মাশরাফি, স্বস্তি-আনন্দের অশ্রু

0
19

আমিনুল হক পলাশ: মাদ্রাজে রজনীকান্তের ক্রেজ নিয়ে নানান কথা শোনা যায়। রজনীকান্তের নামে মন্দির আছে, তাঁকে অবতার বা ভগবান জ্ঞান করে অনেক ভক্ত নাকি পূজা করে। আমি অবাক হয়ে ভাবতাম, এটাও সম্ভব! কিভাবে একজন রক্ত মাংসের মানুষ মানুষের মনে এতো দৃঢ় অবস্থান নিতে পারে?

মাঠে বসে খেলা দেখছিলাম। বোলিং মার্ক থেকে দৌড় শুরু করেছেন মাশরাফি। আম্পায়ারকে ক্রস করে হঠাৎ করে পড়ে গেলেন তিনি। নিজের অজান্তেই চিৎকার করে উঠলাম, ওহ মাই গড। পুরো গ্যালারি স্তব্ধ। মাঠের প্রতিটা প্লেয়ার ছুটে গেল তাঁর কাছে। ছুটে গেলেন সাপোর্ট স্টাফরা। মনের ভিতরে কু ডাক ডাকছে। আর কত! কিছুক্ষন পর উঠে দাঁড়ালেন মাশরাফি। পুরো গ্যালারি গর্জনে ফেটে পড়ছে। হঠাৎ দেখি চোখের কোণ টা ভিজে উঠেছে। স্বস্তিতে, আনন্দে।

আমি সাকিবের খুব বিশাল একজন ফ্যান, আমার প্রিয় খেলোয়াড় সাকিব। সাকিবকে যখন ব্যান করা হলো তখন এর বিপক্ষে অনেক লিখেছি নিজের টাইমলাইনে। পরিচিত অনেক সাংবাদিককে ফোন দিয়েছি। কিছু করার আকুতি জানিয়েছি। সেসবই ছিলো ক্রিকেটীয় দৃষ্টিকোন থেকে।

কিন্তু আজ মাশরাফি পড়ে যাওয়ার পর মনের ভিতর দমবন্ধ হওয়া যে অনূভুতি কাজ করা শুরু করলো তাতে শুধু ক্রিকেটীয় আবেগ মিশে ছিলো না। আমি এই অসহ্যকর অনূভুতিকে ব্যাখ্যা করতে পারবো না। তখনকার জন্য আমার কাছে জয় পরাজয় সব সব মূল্যহীন মনে হচ্ছিলো। এই অল্প একটু মুহুর্তে শুধু মনের ভিতর একটাই চাওয়া ছিলো, এই পাগলাটা উঠে দাঁড়াক, বোলিং মার্কে গিয়ে শুধু একবার দৌড় শুরু করুক। আর কিচ্ছু চাওয়ার নেই।

আমি আজ বুঝতে পেরেছি কেন ভক্তরা রজনীকান্তের পূজা করে! আমি মাশরাফির ভক্ত বা ফ্যান না। কেননা মাশরাফি কোন ব্যাক্তি না, খেলোয়াড় না। মাশরাফি তারচেয়েও অনেক বড় কিছু। স্টার, সুপারস্টারদের ভক্ত হওয়া যায়, মাশরাফির হওয়া যায় না। বরং মাশরাফি কোন ধর্ম হলে সেই ধর্মের অনুসারী হওয়া। হৃদয়ের মন্দিরে মাশরাফিকে দেবতার আসনে বসানো যায়, তাঁর জন্য পূজার অর্ঘ্য সাজানো যায়। মাশরাফি যে একটি আবেগের নাম, একটি ভালোবাসার নাম।

জয়তু মাশরাফি!

(ফেসবুক থেকে নেওয়া)

সিলেটটুডে/এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here