নিজস্ব প্রতিবেদক:: সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিন প্রথম সেশন পুরোটাই কেড়ে নিয়েছে বৃষ্টি। দ্বিতীয় সেশনেরও কিছুটা সময় চলে গেছে বৃষ্টির পেটে। সিলেটের আকাশে রোদ উঠেছে। আম্পায়াররা মাঠ পরিদর্শন শেষে খেলা শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্বিতীয় বাংলাদেশ শেষ করেছিলো এক উইকেটে ৫৭ রান তুলে, ২৫ রানে পিছিয়ে থেকে। বেলা ১টায় আবারো ব্যাটিং শুরু করবেন টাইগারদের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান জয় ও মুমিনুল।
বৃষ্টিতে বেশ কিছু সময় চলে যাওয়ায় আম্পায়াররা ম্যাচের সময় বাড়িয়ে দিয়েছেন। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তৃতীয় দিনের খেলা চলবে। তবে এর মধ্যে যদি আবারো বৃষ্টি আঘাত না হানে। গত মধ্যরাত থেকেই মুষল ধারে বৃষ্টি হয়েছে সিলেটে। দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টি হয়। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বৃষ্টি পুরো থেমে গেলে মাঠ কর্মীরা মাঠ শুকানাের কাজ শুরু করেন।
জিম্বাবুয়ের সঙ্গে হেসেখেলেই জেতার কথা, সেই জিম্বাবুয়ের সঙ্গে লড়াইয়েও যেনো পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে টাইগাররা আছে পিছিয়ে। নিজেদের প্রথম ইনিংসে যেখানে বাংলাদেশ ১৯১ রান তুলতে সমর্থ হয়েছিলো, সফরকারী জিম্বাবুয়ে সেখানে ২৭৩ রান তুলে ৮২ রানের লিড নিয়ে।
পিছিয়ে পড়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে এক উইকেট হারিয়ে ৫৭ রান তুলে। দিন শেষে পিছিয়ে আছে ২৫ রানে। ‘দুর্বল’ প্রতিপক্ষের সাথে দাপট দেখিয়ে যেখানে খেলার কথা, বাংলাদেশ উল্টো রীতিমতো লড়াই করতে হচ্ছে জিম্বাবুয়ের সাথে।
প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ হয়েছেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। টাইগারদের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে জয়কে নিয়ে মাঠে নেমে ছিলেন তিনি। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ১৩ রানেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১০ বলে ৪ রানে ফিরেন সাদমান ইসলাম। ১৩ ওভারে এক উইকেটে ৫৭ রান তুলে দিন শেষ করেছে স্বাগতিকরা্ ২৮ রানে জয় ও ১৫ রানে মুমিনুল হক অপরাজিত আছেন।
জিম্বাবুয়ের হয়ে ব্লেসিং মুজারাবানি একটি উইকেট লাভ করেন।
এর সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় দিন সকাল শুরু হয় জিম্বাবুয়ের দাপটেই। আগের দিন বাংলাদেশকে ১৯১ রানে অলআউট করে দিয়ে আজ দ্বিতীয় দিন জিম্বাবুয়ে ব্যাটিংয়ে নামে শুন্য উইকেটে ৬৭ রান নিয়ে। পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ ম্যাচে ফেরার জন্য লড়াই করতে থাকে। সকালের প্রথম সেশনে সেই লড়াইয়ে কিছুটা সফল হয়েছে বাংলাদেশ।
পেসার নাহিদ রানার গতিতে কাবু হযেছেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা। একাই তুলে নেন তিন উইকেট। বাংলাদেশ প্রথম সেশন করে করে প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ের চার উইকেট তুলে নিয়ে। দুই ওপেনার ব্রায়ান বেনেট ও বেন কারানকে ফেরানোর পর সফরকারী অধিনায়ক আরভিনকেও ফেরান নাহিদ। ইনিংসের ১৭তম ওভারের পঞ্চম বেন কারানকে ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু আনেন নাহিদ। দলীয় ৬৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় সফরকারীরা। ৫৫ বলে ১৮ রান করেন এই ওপেনার।
২১তম ওভারের শেষ বলে সফরকারীদের ওপেনার, হাফ সেঞ্চুরিয়ান ব্রায়ান বেনেটকেও ফিরিয়ে দেন নাহিদ। দলীয় ৮৮ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। দশ বাউন্ডারিতে ৬৪ বলে ৫৭ রান করেন এই ওপেনার। উইকেটের ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন হাসান মাহমুদও। পরের ওভারের তৃতীয় বলে নিকোলাস ওয়েলসে ফিরিয়ে দেন ওই ৮৮ রানেই। পরপর দুই উইকেট হারায় আরভিনের দল। ১২ বলে ২ রান করেন এই ব্যাটসম্যান।
দ্রুত তিন উইকেট পতনের পর জিম্বাবুয়ের হয়ে হাল ধরেন অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন। তবে তাঁকে থামিয়ে দেন নাহিদ। বাংলাদেশের পেসারের গতিতে কাবু হন তিনি। দলীয় ১২৯ রানে লাঞ্চ বিরতি আগেই চার উইকেট হারায় সফরকারীরা। ৩৯ বলে ৮ রান করেন তিনি।
পঞ্চম উইকেটে মাধেভেরে ও শন উইলিয়ামস ৪৮ রানের জুটি গড়ে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেন। তবে খুব একটা সফল হননি্ ৫০তম ওভারের তৃতীয় ভলে মাধভেরেকে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন খালেদ। দলীয় ১৭৭ রানে ব্যক্তিগত ২৪ রানে সাজঘরে ফিরেন মাধেভেরে। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে দারুণ ব্যাট করতে থাকেন হাফ সেঞ্চুরিয়ান শেন উইলিয়ামস। মাধেভেরের বিদায়ের পর ষষ্ট উইকেটে তার বিদায়ে বড় ধাক্কা খায় সফরকারীরা। ইনিংসের ৫৫তম ওভারের তৃতীয় বলে ১৯৩ রানের মাথায় মিরাজ সাজঘরে পাঠান সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলা এই ব্যাটসম্যানকে। ছয় চার ও দুই ছক্কায় ১০৮ বলে ৫৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
এরপর জিম্বাবুয়ে আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি। নিয়াশা মায়াভো ও রিচার্ড এনগারাভাদের শেষ দিকের ছোট ছোট ইনিংসে ৮০.২ ওভারে ২৭৩ রানে গুটিয়ে যায়। নিয়াশা মায়াভো ৫৪ বলে ৩৫ রান করেন। রিচার্ড এনগারাভা একটি করে চার ও ছক্কায় ৪৪ বলে ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন।
বাংলাদেশের হয়ে মিরাজ ৫টি, নাহিদ রানা ৩টি, খালেদ ও হাসান একটি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০