স্পোর্টস ডেস্ক:: ফারুক আহমদের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদ আজ দ্বিতীয় সভায় বসছে। ফারুক আহমদকে সভাপতি নির্বাচনকালীন সভা ধরলে এটি তৃতীয় সভা। শেখ হাসিনার সরকারের পরিবর্তনের পরপরই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে পরিবর্তনের হাওয়া লাগে। সরকার দলীয় পরিচালকেরা চলে যান আত্মগোপনে। তাদেরকে ছাড়াই ২১ আগস্ট বোর্ড সভা অনুষ্টিত হয়।
সেই সভায় লন্ডনে থাকা বিসিবি পরিচালক নাজমুল হোসেন পাপন পদত্যাগপত্র পাঠালে তা গৃহীত হয়। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কোটায় বিসিবি পরিচালক হওয়া ফারুক আহমদক সেদিনই বোর্ড সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর তিনি বিসিবি কার্যালয়ে ২৭ আগস্ট পরিচালনা পর্ষদের প্রথম সভা ডাকেন। সেই সভার পর বিকেলে দ্বিতীয়বার সভায় বসছেন তিনি। সব মিলিয়ে শেখ হাসিনার সরকারের বিদায়ের এটি বোর্ডের তৃতীয় সভা।
পরপর তিন সভায় অনুপস্থিত বোর্ড পরিচালকেরা পরিচালক পদ হারাবেন। ফলে আজকের সভায় যে সব পরিচালক অনুপস্থিত থাকবেন তাদের পদ শুন্য হয়ে যাবে। এদিকে অনেক পরিচালকই আত্মগোপনে থেকে ‘লিভ অব অ্যাবসেন্সে’র আবেদন করেছেন। তবে তাদের এই আবেদন গ্রহণ হবে নাকি অগ্রাহ্য হবে সেটি বোর্ড সভা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না। আবেদন গ্রহণ হলে পরিচালক পদে থাকবেন তারা। আর আবেদন অগ্রাহ্য হলে পদ হারাবেন।
শুন্যতা কাটাতে নিশ্চয়ই ফারুক আহমদের বোর্ড তাদের আবেদন অগ্রাহ্য করে নতুন করে পরিচালক নেওয়ার কাজ করতে পারেন। তবে শেষ পর্যন্ত কি হয় তা আজ বিকেলের সভা শেষ না হওয়ার আগ পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না। এদিকে আজকের বোর্ড সভায় একাধিক সিদ্ধান্ত আসবে। আত্মগোপনে থাকা পরিচালকের অধীনে থাকা স্থায়ী কমিটি গুলোতে পরিবর্তন আসবে। নতুন করে পরিচালকেরা দায়িত্ব পাবেন বিভিন্ন কমিটির।
স্থবির হয়ে থাকা ঘরোয়া ক্রিকেট চালু করতে গেইম ডেভেলপমেন্ট, টুর্নামেন্ট, বয়স ভিত্তিক ক্রিকেট কমিটিসহ বিভিন্ন কমিটির দায়িত্ব তুলে দেওয়া হতে পারে সরব থাকা পরিচালকদের মধ্যে। ফলে আজকের বোর্ড সভা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আসতে পারে একাধিক সিদ্ধান্ত।
জাতীয় দলের সূচি ছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেট বেশ অচল হয়ে পড়েছে। মৌসুম অনেক আগে শুরু হলেও বিসিবি জাতীয় ক্রিকেট লিগ শুরু করতে পারেনি এখনো। এমনকি বিভাগীয় দলগুলো গুছানোর কাজও শুরু করা যায়নি অনেক জায়গায়। আটকে আছে ক্রিকেট বোর্ডের বয়স ভিত্তিক দলগুলোর কার্যক্রমও। অন্যান্য বছর এই সময়ে বয়স ভিত্তিক ক্রিকেট প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেলে এবছর এখনো বাছাই কার্যক্রম শেষ করতে পারেনি ক্রিকেট বোর্ড।
সব মিলিয়ে বোর্ডের স্থবিরতা কাটাতে আজকের সভা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এ সভায়ও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আড়ালে চলে যাওয়া পরিচালকেরা অনুপস্থিত থা্কার সম্ভাবনাই বেশি। অনেক পরিচালকই গোপনে দেশ ছেড়েছেন। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই তাদের সভায় উপস্থিত হওয়া সম্ভব নয়। বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কোনো পরিচালক গ্রহণযোগ্য কারণ ছাড়া পরপর তিনটি বোর্ড সভায় অনুপস্থিত থাকলে তাঁর পরিচালক পদ শূন্য হয়ে যায়।
ফারুক আহমদের নেতৃত্বাধীন বোর্ড বিভিন্ন কমিটির দায়িত্ব পরিচালকদের নিকট বন্টন করবে। তবে সভাপতি ফারুক আহমেদ নিজেই ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির দায়িত্ব থাকবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। আজকের সভায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেট নিয়েও বেশ আলোচনা হবে। বিপিএলের ভবিষ্যত নির্ধারণ হতে পারে। ক্রিকেট বোর্ড পরিচালকদের বাসায় ডাক যোগে সভার নোটিশ পাঠিয়েছে সম্প্রতি। আইনগত ভাবেই সব কিছু করে বোর্ড সভায় বসছে পরিচালনা পর্ষদ।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সমাপ্তি ঘটে। কোটা বিরোধী আন্দোন এক দফা সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নিয়ে শেখ হাসিন প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ৫ আগস্ট দেশ ছাড়েন। এরপর থেকেই দেশে বইছে নতুনের হাওয়া। সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। পরিবর্তন আসে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেও। নাজমু হাসান পাপনের নেতৃত্বাধীন বোর্ডের ইতি ঘটে ২১ আগস্টের সভায়।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০