স্পোর্টস ডেস্ক:: বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির দায়িত্ব নিয়েই ফারুক আহমদ টাইগার হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে না রাখার আভাস দিয়ে ছিলেন। জানিয়ে ছিলেন, কোচ সম্পর্কে তার আগের মনোভাবই আছে। দায়িত্ব নেওয়ার দুই মাসের মাথায় সেই কোচ চাকরি হারালেন।
তবে ফারুক আহমদ দাবি করেছেন, ব্যক্তিগত কোনো ক্ষোভ থেকে চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত করেননি তিনি। নিয়ম মেনেই হয়েছে সব কিছুই। কোচ তার চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছেন। অসাদাচরণ করেছেন। সেজন্য তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। শোকজ পাঠানো হয়েছে। শোকজের জবাব দেবেন ৪৮ ঘন্টার ভেতর। এরপরই চূড়ান্ত বরখাস্তের সিদ্ধান্ত আসবে।
হাথুরুসিংহের প্রথম মেয়াদে প্রধান নির্বাচক ছিলেন ফারুক আহমদ। কোচের সঙ্গে অনেক বিষয়ে মতের অমিল থাকায় প্রধান নির্বাচকের পদ থেকে পদত্যাগ করে ক্রিকেট বোর্ড ছাড়েন ফারুক। শুরু থেকেই তিনি ছিলেন হাথুরুসিংহের কড়া সমালোচক। তবে বোর্ড সভাপতি হয়ে জানিয়েছেন, নিজের ব্যক্তিগত কোনো ক্ষোভে কোচ বরখাস্ত নয়।
ফারুক আহমদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ একটা দলের বড় ক্ষতি করে। আপনি যদি পেশাদার হিসেবে কাজ করেন, ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দটা চলে যাবে। ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ এখানে বিন্দুমাত্র প্রভাব ফেলেনি।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বরখাস্ত করেছে চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে। তার জায়গায় নতুন কোচ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ফিল সিমন্সকে। লঙ্কান কোচ হাথুরুসিংহেকের বরখাস্তের গুঞ্জন ছিলো বেশ।মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড জানিয়ে দেয় হাথুরুসিংহে আর নেই টাইগার ক্রিকেটে। ক্রিকেট বোর্ড তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। বরখাস্তের সঙ্গে এই কোচকে শোকজও করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের এই হেড কোচকে অব্যাহতির কথা জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ।
বিপিএল প্লেয়ার্স ড্রাফটের আগ মুহূর্তে প্রধানের ফোনে কোচ পদ থেকে অব্যাহতির বিষয়ে জানতে পারেন হাথুরুসিংহে। যদিও সেটার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছিল না। আজ এলো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে হাথুরুসিংহকে আনুষ্ঠানিকভাবে অব্যাহতির ঘোষণা দেন ফারুক আহমেদ।
প্রথম মেয়াদে ২০১৪ সালের মে থেকে ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের ক্রিকেটের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এরপর বিসিবিকে না জানিয়েই ঢাকা ছাড়েন এই কোচ। জানিয়ে দেন বিসিবির চাকরি আর করবেন না।
তবে সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আবারো হাথুরুসিংহেকে দায়িত্বে নিয়ে আসেন। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশের কোচ হয়ে আসেন হাথুরু। দ্বিতীয় দফায় দায়িত্ব পালনকালেন বাংলাদেশের সিনিয়র ক্রিকেটারদের মধ্যে বিভেদ তৈরি, বিসিবির বিধি ভঙ্গ ও ক্রিকেটারদের সঙ্গে অশোভন আচরণের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে হাথুরুসিংহের বিরুদ্ধে।
পাকিস্তান সিরিজে দারুণ সাফল্যের পর হাথুরুসিংহে কিছুটা স্বস্তিতে ছিলেন। তবে ভারত সিরিজে দুই ফরম্যাটে হোয়াইটওয়াশের পর তার অস্বস্তিতটা শুরু হয়ে যায়। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ, তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজের সবক’টিতে্ হেরে যায় বাংলাদেশ। নুন্যতম লড়াইও করতে পারেনি টাইগাররা। ফলে বোর্ডের অসন্তুুষ্টি আরো বেড়ে যায়। তার ওপর গত ওয়ানডে বিশ্বকাপ চলাকালে একজন ক্রিকেটারের গায়ে হাত তুলেন কোচ। সব মিলিয়ে তার বিদায় ঘন্টা বাজলো।
জানা গেচে, মূলত অসদাচরণ ও আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ ছিলো হাথুরুসিংহের বিরুদ্ধে। অভিযোগ আছে তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের মধ্যকার বিভেদে ভূমিকা রাখেন তিনি। দুই দলের সিনিয়র ক্রিকেটারের বিবেদকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগান তিনি। আছে অতিরিক্ত ছুটির গুরুতর অভিযোগও।
বিসিবির সাথে চুক্তি অনুযায়ী বছরে ৪৫ দিন ছুটি পাওনা থাকলেও চলতি মেয়াদের প্রথম বছরে তিনি অতিরিক্ত ছুটি কাটিয়েছেন ৬৭ দিন এবং দ্বিতীয় বছরে এখন পর্যন্ত অতিরিক্ত ১৪ দিন ছুটি কাটিয়েছেন হাথুরুসিংহে। এমতাবস্থায় চুক্তিভঙের অভিযোগ এনেছে ক্রিকেট বোর্ড।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০