স্পোর্টস ডেস্কঃ আফগানিস্তানকে আজ রীতিমতো উড়িয়ে দিয়ে বিশ্বকাপে টানা চার জয় তুলে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে পৌঁছেছে তারা। এক পা দিয়ে রাখল সেমিফাইনালে। বুধবার ১৪৯ রানের বড় ব্যবধানে জিতেছে তাসমান সাগরপাড়ের দেশটি। দারুণ জয়ে নায়ক দলটির তারকা ব্যাটার গ্লেন ফিলিপস। ওয়ানডেতে জিতেছেন দ্বিতীয়বার ম্যাচ সেরার পুরষ্কার, বিশ্বকাপে প্রথম।
রান তাড়ায় আফগানিস্তান ষষ্ঠ ওভারে ম্যাট হেনরির দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে হারায় রহমানউল্লাহ গুরবাজকে। পরের ওভারে ট্রেন্ট বোল্টের বল বুঝতে না পেরে ক্যাচ তুলে দেন আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান। লকি ফার্গুসন এসে দ্রুত বিদায় করেন প্রতিপক্ষ অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদিকে। ৪৩ রানে ৩ উইকেট হারানো দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন রহমত ও ওমরজাই। দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে এসে তাদের ৫৪ রানের জুটি ভাঙেন অভিজ্ঞ পেসার বোল্ট।
শর্ট বলে কট বিহাইন্ড হন ২ চারে ২৭ রান করে ওমরজাই। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি রহমতও। রাচিন রবীন্দ্রকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি ১ চারে ৩৬ রান করে। চোখধাঁধানো এক বলে মোহাম্মদ নবিকে বোল্ড করে ওয়ানডেতে নিজের শততম উইকেটটি নেন মিচেল স্যান্টনার। এরপর আর বেশিদূর এগোয়নি আফগানদের ইনিংস। ফার্গুসনের বাউন্সারে একই ওভারে ফেরেন রশিদ খান ও মুজিব উর রহমান। পরের ওভারে বাকি দুই শিকার ধরে কিউইদের জয় এনে দেন স্যান্টনার। শেষ ৫ উইকেট ১৪ রানে হারায় আফগানিস্তান।
এর আগে চেন্নাইয়ের স্পিন বান্ধব উইকেটে কিউইরা একটা সময় চাপে পড়লেও শেষ পর্যন্ত ২৮৮ রানের পুঁজি পায়। ফিফটি হাঁকিয়েছেন দলটির তিন ব্যাটার- উইল ইয়াং, গ্লেপ ফিলিপস ও টম লাথাম। টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ডেভন কনওয়ে ও উইল ইয়াংয়ের জুটি বড় হতে দেননি মুজিব উর রহমান। ডানহাতি এই স্পিনারের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে লেগ বিফোর উইকেট হয়ে ফেরেন কনওয়ে। ছন্দে থাকা এই বাঁহাতি সাজঘরে ফিরতে হয় ২০ রান করে।
তিনে নেমে ইয়াংয়ের সাথে বেশ ভালো জুটি গড়েন রাচিন রবীন্দ্র। তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৭৯ রানে। যেখানে দারুণ ব্যাটিংয়ে ৫৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ইয়াং। রাচিনের বিদায়ে ভাঙে তাদের জুটি। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের লেংথ ডেলিভারিতে ক্রস ব্যাটে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন ৩২ রান করা রাচিন। হাফ সেঞ্চুরির পর ফিরেছেন ইয়াংও। ওমরজাইয়ের সেই ওভারে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরের পথে হেঁটেছেন ৫৪ রানের ইনিংস খেলা ডানহাতি এই ওপেনার।
এদিকে দ্রুত বিদায় নিয়েছেন ড্যারিল মিচেল। রশিদ খানের বলে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন তিনি। ৯ বলের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারানোর পর নিউজিল্যান্ডকে টেনেছেন লাথাম ও ফিলিপস। তারা দুজনে হাফ সেঞ্চুরি করার সঙ্গে গড়েছেন ১৪৪ রানের জুটি। ৬৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি করা ফিলিপস উইকেট দিয়েছেন নাভিন উল হককে। ডানহাতি এই ব্যাটার খেলেছেন ৭১ রানের ইনিংস। আরেক ব্যাটার লাথামকেও আউট করেছেন নাভিন। কিউই অধিনায়ক ফিরেছেন ৬৮ রান করে।
শেষদিকে চ্যাপম্যান ১২ বলে ২৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেললে ২৮৮ রানের পুঁজি পায় নিউজিল্যান্ড। মিচেল স্যান্টানার ৭ রান করে অপরাজিত থাকেন। আফগানিস্তানের পক্ষে নাভিন উল হক ৮ ওভারে ৪৮ রানে দুই উইকেট শিকার করেন। ৭ ওভারে ৫৬ রান দিয়ে ওমরজাইও ২ উইকেট শিকার করেন। এদিকে গত দুই আসরের রানার্সআপদের টানা চতুর্থ জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান ফিলিপসের। চারটি করে ছক্কা ও চারে ৮০ বলে এই মিডল অর্ডার ব্যাটার খেলেন ৭১ রানের ইনিংস। পঞ্চম উইকেটে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক টম ল্যাথামের সঙ্গে গড়েন ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া ১৪৪ রানের জুটি, ১৫৩ বলে।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/১১০