নিজস্ব প্রতিবেদক:: ১৭ বছর ধরে আন্তর্জাতিক টি-২০ খেলে বাংলাদেশ। অথচ ইংল্যান্ড একটিবারের জন্যও দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ খেলতে রাজি হয়নি। অবশেষে ১৭ বছর পর টি-২০ সিরিজ খেলতে আসা ইংল্যান্ডের ‘দাম্ভিকতা’ ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে টাইগাররা।
দাপুটে খেলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের টি-২০ সিরিজ পরাজয়ের স্বাদ দিয়েছে বাংলাদেশ। ১৭ বছর পর সিরিজ খেলতে রাজি হওয়া ইংল্যান্ড এখন হোয়াইটওয়াশের শঙ্কায় আছে। তিন ম্যাচ সিরিজ এক ম্যাচ হাতে রেখেই জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজের শেষ ম্যাচটি টাইগাররা জিতে নিলে বাংলাওয়াশ হবে ক্রিকেটের জনক ব্রিটিশ।
মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে টস জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে সাকিবের দল ১১৭ রানে বেঁধে ফেলে। স্বাগতিক ব্যাটাররা এক ওভার এক বল হাতে রেখে ছয় উইকেট হারিয়ে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে ফেলে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতল সাকিব আল হাসানের দল। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে রোববার ৪ উইকেটে জিতেছে টাইগাররা।
মিরপুরে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশী বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারে নি ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় জস বাটলারের দল। ইংলিশদের বিপক্ষে সিরিজ জিততে টাইগারদের দরকার ছিল ১১৮ রান।
সেই রান তাড়া করতে নেমে ৭ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। সাকিবের দল এর আগে প্রথম ম্যাচে ৬ উইকেটের জয়ে সিরিজে এগিয়ে গিয়েছিল। লাল সবুজের প্রতিনিধিরা এবার ১ ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে থাকছে ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশ লজ্জা দেওয়ার।
রান তাড়ায় ৩ চারে ৪৭ বলে ৪৬ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। মেহেদি হাসান মিরাজ করেছেন ১৬ বলে ২০ রান। তাঁর ইনিংসে ছিল ২ ছক্কা। ২ চারে ১৮ বলে ১৭ রান করেন তৌহিদ হৃদয়।
জয়ের জন্য শেষ ১২ বলে বাংলাদেশের প্রয়োজন ১৩ রান। ১৯তম ওভারে বোলিংয়ে আসা ক্রিস জর্ডানকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে চাপ কমান শান্ত। পরের বলে শান্ত ২ রান নিলে জয়ের খুব কাছে চলে যায় বাংলাদেশ। শেষ ৯ বলে ৬ রানের প্রয়োজন দাঁড়ায় স্বাগতিকদের। সেখানে জর্ডানকে ৪ হাঁকিয়ে দলকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে যান তাসকিন। ২ রান প্রয়োজন হলে আরও একটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে বাংলাদেশের আরও একটি ইতিহাস লেখেন তিনি। ৩ বলে ৮ রানে অপরাজিত থাকেন তাসকিন।
ওভারের পঞ্চম বলে ২ রান প্রয়োজন হলে আরও একটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে বাংলাদেশের আরও একটি ইতিহাস লেখেন তাসকিন। ৩ বলে ৮ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। বল হাতে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ও ব্যাট হাতে ২০ রান করায় ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন মিরাজ।
এর আগে অফস্পিন ভেল্কিতে ইংল্যান্ডের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপকে দুমড়ে মুচড়ে দেন মিরাজ। ইনিংসের শেষ বলে ইংল্যান্ড অলআউট হয় ১১৭ রানে। ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। এটিই তাঁর ক্যারিয়ার সেরা বোলিং স্পেল।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় ইংল্যান্ড। তাসকিন আহমেদ প্রথম ওভারে ১০ রান দিলেও নিজের দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার ডেভিড মালানকে ফেরান তিনি। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে থার্ডম্যানে ক্যাচ তুলেছেন, হাসান মাহমুদ ভুল করেন নি। ১৬ রানেই প্রথম উইকেট হারায় সফরকারীরা। ৮ বলে ৫ রান করে মালান ফিরলে ব্যাটিংয়ে আসেন মঈন আলী।
এরপর বোলিংয়ে এসেই সাকিব আল হাসান পান উইকেট। তাঁর বলে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন আরেক ইংলিশ ওপেনার ফিল সল্ট। ১৯ বলে ২৫ রান করেন তিনি। এরপরের ওভারে নতুন বোলার হাসান মাহমুদও পান উইকেটের দেখা। অধিনায়ক জস বাটলারকে দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে বোল্ড করেন ডানহাতি এই পেসার। ৬ বলে ৪ রান করেন এই ডানহাতি ব্যাটার।
বাটলারের পরই ফিরে যান মঈন। বোলিংয়ে আসা মিরাজের বলে বদলি ফিল্ডার শামিম হোসেনের হাতে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দেন তিনি। ১৭ বলে ১৫ রান করেন এই বাঁহাতি। মিরাজের বলে ফিরে যান স্যাম কারানও। ১৬ বলে ১২ রান করেন তিনি। একই ওভারে ক্রিস ওকসকে ফেরান এই অফস্পিনার। তিনি রানের খাতাই খোলতে দেন নি ওকসকে।
নিজের শেষ ওভারে বোলিংয়ে এসে ক্রিস জর্ডানকে বিদায় করে চতুর্থ উইকেট তুলে দেন মিরাজ। ১০১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বসা ইংলিশদের শঙ্কা জাগে ২০ ওভার শেষ হওয়ার আগেই গুঁটিয়ে যাওয়ার। ইনিংসের শেষ বলে জোফরা আর্চার রান আউট হন। ১১ রান করেন অভিষিক্ত রেহান আহমেদ। মিরাজের ৪ উইকেট ছাড়া ১টি করে উইকেট পেয়েছেন তাসকিন, মোস্তাফিজ, সাকিব এবং হাসান মাহমুদ।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/০০
Discussion about this post