নিজস্ব প্রতিবেদক:: আফগানিস্তানকে রীতিমতো শাসন করে ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষ করলো বাংলাদেশ। ব্যাটে-বলে আফগানিস্তানকে ঢাকা টেস্টে কাবু করেছে টাইগাররা। ফলােঅন করিয়েও ব্যাটিংয়ে না পাঠিয়ে নিজেরা ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ দুর্দান্ত এক দিন কাটিয়েছে।
দ্বিতীয় দিন সকালের সেশনেই বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে অলআউট হয়ে যায় ৩৮২ রানে। জবাবে ব্যাট করতে নামা আফগানিস্তানকে মাত্র ১৪৬ রানে গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশ। ২৩৬ রানের বড় লিড নিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামা স্বাগতিকরা দিন শেষ করেছে ৩৭০ রানের লিড নিয়ে এক উইকেটে ১৩৪ রান তুলে।
দ্বিতীয় দিনের শেষ বিকেল রাঙালেন জাকির হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত। আফগান বোলারদের শাসন করে দু’জনেই তুলে নিয়েছেন জোড়া হাফ সেঞ্চুরি। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় ইনিংসেও হাসলো শান্তর ব্যাট।
২৩৬ রানের লিড নিয়ে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে দারুণ শুরু করেছে। ওপেনার জয়ের বিদায়ের পর শান্ত-জাকিরের শতরানের জুটিতেই টাইগারদের লিড সাড়ে তিনশো রান ছাড়িয়েছে। দ্বিতীয় উইকেটে বড় জুটি গড়কে দলকে নিয়ে বড় সংগ্রহের পথে এগুচ্ছেন দু’জনে।
৫৬ বলে ছয় চারে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন জাকির হাসান। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি তার দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি। এই ওপেনারের পরপরই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন নাজমুল হোসেন শান্তও। আট চারে ৬১ বলে ছুঁয়েছেন ৫০’র ঘর।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ২৩ ওভারে এক উইকেটে ১৩৪ রান। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১১৬ রান তুলে অপরাজিত আছেন শান্ত ও জাকির। দু’জনেই অপরাজিত আছেন ৫৪ রান করে সংগ্রহ কেরে।অ
লিড নিয়ে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের শুরুটা মোটেও ভাল হয়নি। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদুল হাসান জয় ওয়ানডে স্টাইলে ইনিংস শুরু করে সাজঘরে ফিরেন দ্রুতই। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে দলীয় ১৮ রানের মাথায় আমির হামজার বলে ইব্রাহিম জর্দানের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভেলিয়নে ফেরেন তিনি। ৪ চারে ১৩ বলে ১৭ রান করেন।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামা আফগানরা ব্যাট হাতে লড়াই জমাতে পারেনি। বাংলাদেশের বোলারদের প্রতিরোধের মুখে গড়তে পারেনি বড় কোনো জুটিও। শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে দল। দলীয় ১৮ রানেই ইব্রাহিম জর্দানকে ফিরিয়ে শরিফুল উইকেট শিকার শুরু করেন। এবাদতের চার উইকেটের সঙ্গে শরিফুল, মিরাজদের দুই উইকেটে দুই সেশনেই আফগানিস্তান গুটিয়ে যায় মাত্র ৩৯ ওভার ব্যাট করে ১৪৬ রানে।
পঞ্চম উইকেটে কেবল জুটি গড়ার চেষ্টা করেছিলেন আফসার জাজাই ও নাসির জামাল। ৬৫ রানের সেই জুটি ভাঙেন মিরাজ নাসির জামালকে এলবিডাব্লিউ’র ফাঁদে ফেলে। ইনিংসের ২৬তম ওভারের দ্বিতীয় দলে দলীয় ১১৬ রানে ব্যক্তিগত ৩৫ রানে নাসির জামালের বিদায়ে শেষ হয়ে যায় আফগানদের বড় রানের আসা। তার সঙ্গে জুটি গড়া আফসার জাজাই ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন।
৪৭ বলে ২৩ রান করেন করিম জান্নাত। ২১ বলে ১৭ রান করেন ওপেনার আব্দুল মালিক। আফগানদের প্রথম ইনিংসে এক অঙ্কের কোটা পেরুতে পারেননি অন্য কোনো ব্যাটার। ১৪৬ রানে তাদের গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশ লিড নেয় ২৩৬ রানে।
বাংলাদেশের হয়ে এবাদত ৪টি, শরিফুল, তাইজুল ও মিরাজ ২টি করে উইকেট লাভ করেন।
এর আগে বাংলাদেশ দল নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩৮২ রান তুলেছিলো। দ্বিতীয় আফগান বোলার হিসেবে অভিষেকে ৫ উইকেট পেলেন নিজাত মাসুদ।
অভিষেকেই ৫ উইকেট পেয়ে নিজাত গড়লেন রেকর্ড। আমির হামজার পর দ্বিতীয় আফগান বোলার হিসেবে অভিষেকে ৫ উইকেট পেলেন এই ডানহাতি পেসার। ৩৬২ রান নিয়ে ব্যাটিং করতে নেমে লিটন দাসের দল অল আউট হয়েছে ৩৮২ রানে। দ্বিতীয় দিন মাত্র ৭ ওভার ব্যাটিং করতেই ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
প্রথম ঘণ্টায় মাত্র ৪৫ মিনিটের মত ব্যাটিং করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। এদিন মুশফিকুর রহিম ও মেহেদি হাসানের দিকে তাকিয়ে ছিল টাইগাররা। কিন্তু দিনের শুরুতেই ফিরেন মিরাজ। চতুর্থ ওভারেই আউট হন তিনি। ইয়ামিন আহমেদজাইয়ের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ তুলে ফিরেছেন এই অলরাউন্ডার।
আজ নিজের নামের পাশে মাত্র ৫ রান যোগ করে ৪৮ রানে আউট হলেন মিরাজ। তাঁর বিদায়ে ভাঙে মুশফিকের সঙ্গে ৮৩ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি। মিরাজ আউট হওয়ার চার বল পর আউট মুশফিকও। নিজাত মাসুদের অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাঁর ব্যাটের হ্যান্ডল ও গ্লাভস ছুঁয়ে জমা পড়ে দ্বিতীয় স্লিপে নাসির জামালের হাতে। ৪৭ রানে আউট হন তিনি। এরপর ফিরে যান তাইজুল ইসলামও।
তাইজুলের বিদায়ের ২ রান পর ফিরে যান ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরা তাসকিন আহমেদ। তখন দলীয় সংগ্রহ ৩৭৭ রান। এর ৫ রান পর শেষ উইকেট হিসেবে বিদায় নেন শরিফুল ইসলাম। আফগানদের হয়ে অভিষিক্ত নিজাত ৫ উইকেট ছাড়াও ইয়ামিন আহমাদজাই ২টি লাভ করেন।
আফগানিস্তানের হয়ে নিশাত ৫টি, ইয়ামিন ২টি, রহমত, আমির ও জহিররা ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০
Discussion about this post