স্পোর্টস ডেস্ক: জয়ের দারুণ আশা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত হতাশাই থাকতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ইংল্যান্ডের কাছে প্রথম টেস্ট বাংলাদেশ হেরেছে ২২ রানে। শুধুই কে হেরেছে? নাকি হারিয়ে দিয়েছে ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস) পদ্ধতি।
মাঠের আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা প্রথম ইনিংসে যতবারই আউট দিয়েছে মঈন আলীকে ততবারই রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেছেন মঈন। করেছেন বড় ইনিংস। বাংলাদেশ রিভিউ নিকে তাকে ফেরাতে পারেনি। টিভি আম্পায়ার ভারতীয় এস রাবির সিদ্ধান্ত প্রতিবারই গেছে ইংল্যান্ডের পক্ষে।
শুধু মঈন আলীকে নিয়েই রিভিউ নয়, আরো বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয়েছে রিভিউ সিস্টেমে। বাংলাদেশকে হারিয়ে দেওয়াতে যার বড় অবদান। মঈন আলী রিভিউ নিয়ে এত রান সংগ্রহ করতে না পারলে বাংলাদেশই জিততে পারেতা।
এই পদ্ধতিটা ক্রিকেটে আসার পর এ নিয়ে ইতিবাচক বা নেতিবাচক কথা চলেই আসছে। এখন পর্যন্ত শতভাগ স্বচ্ছতা প্রমাণ করতে পারেনি এই পদ্ধতি। ফলে মাঠের খেলায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে ক্রিকটারদেরই। আর সমর্থকদের ধারণা চট্টগ্রাম টেস্টে জিততে জিততে হারের মুখ দেখা বাংলাদেশের বিপক্ষেই গেছে বেশিরভাগ ডিআরএস!
কোটি টাকার বেশি খরচ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) চলমান সিরিজে ডিআরএস (ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম) প্রযুক্তি নিয়ে আসে। আর সেই ডিআরএসে কপাল পুড়েছে বাংলাদেশের। ইংল্যান্ড ডিআরএসে সাফল্য পেলেও বেশিরভাগ সময় বাংলাদেশকে ভুগতে হয়েছে।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১০টি রিভিউ নেওয়া হলে এক ইনিংসে এটি ব্যবহারের রেকর্ড হয়ে যায়। আর ম্যাচ শেষে ২৬টি রিভিউ এক ম্যাচের রেকর্ড গড়ে দেয়। এর আগে এক ম্যাচে এতগুলো রিভিউ কোনো টেস্টেই দেখা যায়নি। টাইগারদের শেষ দুটি উইকেট এই রিভিউয়ের মধ্যেই নিষ্পত্তি হয়।
টাইগার দলপতি মুশফিকও ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তুলেছেন ডিআরএসের প্রসঙ্গ। তিনি জানান, ‘ডিআরএস সবারই পক্ষে কিংবা বিপক্ষে যেতে পারে। আমারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেটা কখনো আমাদের পক্ষে কখনো আমাদের বিপক্ষে গেছে। ভবিষ্যতে আমরা চেষ্টা করব ডিআরএসের ফল যেন আমাদের পক্ষে থাকে।’
চট্টগ্রাম টেস্টে আইসিসি এলিট প্যানেলের আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা (শ্রীলঙ্কা) ও ক্রিস গ্র্যাফিনি (নিউজিল্যান্ড) দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া, ম্যাচে তৃতীয় আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সুন্দারাম রবি। মাঠের আম্পায়ারদের ভুল সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে চলছে সমালোচনা। অনেকেই জানাচ্ছেন স্বাগতিকদের ওপরই এর বাজে প্রভাব ফেলেছে।
নিয়ম অনুযায়ী দুটি দল প্রতি ৮০ ওভারে দুটি করে রিভিউ পেয়ে থাকে। যেখান থেকে এই ম্যাচে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড দু’দলই ১৩টি করে রিভিউ নিয়েছে। যদিও বেশিরভার সফলতা পেয়েছে ইংলিশ শিবির। আবেদন করার পর যদি আম্পায়ার ভুল প্রমাণিত হয় তবে নষ্ট হয় না রিভিউটি। আর এই ২৬বারের রিভিউয়ে আম্পায়ারের ভুল প্রমাণিত হয়েছে ১১বার! যেখানে শ্রীলঙ্কান আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনাই আটবার ভুল করেছেন। বাকি তিনবার ক্রিস গ্যাফেনি। ফলে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আম্পায়ারের দক্ষতাকে নিয়েও।
রিভিউর ধরন অনুযায়ী প্রথমত আম্পায়ার যদি আউট দেয়, তবে ব্যাটিং দল আবেদন করতে পারবে। সেই অর্থে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের ওপরই বেশি মেরিট বা গ্রহণযোগ্যতা দেওয়া হয়। অন্যদিকে আম্পায়ার আউট না দিলে ফিল্ডিং দল আবেদন চাইলেও মেরিট হিসেবে আম্পায়ারকে মানা হয়। যেমন বল পিচে পড়ে স্টাম্পে আঘাত করলে সুবিধে পায় ফিল্ডাররা। অন্যদিকে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে শুধুমাত্র স্টাম্পে আঘাত করলেই হয়। এই ক্ষেত্রে আরও বেশকিছু জটিলতা রয়েই যায়।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/বা/০০