ইমরান আজাদ, অতিথি লেখক: টি-২০ বিশ্বকাপের সময় ফুরিয়ে আসছে। রোববারই কলকাতা ইডেন গার্ডেনে এবারের আসরের সমাপ্তি হবে। দুভার্গ্য এবারের আসরটি গত আসরের মত উপমহাদেশে হলেও এখানে উপমহাদেশের কোন দল নেই ফাইনালের লড়াইয়ে।
রোববার ইডেনের বাইশ গজে যারাই দাপট দেখাবে সে দলই হয়তো জিতবে। শক্তির দিক যেমন কম নয় ইল্যংান্ড তেমনি পিছিয়ে নেই ওয়েস্টইন্ডিজও। কেউ যদি রোববার কে জিতবে জিঙ্গেস কওে আমি বলবো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাজি ধরতে পারবো তাদের পক্ষে। ওয়েস্টইন্ডিজের বর্তমান পারফরম্যান্স সেটিতে সাহস দেবে আমাকে।
শক্তির দিক দিয়ে ইংল্যান্ডের চেয়ে কিছুটা হলেও এগিয়ে আছে ওয়েস্টইন্ডিজ। ধুমধারাক্কার চার-ছক্কার এই ছোট্ট ক্রিকেটে তারাই হয়তো ভবিষ্যতের সেরা হবে। সেটার জন্য যোগ্যও ক্যারিবীয়রা। তাদের আছে পাওয়ার ক্রিকেট, শৈল্পিক প্রদর্শনী। ভয়ডরহীন ক্রিকেট। যার সাহস যত বেশি সে তত বেশি সফল। এখানে কিছুটা হলেও এগিয়ে আছে ওয়েস্টইন্ডিজ।
ওয়েস্টইন্ডিজ এই টুর্ণামেন্টের শুরু থেকেই খেলে আসছে ভয়ডরহীন, নির্মল, নির্দয় পাওয়ার ক্রিকেট। এই আত্মবিশ্বাসটাই তাদেরকে জয় দিয়ে দিতে পারে। গ্রিস গেইল সফল হতে পারেনি ভারতের বিপক্ষে। হয়তো ফাইনালের মহারণে জ্বলে উঠার অপেক্ষায় রয়েছে তার ব্যাট। ব্রাভো, ড্যারেন সামী যে কোন সময় প্রতিকুল পরিবেশে দাড়িয়ে যেতে পারেন বুক চিতিয়ে। মুর্হুতেই ছারখার করে দিতে পারেন প্রতিপক্ষের বোলিং লাইন আপ।
আমার মনে হয় আর বেশি দিন দূর নয়, অদুর ভবিষ্যতেই টি-২০ ক্রিকেট শাসন করবে ওয়েস্টইন্ডিজ। শক্তিশালী ভারতকে তারা যে ভাবে হারিয়েছে সেটা হয়তো ওয়েস্টইন্ডিজের জয়ের আগ মুহুর্ত পর্যন্তও কেউ ভাবতে পারেনি। সেটা সম্ভব হয়েছে কেবল ভয়ডরহীন, পাওয়ার ক্রিকেট খেলার কারণে।
উপমহাদেশের উইকেটে উপমহাদেশের সেরা দল ভারতকে যে ভাবে শাসন করেছে তারা, বিশাল টার্গেটকে মামুলি পুঁজি বানিয়ে বিশাল জয় তোলে নিয়েছে সেটাতো ওই একটা কারণেই সম্ভব হয়েছে। তারা যে খেলে ভয়ডরহীন, শৈল্পিক ক্রিকেট। আরেকটা জায়গায়ও এগিয়ে আছে তারা। তাদের নারী দলও এবারের বিশ^কাপেই ফাইনাল খেলছে। আত্মবিশ্বাস জোগাবে সেটিও।
ওয়েস্টইন্ডিজের এগিয়ে যাওয়ার কারণ আছে আরেকটি। এই কয়েক দিন আগেও উপমহাদেশের উইকেটে শক্তিশালী ভারতীয় যুব দলকে হারিয়ে যুব বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ান হয়েছে তাদের যুবদলটিও। জুনিয়ররা চ্যাম্পিয়ান হয়েছে, এবার সিনিয়রদের কাজ। আত্মবিশ্বাস দিবে সেটিও।
ওয়েস্টইন্ডিজ যে কোন দিনে দাড়িয়ে যেতে পারে। প্রতিকুল পরিবেশকেও নিজেদের বানিয়ে নেয়। সব দিনই তাদের কাছে সমান। এই দলটা কয়েকদিন আগেও এমন ছিলনা। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে পাল্টেগেছে সে চিত্র। ছিন্নভিন্ন দলটি বাধা হয়ে গেছে এক সুতোয়। ফলে জয়টা রোববার তাদেরই প্রাপ্য।
পিছিয়ে নেই ইংল্যান্ড। তাদের দিনে যে কোন কিছুই সম্ভব হয় ইংলিশদের পক্ষে। যে ভাবে তারা সাউথ আফ্রিকার বিগ টার্গেটকে পাড়ার টার্গেট বানিয়ে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে কে বুজবে রোববার হয়তো অন্য কিছুও হতে পারে। তাদের জেসন রয়, জে রুট যে যেকোন সময় জয় ছিনিতে আনতে পারে।
কিছু দিন পূর্বের ইংল্যান্ড আর বর্তমান ইংল্যান্ড যোজন যোজন দুরত্ব। জেসন রয়, জে রুট আসার পর পাল্টেগেছে ইংল্যান্ড দলও। মাইকেল ভনতো বলেই দিয়েছেন ইংল্যান্ডের এই দলটি সেরা দল। অস্ট্রেলিয়ার যে দলটি ৯৯,০৩,০৭ বিশ্বকাপ জিতেছে তার চেয়ে শক্তিশালী ইংল্যান্ডের এই দল।
তবে সব কিছুকে ছাড়িয়ে ক্রিকেট বিশ্ব রোববার ইডেনে হয়তো জমজমাট চারছক্কার একটি ম্যাচ দেখতে পাবে। সে প্রত্যাশাই থাকলো।
লেখক: ক্রিকে কোচ।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/অতি/০০