নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো শুরুর আভাস দিয়ে চা-বিরতিতে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে ছিল শ্রীলঙ্কা দল। তবে লঙ্কানদের স্বস্তিতে থাকতে দিল না টাইগাররা। দিলশান মধুশঙ্কার উইকেট শিকার করে নাহিদ রানা উল্টো বাংলাদেশকে এনে দিলেন স্বস্তি। ষষ্ঠ ওভারের চতুর্থ বলে ১০ রান করা মধুশঙ্কাকে উইকেটের পেছনে লিটন দাসের ক্যাচে পরিণত করান এই পেসার।
আর এই উইকেটের সাথে সাথেই চা-বিরতির ঘোষণা দেন ম্যাচের দুই অনফিল্ড আম্পায়ার। চা-বিরতির আগে ৫.৪ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১৯ রান। দিমূথ করুণারত্নে ৯ রান করে অপরাজিত আছেন।
এর আগে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্যাটিং দুর্দশায় ভুগে বাংলাদেশ দল। শ্রীলঙ্কার ২৮০ রানের জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে দুইশ রানও করতে পারেনি। ১৮৮ রানে অলআউট জাকির-শান্ত-জয়রা। এতে লঙ্কানরা পায় ৯২ রানের লিড।
আগের দিন ১০ ওভারে ৩ উইকেটে ৩২ রান নিয়ে কোনোমতে পার করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনে বৃষ্টির পূর্ভাবাস থাকলেও, সিলেটের আকাশে সকালের মিষ্টি রোদের দেখা মিলে। তবে বাংলাদেশ দলের জন্য সকালটা মিষ্টি হয়নি। দিনের শুরুতেই ফিরে যান ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে নামা তাইজুল ইসলাম ও ওপেনার জয় দ্বিতীয় দিন সকালের সেশনের শুরুতে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিল। যদিও প্রথম পাঁচ ওভারের পর আর সেটি ধরে রাখতে পারেননি তারা।
অপ্রয়োজনীয় শট খেলতে গিয়ে আউট হয়ে ফিরেন জয়। ১৫তম ওভারের প্রথম বলে লাহিরু কুমারার আউটসাইড অফ ডেলিভারিতে থার্ড স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন তিনি। ১২ রান করা জয়ের বিদায়ে চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে বাংলাদেশের। এরপর উইকেটে এসে শুরুটা ভালোই করেছেন শাহাদাত হোসেন দিপু। তবে ধরে রাখতে পারেননি সেটি। ২২তম ওভারের শেষ বলে লাহিরু কুমারার শিকার হয়ে ফিরেন দিপু। স্লিপে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে ২৬ বলে ১৮ রান করে যান এই তরুণ ব্যাটার। পরবর্তীতে বাংলাদেশের ইনিংসকে টেনে নিয়ে যাওয়ার লড়াই করেন লিটন দাস ও তাইজুল ইসলাম।
৫ উইকেটে ৮৩ রান থেকে দুজন স্বস্তি জোগাচ্ছিলেন ভালোভাবে। কিন্তু মধ্যাহ্ন বিরতির আগ মূহুর্তে ৩৫তম ওভারের চতুর্থ বলে লাহিরু কুমারার ভেতরে ঢুকানো দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড আউট হয়ে ফিরতে হয় লিটনকে। ভালো ছন্দে থাকলেও, ৪৩ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২৫ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরতে হয় উইকেটরক্ষক ব্যাটারকে। যদিও এতে লাহিরুর কৃতিত্বই বেশি। যেটিতে অস্বস্তি বাড়ে বাংলাদেশ শিবিরে। ৩৬ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রানে থেকে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় বাংলাদেশ দল
মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফিরে এসে শুরুতে তাইজুল ইসলামের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আগের দিন দলের বিপদের মুখে নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে খেলতে নেমেছিলেন তাইজুল। আর সেই তিনিই পরদিন দলের ভরসা হয়ে দাঁড়ালেন। সিলেট টেস্টে বাংলাদেশের ইনিংসের মান রক্ষার জন্য লড়েছেন। ব্যাট হাতে দলের ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ফিফটির পথেই ছিলেন তিনি।
তবে সেটা আর হয়নি। ৪৬ রান করে আউট হয়েছেন তাইজুল। কাসুন রাজিথার বলে উইকেটের পেছনে কুশল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগে ৮০ বলে ৬ বাউন্ডারিতে সাজিয়েছেন নিজের ইনিংস। যেটি কিনা তার ক্যারিয়ার সেরা। এর আগে সর্বোচ্চ ৩৯ রানের ইনিংস ছিল। ৪০তম ওভারের দ্বিতীয় বলে তাইজুলের বিদায়ে সপ্তম উইকেটের পতন ঘটে বাংলাদেশের।
এরপর বাংলাদেশের ইনিংসের এগিয়ে নিয়ে যান খালেদ আহমেদ, শরিফুল ইসলামরা। এক প্রান্তে ১১ রান করে আউট হন মিরাজ। তবে শরিফুলের ১৫ ও খালেদের ২২ রানের ইনিংস বাংলাদেশকে সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যায়। তবুও দুইশ করতে পারেনি দল। ৫১.৩ ওভারে ১৮৮ রানে শেষ হয় টাইগারদের ইনিংস।
শ্রীলঙ্কার হয়ে বিশ্ব ফার্নান্দো ৪টি, কাসুন রাজিথা ও লাহিরু কুমারা ৩টি করে উইকেট শিকার করেন।
Discussion about this post