেন।

এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here