বোলারদের নৈপুর্ণ্যে স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব এবার ব্যাটসম্যানদের কাঁধে

    0
    21

    স্পোর্টস ডেস্ক: ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশের বোলাররা নিদেজের সেরাটা দিয়েছন। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটসমন্যাদের ব্যর্থতায় বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখিয়ে মাত্র ২২০ রানেই গুটিয়ে যায় টাইগারদের ইনিংস।

    এই অল্প পূঁজিতেই ইংল্যান্ডের সঙ্গে লড়াই করেন বাংলাদেশের বোলাররা। সাকিব, মিরাজদের বোলিং ঘুর্ণিতে ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে করতে পেরেছে মাত্র ২৪৪ রান। লিড পেয়েছে ২৪ রানের।

    ২৪ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ। টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল ২৪ রানে, ইমরুল কায়েস ১৪ রানে ব্যাট করছেন।  টাইগারদের দলীয় সংগ্রহ ৮.২ ওভারে বিনা উইকেটে ৪২ রান।

    শক্তিশালী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে ভালো কিছু করার টাইগার সমর্থকদের স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব এবার ব্যাটসম্যানদের কাঁধে। এবার ব্যাটসম্যানরা ভালো করলেই ইংল্যান্ডকে ছুঁড়ে দেয়া যাবে চ্যালেঞ্জ। প্রথম ইনিংসের ভুল-ত্রুটি কাটিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ-এ প্রত্যাশায় দর্শক বাড়তে শুরু করেছে গ্যালারিতে।

    প্রথম ইনিংসে লিড পেতে পারতো বাংলাদেশ। এ জন্য আক্ষেপ থাকতেই পারে বাংলাদেশ শিবিরে। কেননা ১৪৪ রানে ইংলিশদের আট উইকেট ফেলে দিয়েছিল মিরাজ-তাইজুল-সাকিব মিলে।

    ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্টে লিডের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু নবম উইকেটে আদিল রশিদ ও ক্রিস ওকসের ৯৯ রানের ‍জুটি লিড পাইয়ে দেয় ইংলিশদের।

    ঢাকা টেস্টের লো-স্কোরিং প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ২২০ রানের জবাবে ২৪৪ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা।

    প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসেও একাই ইংলিশদের ছয় ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে পাঠান মেহেদি হাসান মিরাজ।

    ইনিংসের ৮১তম ওভারে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি এনে দেন মিরাজ। শুভাগত হোমের হাতে উকস (৪৬) বাধার সমাপ্তি ঘটে। পরের ওভারেই স্টিভেন ফিনকে (০) মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দি করে ইংলিশ ইনিংসের ইতি টানেন তৃতীয় উইকেটশিকারি তাইজুল ইসলাম। অপর প্রান্তে ৪৪ রানে অপরাজিত থেকে যান রশিদ।

    দলীয় ১৪৪ রানে জো রুটের (৫৬) বিদায়ে অষ্টম উইকেট হারায় ইংলিশরা। সেখান থেকেই দলকে টেনে তোলে লিড এনে দেয় উকস-রশিদ পার্টনারশিপ। ৪৪তম ওভারে রুটকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন তাইজুল।

    চট্টগ্রাম টেস্টের পর ঢাকা টেস্টেও পাঁচ উইকেটের অভিজাত ক্লাবে নাম লিখিয়েছেন মিরাজ। ৪১তম ওভারে জাফর আনসারিকে (১৩) শুভাগত হোমের ক্যাচ বানিয়ে এমন কীর্তি স্পর্শ করেন ১৯ বছর বয়সী এ উঠতি অফস্পিন অলরাউন্ডার।

    ৩৩তম ওভারের মাথায় দলীয় ১১৪ রানে মিরাজের চতুর্থ শিকারের বলটিতে পরিষ্কার এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন বেয়ারস্টো (২৪)।

    ইনিংসের ৫৬তম ওভারে মঈনকে (১০) ক্লিন বোল্ড করে দিনের প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন আগের দিনের দুই উইকেটশিকারি মিরাজ। পরের ওভারেই বেন স্টোকসকে (০) মুমিনুল হকের ক্যাচে পরিণত করে উইকেটের খাতায় নাম লেখান তাইজুল। দলীয় ৬৯ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে পড়ে ইংলিশ শিবির।

    বৃষ্টির কারণে গতকাল (২৮ অক্টোবর) পুরোদিন খেলা সম্ভব হয়নি। ১২.৩ ওভার শেষে তিন উইকেটে পঞ্চাশ রান নিয়ে মাঠে ছাড়ে ইংলিশরা। অপরাজিত থাকেন জো রুট ও মঈন আলী।

    শুক্রবার স্বাগতিকদের ২২০ রানের জবাবে শুরুতেই বেন ডাকেটের (৭) উইকেট হারায় ইংলিশরা। ইনিংসের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম ওভারেই উইকেট উদযাপনে মাতেন সাকিব অাল হাসন। পঞ্চম ওভারে ইংলিশ দলপতি অ্যালিস্টার কুককে এলবিডব্লুর ফাঁদে পেলেন চট্টগ্রাম টেস্টে অভিষিক্ত মেহেদী হাসান মিরাজ।

    পরে গ্যারি ব্যালান্সকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন ১৯ বছর বয়সী এ উঠতি অফস্পিন অলরাউন্ডার। ডাকেটের পর ব্যালান্সকেও গ্লাভসবন্দি করেন মুশফিক। দলীয় ৪২ রানের মাথায় তিন উইকেট হারায় তারা।

    এর আগে মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম দিনের প্রথম সেশনে একক আধিপত্য দেখায় টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ। কিন্তু এরপর ক্রমেই যেন উইকেটের আচরণ বদলায়! দলীয় ১ রানে ইমরুল কায়েসকে (১) হারালেও মুমিনুল হককে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ১৭০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে শক্ত ভিত গড়ে দেন সেঞ্চুরিয়ান তামিম ইকবাল।

    তামিমের দুর্দান্ত ইনিংস সত্ত্বেও বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ২২০ রানে। শুরুটা বাঘের মতো হলেও মিডঅর্ডারের ব্যর্থতায় বড় সংগ্রহ গড়া হয়নি। চট্টগ্রাম টেস্টের উইকেট যেন ফিরে আসে মিরপুরে। বল মন্থর হয়ে ব্যাটে আসার সঙ্গে টার্নও বাড়তে থাকে। এর পুরো সুবিধাই কাজে লাগায় বোলাররা। একদিনে দু’দলের ১৩ উইকেটের পতন তো তারই প্রমাণ।

    শেষ ৪৯ রানে ৯ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শেষ ৩০ রানে আট উইকেট। ভাবা যায়! রীতিমতো ধসই নামের টাইগারদের ব্যাটিং লাইনআপে। ব্যাটিংয়ে হতাশার দিনে উজ্জ্বল ছিলেন তামিম ও মুমিনুল। অন্যদিকে, ইংলিশদের হয়ে একাই পাঁচ উইকেট দখল করেন অফস্পিন অলরাউন্ডার মঈন আলী।

    ক্যারিয়ারের অষ্টম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম (১০৪)। ৪২তম ওভারে মঈনের বলে এলবিডব্লুর শিকার হন দেশসেরা এ ওপেনার। মঈনের বলেই বোল্ড হয়ে ৬৬ রান করে আউট হন মুমিনুল। আর কেউই উইকেটে থিতু হতে পারেননি।

    বাজে শট খেলে একে একে সাজঘরে ফেরেন সাকিব-মাহমুদউল্লাহরা। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৩, সাকিব অাল হাসান ১০, অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ৪, সাব্বির রহমান ০, শুভাগত হোম ৬, কামরুল ইসলাম রাব্বি ০ ও মেহেদি হাসান মিরাজের ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১। ৫ রানে অপরাজিত থাকেন তাইজুল ইসলাম।

    মঈনের সঙ্গে বল হাতে দুর্দান্ত ছিলেন ইমরুলকে ফিরিয়ে উইকেটের সূচনা করা ক্রিস উকস ও বেন স্টোকস। উকস তিনটি ও বাকি দুই উইকেট নেন স্টোকস।

    সিরিজ বাঁচাতে এ ম্যাচে মুশফিকদের জয়ের বিকল্প নেই। দুই ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে সফরকারীরা। চট্টগ্রামে জয়ের কাছাকাছি গিয়েও শেষদিকের ছন্দপতনে ২২ রানের পরাজয় সঙ্গী হয়। মিরপুরে কী সেই আক্ষেপ মেটাতে পারবে টিম বাংলাদেশ?

    এসএনপিস্পোর্টসটায়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/বা/০০

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here