স্পোর্টস ডেস্ক:: কলম্বোতে তৃতীয় দিন বল হাতে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। তাইজুলের ফাইফারে বিধ্বস্ত হওয়া লঙ্কানরা অলআউট হয়ে গেছে। দুই স্পিনার তাইজুল ও নাঈমের ঘূর্ণিতে ১১৬.৫ ওভারে ৪৫৮ রানে থেমেছে স্বাগতিকরা। লিড নিয়েছে ২১১ রানে।
বড় ব্যবধানে পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ এবার নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামবে। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতায় শান্তর দল ২৪৭ রান করেছিলো।
আগের দিনের ৪৩ রানের লিড নিয়ে আজ ব্যাট করতে নামে শ্রীলঙ্কা। দুই উইকেটে ২৯০ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কা এবার টাইগারদের বোলিং তোপে পড়ে। তাইজুল-নাঈমের বোলিংয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে স্বাগতিকরা।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে উদ্বোধনী জুটিতেই প্রথম সেশনের পুরোটা সময়ে তারা তুলে নেন ৮৮ রান। দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে লাহিরু উনাদাকে ফিরিয়েছেন তাইজুল। ইনিংসের ২৪তম ওভারের তৃতীয় বলটি ব্যাটে লাগাতে পারেননি উদানা। আঘাত হানে তার প্যাডে। বাংলাদেশের আবেদনে সাড়া দেননি মাঠের আম্পায়ার। রিভিউ নেন শান্ত। এরপরই মিলে সাফল্য। দলীয় ৮৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। এই ওপেনার চার বাউন্ডারিতে ৬৫ বলে ৪০ রান করেছেন।
দ্বিতীয় উইকেটে পাথুম নিশাঙ্কা ও দিনেশ চান্দিমাল ১৯৪ রানের জুটি গড়ে ম্যাচের লাগাম টেনে ধরেন। সফরকারী বোলারদের উপহার দেন বিভিষীকাময় এক দিন। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৭ রান দূরে থাকতে দিনেশ চান্দিমাল যখন প্যাভেলিয়নে ফেরেন, লঙ্কানদের পূঁজি ততক্ষণে ২৮২ রান। ৭৬তম ওভারের প্রথম বলে বিদায়ের আগে ৯৩ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন তিনি। দশ চার ও এক ছক্কায় ১৫৩ বলে নিজের ইনিংসটি সাজিয়ে নাঈম হাসানের বলে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন তিনি।
১৪৬ রান হাঁকিয়ে লঙ্কান ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা শুক্রবার ব্যাট করতে নেমে ইনিংস আর বড় করতে পারেননি। তাইজুলের শিকারে সাজঘরে ফেরেন ১৫৮ রানে। তার বিদায়ে দলীয় ৩০৫ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় লঙ্কানরা। কামিন্দুু মেন্ডিস করেন ৩৩ রান। কুশল মেন্ডিস সতীর্থদের নিয়ে ছোট ছোট জুটি গড়ে দলকে এনে দেন বড় লিড। ১১৭তম ওভারের প্রথম বলে দলীয় ৪৫৮ রানে কুশল মেন্ডিস আউট হলে লঙ্কানদের ইনিংস থেমে যায়। আট চার দুই ছক্কায় ৮৭ বলে ৮৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন তিনি।
বাংলাদেশের হয়ে তাইজুল ৪২.৫ ওভারে ১৩১ রানে পাঁচটি উইকেট ও নাঈম হাসান ৩টি উইকেট শিকার করেন।
এর আগে কলম্বো টেস্টের দ্বিতীয় দিন সকালেই বাংলাদেশকে অলআউট করে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। আগের দিনের ২২০ রানের সাথে আজ আরো ২৭ রান তুলতেই বাংলাদেশ ২৪৭ রানে অলআউট হয়ে যায়। এরপরই নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কা। দারুণ শুরু করেছে স্বাগতিকরা।
টস জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ শুরুটা করা হতাশা দিয়ে। দীর্ঘ দিন পর দলে সুযোগ পাওয়া এনামুল হক বিজয় ১০ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি। ইনিংসের পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলেই ফিরেন প্যাভেলিয়নে। দলীয় ৫ রানেই প্রথম উইকেট হারায়। দলীয় অর্ধশতকের আগে টাইগাররা হারায় দ্বিতীয় উইকেট। ইনিংসের ১৭তম ওভারের প্রথম বলে দলীয় ৪৩ রানে সাজঘরে ফিরেন মুমিনুল হক। তিন চারে ৩৯ বলে ২১ রান করেন তিনে নামা এই ব্যাটার।
এরপরই বাংলাদেশ হারায় প্রথম টেস্টেে দুই সেঞ্চুরি করা অধিনায়ক লিটন দাসের উইকেট। ২৮তম ওভারের শেষ বলে সাজঘরে ফিরেন শান্ত। ৩১ বলে ৮ রান করেনেছেন টাইগার অধিনায়ক। পরের ওভারেই বিদায় নেন সাদমান। ২৯তম ওভারের শেষ বলে দলীয় ৭৬ রানে চতুর্থ উইকেটে ব্যক্তিগত ৪৬ রানে প্যাভেলিয়নে ফিরেন টাইগার ওপেনার। দ্রুত চার উইকেটের পর পঞ্চম উইকেটে মুশফিক ও লিটন ৬৭ রানের জুটি। চার বিরতির আগে ৪৮তম ওভারের পঞ্চম বলে লিটনের বিদায়ে ভাঙে সেই জুটি। দুই চার ও এক ছক্কায় ৫৬ বলে ৩৪ রান করেন এই ব্যাটসম্যান।
লঙ্কান বোলা রদের তোপে বাংলাদেশ নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে। ষষ্ট উইকেটে দলীয় ১৬০ রানে মুশফিকুর রহিমও ফিরেন প্যাভেলিয়নে। পাঁচ বাউন্ডারিতে ৭৫ বলে ৩৫ রান করেন তিনি। বাংলাদেশ যেনো ব্যাটিং অর্ডারের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে উইকেট হারাতে তাকে। সিনিয়র এই ক্রিকেটারের বিদায়ের পর মিরাজও ফিরেন সাজঘরে। ৬৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ১৯৭ রানে ব্যক্তিগত ৩১ রানে প্যাভেলিয়নে ফেরেন তিনি। দিনের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে অষ্টম উইকেটে আউটের আগে নাঈম হাসান ৫১ বলে ২৫ রান করেন। দুই বাউন্ডারিতে সাজান নিজের ইনিংসটি।
৯ রানে অপরাজিত থাকা তাইজুল ও ৬ রানে অপরাজিত থাকা এবাদত দ্বিতীয় দিন সকালে আবারো ব্যাট করতে নামেন। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি শেষের ব্যাটসম্যানরা। তাইজুল ৩৩ ও এবাদত ৮ রানে আউট হলে ৭৯.৩ ওভারে বাংলাদেশ অলআউট হয়ে যায় ২৪৭ রানে।
শ্রীলঙ্কার হয়ে আসিতা ফার্নান্দো, সনাল দিনুশা ৩টি করে উইকেট লাভ করেছেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০