স্পোর্টস ডেস্ক:: পাকিস্তানের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। এই দুই দলের ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা। মাঠ এবং মাঠের বাইরে তুমুল তর্কযুদ্ধ। পাকিস্তানকে পেলেই জ্বলে উঠেন বিরাট কোহলি। আরো একবার পাকিস্তান পেয়ে জ্বলে উঠলেন তিনি, হাঁকালেন সেঞ্চুরি। তাতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে পাকিস্তানের বিদায় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেলো। সবার আগে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলো রোহিত শর্মার ভারত।
আগামিকাল সোমবার নিউজিল্যান্ড বাংলাদেশকে হারালে পাকিস্তানের বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে। টানা দুই জয়ে সেমিফাইনালের পথে অনেকটা এগিয়ে গেছে ভারত। বিপরীতে টানা দুই হারে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ার শঙ্কায় মোহাম্মদ রিজওয়ানের পাকিস্তান। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে যে ভাবে জ্বলে উঠার কথা ছিলো পাকিস্তানী ব্যাটসম্যানদের, তারা সেটা করতে পারেননি। ব্যাটিং ব্যর্থতায় পাকিস্তান ভারতকে মাত্র ২৪১ রানের লক্ষ্য দিয়েছিলো। কোহলির সেঞ্চুরি আর শ্রেয়ার্স আয়ারের হাফ সেঞ্চুরিতে সহজেই ভারত জিতে গেছে।
গ্রুপ ‘এ’ তে দুই ম্যাচে দুই জয় নিযে টেবিল টপার ভারত। তাদের পয়েন্ট চার। এক ম্যাচ খেলে এক জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশ এক ম্যাচ খেলে একটিতে হেরে আছে তৃতীয় স্থানে। দুই ম্যাচের দুই হারে পাকিস্তান টেবিল তলানির দল। আছে চার নম্বরে। বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতলেও পাকিস্তানের সেমিফাইনালে যাওয়া আর খুব একটা সহজ নয়। তাদের বিদায় অনেকটা নিশ্চিত।
আগে ব্যাট করা পাকিস্তান সউদ শাকিল ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের ব্যাটে চড়ে ২৪১ রান তুলেছিলো। বিরাট কোহলির সেঞ্চুরি ও শ্রেয়ার্স আয়ারের হাফ সেঞ্চুরিতে ছয় উইকেট ও ৪৫ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করেছে ভারত। টস জিতে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তান সউদ শাকিলের হাফ সেঞ্চুরি ও অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ানের ব্যাটে চড়ে ৪৯.৪ ওভারে ২৪১ রান তুলতে সমর্থ হয়। পাক দুই ওপেনার ইমাম উল হক ও বাবর আজম সুবিধা করতে পারেননি। ইনিংসের নবম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ৪১ রানে বাবরের বিদায়ে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। পাঁচ বাউন্ডারিতে ২৬ বলে ২৩ রান করেন তিনি। তার বিদায়ের পর ৬ রান যোগ করতেই আরেক ওপেনার ইমাম উল হকও ফিরেন প্যাভেলিয়নে। দশম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ৪৭ রানে ফেরার আগে তিনি ২৬ বলে ১০ রান করেন।
দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর পাকিস্তান তৃতীয় উইকেটে ঘুরে দাঁড়ায়। মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সউদ শাকিল ১৪৪ রানের জুটি গড়েন। ইনিংসের ৩৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ১৫১ রানে রিজওয়ানের বিদায়ে ভাঙে তাদের জুটি। ৭৭ বলে তিন চারে ৪৬ রান করেন পাক অধিনায়ক। তার বিদায়ের পর হাফ সেঞ্চুরি করা সউদ শাকিল দলীয় ১৫৯ রানে চতুর্থ উইকেটে ফিরেন সাজঘরে। ৭৬ বলের ইনিংসে পাঁচ বাউন্ডারিতে ৬২ রান করেছেন তিনি। এরপর থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে দলটি। শেষ দিকে খুশদিল শাহের ৩৯ বলে ৩৮ রানের ইনিংসে ২৪১ রান তুলতে সমর্থ হয় পাকিস্তান।
ভারতের হয়ে কুলদ্বীপ যাদব তিনটি ও হার্দিক পান্ডিয়া দু’টি করে উইকেট লাভ করেন।
২৪২ রানের টার্গেটে খেলতে নামা ভারতও শুরুটা খুব ভাল করতে পারেনি। অধিনায়ক রোহিত শর্মা তিন চার ও এক ছক্কায় ১৫ বলে ২০ রানে প্রথম উইকেটে প্যাভেলিয়নে ফিরেন দলীয় ৩১ রানেই। ইনিংসের পঞ্চম ওভারের শেষ বলে প্রথম উইকেটের দেখা পায় পাকিস্তান। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে বিরাট কোহলি ও শুবমান গিল ৬৯ রানের জুটি গড়েন। ১৮তম ওভারের তৃতীয় বলে দলীয় শতরানে গিলের বিদায়ে ভাঙে তাদের জুটি। সাত চারে ৫২ বলে ৪২ রান করেন গিল।
চারে নামে শ্রেয়ার্স আয়ারকে নিয়ে কোহলি দারুণ খেলতে থাকেন। দু’জনে মিলে গড়েন ১১৪ রানের জুটি। ৩৯তম ওভারের পঞ্চম বলে শ্রেয়ার্স আয়ার যখন প্যাভেলিয়নে ফেরেন ভারতের তখন দলীয় রান ২১৪। পাঁচ চার ও এক ছক্কায় ৬৭ বলে ৫৬ রান করেন তিনি। তার বিদায়ের পর উইকেটে আসা পান্ডিয়া দ্রুতই ফিরেন সাজঘরে। ৪০তম ওভারের শেষ বলে পান্ডিয়া চতুর্থ উইকেটে বিদায়ের পর করেন ৮ রান। অক্ষর প্যাটেলকে নিয়ে কোহলি ম্যাচ শেষ করেন। ১১১ বলে সাত চারে সেঞ্চুরির ইনিংসটি সাজান তিনি। ১০০ রানে অপরাজিত থাকেন কোহলি। তার সঙ্গী হন ৩ রানে অপরাজিত থাকা অক্ষর প্যাটেল।
পাকিস্তানের হয়ে শাহীন শাহ আফ্রিদী দু’টি উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০