নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দেখতে দেখতে পর্দা নেমে এলো নারী এশিয়া কাপ ২০২২’র। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার ফাইনালের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে অষ্টম আসরে। সাত দলের টুর্নামেন্টে এখন বাকি আছে কেবল দুটি দল।
আর সেই দুটি দল হলো ভারত এবং শ্রীলঙ্কা। শনিবার ফাইনালে মুখোমুখি হবে আসরের এই দুই দল।চা বাগানের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠা মাঠে ম্যাচ শুরু হবে দুপুর ১.৩০টায়। ম্যাচকে সামনে রেখে সব ধরনের আনুষ্ঠনিকতা শেষ। এবার শুধু মাঠের লড়াইয়ের পালা।
এখন পর্যন্ত অষ্টম আসরের সবগুলোতেই ফাইনাল খেলেছে ভারত। এর মধ্যে আগের সাত আসরের মধ্যে টানা ছয়বারই জিতেছে শিরোপা। সবশেষ ২০১৮ সালের আসরে বাংলাদেশের কাছে হেরে টানা সপ্তম শিরোপা জয় থেকে বঞ্চিত হয় দলটি। তবে এবার সপ্তম শিরোপার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে দলটি।
তবে লড়াইটা সহজ হবে না। কেননা ১৪ বছর পর এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠা শ্রীলঙ্কা ছেড়ে কথা বলবে না। এখন পর্যন্ত চারবার ফাইনাল খেললেও, শিরোপা জেতা হয়নি লঙ্কানদের। প্রত্যেক আসরেই ভারতের বিপক্ষে হার রয়েছে তাদের। এবার তাই প্রতিশোধের পাশাপাশি, প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতার সুযোগ নিশ্চিতভাবেই হাতছাড়া করতে চাইবে না তারা।
তার উপর মাসখানেক আগেই পুরুষ দল জিতেছে এশিয়া কাপ। সেখান থেকে উজ্জিবীত নারী দল। এদিকে আসরে লিগ পর্বে বাংলাদেশের বিপক্ষে দারুণ জয়ের পর সেমি ফাইনালে পাকিস্তানকে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে ১ হারিয়েছে তারা। সব মিলিয়ে অনুপ্রেরণার বাড়তি রসদ কাজ করছে লঙ্কান দলের উপর। তাই সুযোগটা লুফে নিয়ে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে শ্রীলঙ্কা।
ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে দুই দলই সাবধানতা অবলম্বনের আভাস দিয়েছেন। কেউই কাউকে ছোট করে দেখছে না। তবে নিজ নিজ দল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ভারত এবং শ্রীলঙ্কা দুই দলই।
হারমানপ্রীত কৌর বলেন, ‘একটি মান যখন তৈরি করে ফেলবেন, আপনার কাছে প্রত্যাশা বাড়তি থাকবে তখন। আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধারাবাহিকতা ধরে রেখে ক্রিকেট খেলা। আমরা ইতিহাস গড়েছি জানি, তবে কাল নতুন ম্যাচ। আমাদের সেখানেই থাকতে হবে, নজর রাখতে হবে সেদিকে।’
লঙ্কান দল নিয়ে ভারত অধিনায়কের ভাষ্য, ‘আমরা ইতিবাচকতা দেখেছি তাদের। বিশেষ করে তারা শেষ বল পর্যন্ত হাল ছাড়ে না। তাদের লড়াই দেখার মতো। যখন কেউ ভালো ক্রিকেট খেলবে, তখন আপনিও তাদের কাছ থেকে শিখবেন কিছু না কিছু।’
এদিকে ভারতকে ফেবারিট মানলেও চাপের কিছু দেখছেন না শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক চামারি আতাপাত্তু। তিনি বলেন, ‘ভারত এই টুর্নামেন্টে পরিষ্কার ফেবারিট। তাদের ভালো মানের খেলোয়াড় আছে বেশ কয়েকজন। তবে অধিনায়ক হিসেবে আমি আসলে কোনো চাপ অনুভব করতে চাই না কালকের ম্যাচের জন্য। যারা ভালো ক্রিকেট খেলবে, ভুল কম করবে তারাই জিতবে। আমাদের পরিকল্পনাতেই আমরা থাকতে চাই।
লঙ্কান অধিনায়ক আরও বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। যেহেতু গত ১৪ বছর ধরে আমরা এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলিনি। আমরা সুযোগটা পেয়েছি।’
সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ২৩ বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও শ্রীলঙ্কা। এর মধ্যে ভারত জিতেছে ১৭ ম্যাচে আর শ্রীলঙ্কার জয় মাত্র ৪ ম্যাচে। বাকি দুটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে।
পরিসংখ্যান কিংবা কথার লড়াই যতই থাকুক না কেন, দিন শেষে লড়াই হবে মাঠে। সম্পূর্ণ নতুন ম্যাচে মাঠে নামবে দুই দল। টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের দিনে যে কাউকেই হারাতে পারে। শেষ পর্যন্ত তাই ভারতের ধারাবাহিকতা নাকি শ্রীলঙ্কার টিম স্পিরিট কোনটার জয় হবে, সেটার উত্তর বলে দিবে সময়ই। তবে সবার চাওয়া একটাই, জমজমাট-উপভোগ্য ফাইনাল চাই।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/সা