নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শঙ্কাই যেন সত্যিতে পরিণত হয়েছে। ফলো অনে পড়েছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে হারের শঙ্কা উঁকি দিচ্ছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের করা ৪২৭ রানের বিপরীতে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসে অলআউট হয়েছে ২৬৪ রানে। ফলো অন এড়াতে করতে হতো ২৭৭ রান।
২৬৪ রানে অলআউট বাংলাদেশকে তাই আবারও ব্যাটিংয়ে করতে পাঠায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের রান ২ ওভারে বিনা উইকেটে ৫ রান। খেলা ১১ ওভার হওয়ার কথা থাকলেও, আলোক স্বল্পতার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে আছে ১৫৮ রানে। ম্যাচ ড্র করতে হলে, এই রান টপকে কাল সারা দিন ব্যাট করতে হবে। দিন শেষে জন্মদিনে দুই বার ব্যাট করতে নামা সাদমান ইসলাম ৫ রানে অপরাজিত আছেন। জাকির হাসান এখনও রানের খাতা খুলতে পারেননি।
এর আগে দিনের শুরুতে উইন্ডিজ মাত্র ৪ ওভার ব্যাটিং করেই ৭ উইকেটে ৪২৭ রানে নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে। এরপর নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ।
ইনিংসের শুরুতে দেখে-শুনেই খেলতে থাকেন টাইগারদের দুই ওপেনার জাকির হাসান ও সাদমান ইসলাম। তবে মনোযোগ হারিয়েই ক্যারিবিয়ানদের উইকেট উপহার দিয়ে আসেন সাদমান। রেইমনের করা ইনিংসের অষ্টম ওভারের প্রথম বল খেলতে গিয়ে আউটসাইড এজ হয়ে স্লিপে থাকা কেভিন সিনক্লেয়ারের তালুবন্দি হন। এতে ভেঙে যায় ২১ রানের উদ্বোধনী জুটি। ১৫ বলে মাত্র ২ রান করেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন সাদমান। অথচ চাইলেই ছেড়ে দিতে পারতেন বল।
এই উইকেটের পর অবশ্য মধ্যাহ্ন বিরতির আগ পর্যন্ত আর কোনো উইকেট হারায়নি স্বাগতিকরা। উল্টো তেড়েফুড়ে খেলতে দেখা গেছে উইকেটে আসা সাইফ হাসানকে। হাঁকিয়েছেন একের পর এক বাউন্ডারি। ক্যারিবিয়ান বোলারদের ওপর চড়াও হওয়া দেখে মনে হচ্ছিল, টি-টোয়েন্টিই বোধহয় খেলতে নেমেছেন।
মধ্যাহ্ন বিরতির আগে ১৪ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৫৩ রান সংগ্রহ করেন বাংলাদেশ। সাইফ আগ্রাসী ছিলেন মধ্যাহ্ন বিরতির পরও। কিন্তু এর আগে দুই গুরুত্বপূর্ণ উইকেট হারায় টাইগাররা। মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফিরে আসার পর দ্বিতীয় ওভারেই আকিম জর্ডানের পেসে কুপোকাত হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন জাকির হাসান। উইকেটের পেছনে থাকা জশুয়া ডা সিলভার হাতে তুলে দেন ক্যাচ। ৫৫ বলে বাউন্ডারিতে ৩০ রানেই থামতে হয় এই বাঁহাতিকে।
পরের ওভারেই সদ্য উইকেটে আসা মাহমুদুল হাসান জয়কে থার্ড স্লিপে থাকা অ্যালিক স্টিভেনের ক্যাচে পরিণত করে ড্রেসিং রুমের পথ ধরিয়ে দেন জেয়ার আন্টোনিও। ৬ বল খেলে মাত্র ২ রানেই থামে জয়ের ইনিংস।
দ্রুত সময়ে দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া বাংলাদেশের ঢাল হয়ে দাঁড়ান সাইফ ও অধিনায়ক আফিফ হোসেন ধ্রুব। সাইফ নিজের ঝড়ো ব্যাটিং ধরে রেখে ফিফটি পূরণ করে সেঞ্চুরির দিকে ছুতে যান। আফিফও ঝড়ো ব্যাটিং করেন। যদিও একবার জীবন পেয়েছেন। স্লিপে ক্যাচ মিস হয়েছে তার।
দুজনের ১০১ রানের জুটি ভাঙে আফিফের বিদায়ে। ওয়ানডে মেজাজের ব্যাটিংয়ে ৪১ বলে ৭ বাউন্ডারি ও ২ ছয়ের মারে ৪৫ রান করে আউট হন। টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাটিং করতে থাকা সাইফও বিদায় নেন খানিক পরই। সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপে পুড়েন এই ব্যাটার। ৭১ বলে ১৪ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কার মারে ৯৫ রান করে বিদায় নেন সাইফ। উইকেটে টিকতে পারেননি নাঈম হাসান। চা-বিরতিতে যাওয়ার আগ মূহুর্তে দলীয় ১৯০ রানের মাথায় আউট হয়ে ফিরেন ব্যক্তিগত ৪ রানে।
এরপর দলের হয়ে লড়াই চালিয়ে যান জাকের আলি অনিক একাই। টেল এন্ডে রিশাদ-রাজা-রিপন-মুশফিকরা খুব একটা সঙ্গ দিতে পারেননি। এক প্রান্ত আগলে রাখা জাকের ফিফটি হাঁকিয়েছেন। একেবারে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৬৪ রান করে। তার ১২৩ বলে ইনিংস সাজানো ৪ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায়। শেষ পর্যন্ত লড়ে গিয়েও এড়াতে পারেননি ফলো অন। আবারও ব্যাটিং করতে নামতে হয় বাংলাদেশকে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের হয়ে জেয়ার ম্যাকঅ্যালিস্টার একাই শিকার করেন ৫ উইকেট। ২টি করে উইকেট লাভ করেন আকিম জর্ডান ও রেইমন রেইফার।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/সা
Discussion about this post