নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শ্রীলঙ্কার ৫৩১ রানের পাহাড়ে চাপা পড়ে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা বেশ ভালোভাবেই করেছিল বাংলাদেশ। তবে দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগ মূহুর্তে মাহমুদুল হাসান জয়ের উইকেট হারিয়েছে স্বাগতিকরা। আর সেটিতেই অস্বস্তিতে টাইগাররা।
সাগরিকার জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসের শুরু থেকে দেখেশুনে খেলতে থাকেন দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান। ভালো জুটিও দাঁড় করিয়েছিলেন তারা। তবে ১৩তম ওভারের তৃতীয় বলে জয়কে বোল্ডআউট করে ৪৭ রানের সেই জুটি ভেঙে দেন লাহিরু কুমারা। বাংলাদেশ হারায় তাদের প্রথম উইকেট আর ৪২ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২১ রান করেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন জয়।
দিনের বাকিটা সময় আর কোনো বিপদ হতে দেননি টাইগারদের ব্যাটাররা। নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে নামা তাইজুল ইসলামকে সাথে নিয়ে ভালোভাবেই পার করে দেন আরেক ওপেনার জাকির হাসান। দ্বিতীয় দিন শেষে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৫ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৫৫ রান। জাকির হাসান ২৮ রানে ও তাইজুল ইসলাম কোনো রান না করেই অপরাজিত আছেন। উইকেট না হারালে, অনেকটা ভালো অবস্থানেই থাকতে পারত বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম টেস্টে শ্রীলঙ্কার চেয়ে এখনও ৪৭৬ রানে পিছিয়ে আছে স্বাগতিকরা।
এর আগে বাংলাদেশ দলকে রানের চাকায় পিষ্ট করে থামে শ্রীলঙ্কা। প্রায় দুই দিন ব্যাটিং করে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৫৯ ওভারে ৫৩১ রানে অলআউট হয়েছে লঙ্কানরা।
৪ উইকেটে ৩১৪ রান নিয়ে আগের দিন যেখানে শেষ করেছিল শ্রীলঙ্কা, ঠিক সেখান থেকেই দারুণভাবে চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের সকালের শুরুটা করে দলটি। সাগরিকার আকাশে কালো মেঘের সাথে এদিন লঙ্কানদের ব্যাটিংও বাংলাদেশের জন্য কালো মেঘ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। প্রথম এক ঘন্টা বেশ ভালো ব্যাটিংও করে সফরকারীরা। দীনেশ চান্দিমাল ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি।
তবে শ্রীলঙ্কার ৩৭৫ রানের মাথায় দলকে ব্রেক থ্রু এনে দেন সাকিব আল হাসান। ৫৯ রান করা চান্দিমালকে ফিরিয়ে নিজের দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেন এই বাঁহাতি স্পিনার। ধনাঞ্জয়ার সাথে চান্দিমালের ৮৬ রানের জুটি ভাঙে। আউট হওয়ার আগে ১০৪ বলে ৫ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ৫৯ রান করেন চান্দিমাল। সেই জুটি ভাঙার পর ধনাঞ্জয়া ও কামিন্দু মিলে এগিয়ে নেন সফরকারীদের ইনিংস। দুজনের ৩৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ভর করে চারশ রানের কোটা পার করেই মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় লঙ্কানরা।
তবে মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফেরার পরই একেবারের প্রথম ওভারে খালেদ আহমেদের এলবিডব্লিউর শিকারে পরিণত হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া। যাওয়ার আগে ১১১ বলে ৬ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ৭০ রানে সাজান নিজের ইনিংস। এরপর সপ্তম উইকেটে কামিন্দু মেন্ডিসকে নিয়ে ৬৫ রানের জুটি গড়েন প্রভাত জয়সুরিয়া। চা-বিরতিতে যাওয়ার আগ মূহুর্তে ২৮ রান করা জয়সুরিয়াকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে সেই জুটি ভাঙেন সাকিব।
চা-বিরতি থেকে এসে এক প্রান্ত আগলে রেখে লোয়ার অর্ডারকে সাথে নিয়ে রান বাড়িয়ে নিতে থাকেন কামিন্দু মেন্ডিস। প্রথম টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি হাঁকানো এই বাঁহাতি এই ম্যাচেও সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। তবে বাকিদের ব্যর্থতার কারণে পারেননি। লোয়ার অর্ডারে ব্যাটাররা আউট হয়ে পড়লে, তিনি শেষ পর্যন্ত ১৬৭ বলে ৯ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ৯২ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। ছয় ফিফটিতে লঙ্কানদের ইনিংস থামে ৫৩১ রানে।
বাংলাদেশের হয়ে সাকিব ৩টি, অভিষিক্ত হাসান মাহমুদ ২টি, মিরাজ ও খালেদ ১টি করে উইকেট লাভ করেন। একাধিক ক্যাচ মিস না হলে গল্পটা ভিন্নও হতে পারত।
Discussion about this post