নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বিপিএলে জয়ের দেখা পেল না সিলেট স্ট্রাইকার্স। টানা দুই হার দেখল দলটি। সিলেটকে হারিয়ে আসরের প্রথম জয় তুলে নিয়েছে রংপুর রাইডার্স। যেই জয়ে মূল কৃতিত্ব বাবর আজম ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের। দুজনের দৃঢ়তায় ৪ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে রাইডার্সরা। তবে ম্যাচ জমে উঠেছিল দারুণভাবে।
মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে সিলেটের দেওয়া ১২১ রানের মাঝারি লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইনিংসের শুরুতে বিপর্যয়ে পড়ে রংপুর। দলীয় ১২ রানে ফিরে যান ওপেনার রনি তালুকদার। ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করে ওপেনার থেকে তিনে নামলেও, ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি ব্রেন্ডন কিংয়ের। প্রথম ম্যাচে গোল্ডেন ডাকের পর, এই ম্যাচেও ডাক মারেন তিনি।
রংপুরের বিপদ বাড়তে থাকে ধীরে ধীরে।২ উইকেটে ২৪ রান থেকে ৩৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে একেবারে চরম বিপর্যয়ে পড়ে দলটি। অধিনায়ক সোহান, শামীম পাটোয়ারি, মোহাম্মদ নবি, শেখ মেহেদীরা ব্যর্থ হন। এর মধ্যে নবি ডাক আর মেহেদী দেখা পান গোল্ডেন ডাকের। এক দুশান হেমন্ত’র স্পিনে নাকানি-চুবানি খায় রাইডার্স ব্যাটাররা। হেমন্ত’র দুটি এলবিডব্লিউ’র উইকেট রিভিউতে সফল হয় সিলেট।
৩৯ রানে ৬ উইকেট হারানো রংপুরের হয়ে এরপর হাল ধরেন ওপেনিংয়ে নামা বাবর আজম ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই। দুজনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ১০ বল হাতে রেখেই রোমাঞ্চকর জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রংপুর। ৮৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলকে জয় এনে দেন দুই বিদেশি তারকা।
নিউজিল্যান্ড থেকে দীর্ঘ ভ্রমণ শেষ করে আগের রাতে ঢাকায় পৌঁছে পরদিন দুপুরে খেলতে নেমে ফিফটি হাঁকান বাবর। তার ৫৬ রানের দারুণ ইনিংস সাজানো ছিল ৪৯ বলে ৬ বাউন্ডারিতে। ৩৫ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৭ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন ওমরজাই।
সিলেটের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা হেমন্ত ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান খরচ করে ৩ উইকেট শিকার করেন। ১টি করে উইকেট নেন এনগারাভা, তানজিম সাকিব ও নাজমুল অপু।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে সিলেট স্ট্রাইকার্স। আর সেই বিপর্যয় সামলে দলকে মান রক্ষার পুঁজি এনে দেন বেন কাটিং ও বেন হাওয়েল। নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১২০ রান করে সিলেট।
অজি তারকা কাটিংয়ের ব্যাটে আসে ৩১ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ৩১ রানের ইনিংস। আর ৩৬ বলে চারটি চার ও একটি ছক্কায় ৪৩ রান করেন হাওয়েল। এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও মোহম্মদ মিথুন জুটি গড়তে পারেননি। দলীয় ১৩ রানের মাথায় মেহেদী হাসানের বলে কিছুটা এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে রান আউট হন মিথুন। তিন বল খেলেও পাঁচ রানের বেশি করতে পারেনি ডানহাতি এই ব্যাটার।
মিথুনের বিদায়ের পর অনেকটা অবাক করেই ওয়ান ডাউনে ব্যাটিংয়ে নামেন সিলেট অধিনায়ক মাশরাফী। তাকে ওপরে ব্যাটিং করিয়েও খুব একটা লাভ হয়নি। দলীয় ২৪ রানের মাথায় রান আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ৭ বলে মাশরাফীর ব্যাট থেকে আসে ৬ রান। তার বিদায়ের পর মারকুটে ব্যাটার ইয়াসির রাব্বিও ক্রিজে থিতু হতে পারেননি। দলীয় ৩৩ রানের তার বিদায়ে তৃতীয় উইকেট হারায় সিলেট। ছয় বলে ৯ রান করেন এই ডানহাতি ব্যাটার।
ইয়াসিরের বিদায়ের ৩ রানের মাথায় ফেরেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার জাকির হাসান। চার বলে মাত্র ১ রান আসে তার ব্যাট থেকে। জাকিরের বিদায়ের পর দ্রুতই আরও এক উইকেট হারায় সিলেট। দলীয় ৩৯ রানে পাঁচ ব্যাটারকে হারিয়ে সিলেটের বড় স্কোরের আশা কার্যত শেষ হয়ে যায়। পরবর্তীতে কাটিং ও হাওয়েলের ব্যাটে ম্যাচে ফেরে সিলেট। এই জুটিতে যোগ হয় ৬৮ রান। এই জুটির দৃঢ়তায় শেষমেশ ১২০ রানে থামে সিলেট।
রংপুরের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট নেন রিপন মন্ডল ও শেখ মেহেদী হাসান। মোহাম্মদ নবি ও হাসান মুরাদ ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/সা
Discussion about this post