নারী ক্রিকেট এখন আর চ্যালেঞ্জিং না

0
163
ছবিঃ ফিমেইল ক্রিকেট।

সিলেট ক্রিকেট গ্রাউন্ড ২-এ বিকেলের ঘন্টা দেড়েকের অনুশীলন শেষ। মাঠেই বসে দেখেছেন দুই প্রতিপক্ষ স্বাগতিক বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যকার খেলা। এরপর খাওয়া-দাওয়া করতে পুরো দল নিয়ে স্টেডিয়াম প্রাঙ্গন থেকে বেরিয়ে পড়ে পূরো সংযুক্ত আরব আমিরাত দল।

খানিক ঘুরেই খেতে হাজির হন নগরীর পূর্ব জিন্দাবাজারের একটি রেষ্টুরেন্টে। সেখানে উপস্থিত ছিল এসএনপিস্পোর্টস টিমও। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর টিম ম্যানেজার সবুজ সংকেত দিলে, আমিরাতের অধিনায়ক ছায়া মুঘল কথা বলেন। ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে বেড়ে উঠা ছায়া মুঘল খানিক সময় দেন সাব-এডিটর সাগর রায়কে

ক্রিকেটের পাশাপাশি শিক্ষকতা পেশায় থাকা ছায়া বেশ বিনয় আর রসিকতা করে উত্তর দিয়েছেন প্রশ্নের। কথা বলেছেন টুর্নামেন্টসহ, নারী ক্রিকেটের চ্যালেঞ্জ, আমিরাতে নারীদের ক্রিকেটের সুযোগ সুবিধা, ক্রীড়াক্ষেত্রে বয়সের বাঁধা প্রসঙ্গে। পাশে দাঁড়িয়ে সেগুলো বেশ উপভোগ করছিলেন দলের তরুণী ক্রিকেটাররা।

এসএনপিস্পোর্টসঃ রেষ্টুরেন্টে খেতে আসলেন, কেমন লাগছে খাবার?

ছায়াঃ দারুণ, এখানে এসে ভিন্ন কিছু ট্রাই করেছি, খুবই ভালো লাগলো। এমনকি হোটেলে আমাদের বেশ ভালোভাবে আপ্যায়ন করা হচ্ছে। খাবারগুলো সব ভালো। বাংলাদেশে আমরা সবাই খুবই উপভোগ করছি। একটা সমস্যা হয় ঝাল কম-বেশি নিয়ে। এছাড়া সব ঠিক আছে। আমরা মূলত ভারতীয় খাবার খাই। শেফকে বললে, তারা আমাদের পছন্দ অনুযায়ী খাবার তৈরি করে দেয়। তারা নিজে থেকেও দেয়। এছাড়া কেউ যদি কোনো কিছু সাজেস্ট করে, তাহলে সেগুলোর স্বাদ নেওয়ারও চেষ্টা করি।

এসএনপিস্পোর্টসঃ এখানকার কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিতে পেরেছেন?

ছায়াঃ এখানে খুবই গরম। হ্যা, আমরা দুবাইয়েও থাকি, সেখানেও অনেক গরম আছে, কিন্তু এখানেরটা আলাদা। একটু দাঁড়িয়ে থাকলেই আমরা অনবরত ঘেমে যাচ্ছি। খুবই কঠিন এখানে খেলা। আপনি যখন অভস্ত্য হয়ে যাবেন, তখন খানিকটা ভালো লাগবে। এখন আমরা মানিয়ে নিয়েছি, শুরুর থেকে বেশ ভালো অবস্থায় আছি।

এসএনপিস্পোর্টসঃ দুটি স্টেডিয়াম আছে, একটিতে খেলেছেন আরেকটিতে খেলা হয়নি (সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় পর্যন্ত মূল স্টেডিয়ামে খেলা হয়নি), কেমন লাগলো?

ছায়াঃ আমরা মূল স্টেডিয়ামে এখনও খেলিনি, সেখানে খেলব। তবে সেখানে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার ম্যাচ দেখেছি। দুটোই দেখতে অসাধারণ, খুবই দারুণ। আশা করি ম্যাচ খেলার পর খুবই ভালো একটি স্মৃতি থাকবে।

এসএনপিস্পোর্টসঃ সেমি ফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন কতটুকু দেখেন? (সাক্ষাৎকার নেওয়ার আগ পর্যন্ত সুযোগ ছিল)

ছায়াঃ এখন পর্যন্ত একটি ম্যাচে জিতেছি আমরা, এখনই খুব বেশি ভাবছি না এটি নিয়ে। আমরা ভবিষ্যত নিয়ে কথা বলতে পারি না আসলে। তবে হ্যা, আমরা লড়াকু ক্রিকেট নিয়ে চিন্তা করছি। এটা দিয়ে যে কাউকেই পরাজিত করা যায়। আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেটটা খেলতে চাই। আপনি যদি আপনার সেরা ক্রিকেটটা খেলতে পারেন, ফলাফল আপনার পক্ষে আসবেই।

এসএনপিস্পোর্টসঃ থাইল্যান্ড হারিয়েছে পাকিস্তানকে, আপনার কাছে অবাক লেগেছে?

ছায়াঃ আমি অবাক হয়নি মোটেও। কেননা এখানে যে দলগুলো এসেছে, সবাই যোগ্যতা দিয়েই এসেছে। আর সবাই ভালো খেলার পরিকল্পনা নিয়ে এসেছে। থাইল্যান্ড খুবই ভালো খেলেছে। তারা পাকিস্তানের পরিকল্পনা ধরতে পেরেছে, দিনশেষে তাই ফলাফলটাও তাদের পক্ষে গেছে। এটা তাদেরই কৃতিত্ব। তারা নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পেরেছে। নিজেদের দিনে সামর্থ্য অনুযায়ী সেরাটা দিয়ে খেললে যে কেউই জিততে পারে।

এসএনপিস্পোর্টসঃ যদি বলি এশিয়া কাপে কে ফেবারিট ?

ছায়াঃ সংযুক্ত আরব আমিরাত (হাসিমুখে)। আমি মনে করি আমরাই সেরা, আমাদের কম্পোজিশন সেরা। আমরা সিনিয়র এবং তরুণদের নিয়ে সমন্বয় করা বেশ ভালো একটা দল। আমাদের কিছু চিন্তা-ভাবনা এবং পরিকল্পনায় ইউনিক ও বিশেষ কিছু আছে। সুতরাং আরব আমিরাতই আমার ফেবারিট (আত্মবিশ্বাসের সুরে)।

এসএনপিস্পোর্টসঃ নারীদের ক্রিকেট বর্তমানে কতটা চ্যালেঞ্জের?

ছায়াঃ আপনি যদি বর্তমান সময়ের কথা বলেন, আমি বলবো না চ্যালেঞ্জিং। এখন অনেক সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে। পুরো বিশ্বে এখন অনেকগুলো লিগ হচ্ছে। সেখানে বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটাররা খেলছে, এমনকি সহযোগী দেশগুলো থেকেও। সুতরাং আমি বলবো না খুব বেশি সমস্যার। আর নারীরা সবসময়ই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েই আসে। তারা সবসময়ই বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার জন্য তৈরি থাকে।

এসএনপিস্পোর্টসঃ আরব আমিরাতে নারীদের ক্রিকেটের সুযোগ সুবিধা কেমন?

ছায়াঃ আমিরাত ক্রিকেট বোর্ড খুবই সহায়তা করে নারীদের ক্রিকেট ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য। আমাদের অনুশীলনের সুযোগ-সুবিধা অনেক। আমরা আইসিসির কথাও বলতে পারি। আইসিসিও সহায়তা করে। আমরা যখন অনেকসময় আউটডোরে অনুশীলন করতে পারি না, ইনডোরে যাই। আইসিসির ইনডোর সুবিধা অসাধারণ। এছাড়া আমাদেরকে যে আউটফিল্ড দেওয়া হয়, সেটাও দারুণ। সেখানের উইকেটগুলোও খুবই ভালো থাকে। আমাদের জন্য ভালো সুযোগ-সুবিধা থাকে।

এসএনপিস্পোর্টসঃ বর্তমানে আপনি ৩৬ এ আছেন, আপনার কী মনে হয় বয়স শুধুই একটা যেকোনো ক্রীড়াক্ষেত্রেই?

ছায়াঃ আসলে এটা নির্ভর করে আপনি কতটুকু ফিট। আপনি খেলায় আছেন, আপনি নিজে মনে করেন সেরাটা দিতে পারছেন তাহলে ঠিক আছে। আমি মনে করিনা, বয়স কোনো বাঁধা হতে পারে। দীনেশ কার্তিককে দেখেন, সে কীভাবে কামব্যাক করেছে এই বয়সে এসে, এটা অসাধারণ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সব খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রেই। বয়স কোনো বিষয় না। আপনি কতটা ফিট, সেটাই দেখার বিষয়। আপনার শরীর যদি নিজে থেকে না থামে, আপনাকে কেউই থামাতে পারবে না।

এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/সা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here