স্পোর্টস ডেস্ক:: রোমাঞ্চর এক জয় বাংলাদেশের। শেষ ওভারে ৫ রানের সমীকরণ মেলাতে গিয়ে মুশফিকের আউট হয়েও ‘নো’ বলে জীবন পাওয়া, পরের বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ম্যাচ জেতা। সিরিজের দ্বিতীয় এক দিনের ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। হারলেও লড়াই করেছে আইশিরা। ৩২০ রানের লক্ষ্য ছুঁতে গিয়ে সাত উইকেট হারাতে হয়েছে টাইগারদের।
শেষ ওভারে বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিলো ৫ রান। প্রথম দুই বলে কোনো রান নিতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। মার্ক অ্যাডায়ারের করা তৃতীয় বলটি ছিলো কোমর উচ্চতার। তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন তিনি। টিভি আম্পায়ার ‘নো’ বলের সিদ্ধান্ত দিলে জীবন পান। টিভি আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অবশ্য ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় আইরিশদের। পরের ফ্রি হিট বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৩ বল হাতে রেখে ম্যাচ শেষ করেন মুশফিক।
৩২০ টার্গেটে খেলতে নেমে শুরুতেই ফিরলেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলে প্রথম উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। দলীয় ৯ রানে ব্যক্তিগত ৭ রানে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। এরপর শান্তকে নিয়ে ইনিংস বড় করার চেষ্টায় ছিলেন লিটন। দলীয় ৪০ রানে ইনিংসের ১০ম ওভারের প্রথম বলে ব্যক্তিগত ২১ রানে প্যাভেলিয়নে ফেরেন তিনি। ২১ বলের ইনংস সাজিয়েছেন দুই চার ও এক ছক্কায়।
তৃতীয় উইকেটে শান্তকে নিয়ে ৬৭ রানের জুটি গড়ে দলকে পথে ফেরান সাকিব। দলীয় ১০১ রানে ইনিংসের ১৭তম ওভারের শেষ বলে প্যাভেলিয়নে ফেরেন তিনি। পাঁচ চারে ২৭ বলে ২৬ রান করেছেন এই অলরাউন্ডার। চতুর্থ উইকেটে হৃদয়কে নিয়ে শান্ত গড়েছেন ১২৮ রানের জুটি।
সাকিবের বিদায়ের পর চতুর্থ উইকেটে শান্ত-হৃদয় ১০২ বলে ১৩১ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ২৩২ রানে ইনিংসের ৩৪তম ওভারের শেষ বলে হৃদয়ের বিদায়ে ভাঙে তাদের জুটি। ৫৮ বলে ৬৭ রান করেছেন এই হাফ সেঞ্চুরিয়ান। পাঁচ চার ও তিন ছক্কায় সাজানো ছিলো তার ইনিংসটি।
পঞ্চম উইকেটে মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে ২৫ রান যোগ করেন শান্ত। এরপরই ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে ফিরেন সাজঘরে। ১১৭ রানের ঝলমলে এক ইনিংস খেলে থেমেছেন তিনি। ৯৩ বলের ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১২ চার ও ৩ ছক্কায়। দলের ২৫৭ রানে ইনিংসের ৩৭তম ওভারের পঞ্চম বলে প্যাভেলিয়নে ফিরেছেন তিনি।
শান্তর পরই বিদায় নিয়েছেন মিরাজ। ইনিংসের ৪০তম ওভারের চতুর্থ বল ব্যাটে-বলে সংযোগ ঘটাতে পারেননি তিনি। বলার ডকরেলের জোড়া আবেদনে আম্পায়ার আঙুল তুলে আউটের সিদ্ধান্ত দেন। মেহেদী হাসান মিরাজ রিভিউ নেন। তাতে আম্পায়ার্স কলে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। বাংলাদেশ ২৮৬ রানে হারায় ষষ্ঠ উইকেট। মিরাজের পর তাইজুলও ফিরেন দ্রুত। চার চারে ২৮ বলে ৩৬ রানে অপরাজিত থেকে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন মুশফিক। তিন বলে ৪ রানে তার সঙ্গী হন শরিফুল।
আয়ারল্যান্ডের হয়ে কুটিস চ্যাম্পার ও জর্জ ডকরেল ২টি করে উইকেট লাভ করেন।
এর আগে আয়ারল্যান্ড ৬ উইকেটে ৩১৯ রান তুলেছে।টস হেরে ব্যাট করতে নামা আয়ারল্যান্ড শুরুতে দুই উইকেট হারালেও ট্যাক্টর ও ডকরলের ব্যাটে দিন বড় পূঁজি গড়েছে। ইনিংসের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে হাসানের বলে উইকেটরক্ষক মুশফিকের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরেন আইরিশ ওপেনার পল স্টার্লিং । ৩ বলে ১ রান করেছেন তিনি। দ্রুত প্রথম উইকেট হরানো আইরিশরা দ্বিতীয় উইকেট হারিয়েছে দলীয় ১৬ রানে।
সপ্তম ওভারের প্রথম বলেই ওপেনার স্টিফেন ডোহেনী সাজঘরে পাটিয়েছেন হাসান মাহমুদ। দুই চারে ২১ বলে ১২ রান করেছেন স্বাগতিক এই ওপেনার। এরপরই তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন ট্যাক্টর ও বার্লবিনি। ইনিংসের ২৪তম ওভারের তৃতীয় বলে শরিফুল ইসলাম অ্যান্ড্রু বার্লবিনিকে ফিরিয়ে ভাঙেন সেই জুটি। দলীয় ১১৪ রানে ব্যক্তিগত ৪২ রানে সাজঘরে ফিরেন অ্যান্ডু বার্লবিনি। ৫৭ বলের ইনিংস সাজিয়েছেন চারটি চরে।
ইনিংসের ২৬তম ওভারের শেষ বলে শরিফুলের শিকারে চতুর্থ উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। দলীয় ১৩৮ রানে ব্যক্তিগত ১৬ রানে সাজঘরে ফিরে যান লরকান টাকার। ১১ বলের ইনিংসে তিনটি বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। এরপরই পঞ্চম উইকেট তুলে নেন তাইজুল। ইনিংসের ৩১তম ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ১৬৭ রানের মাথায় সাজঘরে ফিরেন চ্যাম্পার। ১১ বলে ৮ রান করে এলবিডাব্লিউ’র ফাঁদে পড়েন তিনি।
ষষ্ট উইকেটে ট্যাক্টর ও ডকরেল মিলে হড়েন ১১৫রানের জুটি। এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাট করা হ্যারি ট্যাক্টরকে ইনিংসের ৪৭তম ওভারের শেষ বলে সাজঘরে পাঠান এবাদত। দলীয় ১৮২ রানে ষষ্ট উইকেটে প্যাভেলিয়নে ফেরত যান তিনি। দশ ছয় ও সাত চারে ১১৩ বলে ১৪০ রান করেছেন তিনি।
ট্যাক্টর ফিরে গেলেও আরো বিধ্বংসী হয়ে উঠেন জর্জ ডকরেল। শেষ পর্যন্ত তিনি ৪৭ বলে ৭৪ রানে অপরাজিত থাকেন। তিন চার ও চার ছক্কায় সাজিয়েছেন তার ইনিংসটি। ২০ রানে অপরাজিত থাকেন মার্ক অ্যাডায়ার।
বাংলাদেশের হয়ে হাসান মাহমুদ, শরিফুল ২টি করে, এবাদত ও তাইজুল ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০
Discussion about this post