নিজস্ব প্রতিবেদকঃ হতশ্রী ব্যাটিংয়ে নিজেদের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটালো বাংলাদেশ। ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে ১৮২ রানে অলআউট হয়ে ৩২৮ রানের বিশাল এক হার দেখল টাইগাররা। সিলেট টেস্টে ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ে স্বাগতিকরা সিরিজে পিছিয়ে পড়ল ১-০ ব্যবধানে। টেস্টে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট ইতিহাসে রানের হিসেবে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয়ের রেকর্ড এটি। ব্যাটিং-বোলিংয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করে সিরিজে লিড নিল সফরকারীরা।
মুমিনুল হকের ৮৭ রানের লড়াকু ইনিংস ছাপিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের দেখা পেয়েছে কাসুন রাজিথা।
হারের অপেক্ষা নিয়ে চতুর্থ দিনের সকালটা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। রৌদ্র্যজ্জল আবহাওয়ায় আগের দিনের করা ১৩ ওভারে ৫ উইকেটে ৪৭ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামে দল। তবে মুমিনুল হক ও তাইজুল ইসলামের ব্যাটে সকালের শুরুটা মনমতো হলো না টাইগারদের। কোনোমতে দলের রান পঞ্চাশ পার করে দিনের খেলা শুরুর তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই ফিরে যান তাইজুল। খেলা শুরুর মাত্র ১১ মিনিটের মাথায় প্যাভিলিয়নের পথ ধরতে হয় তাকে। ইনিংসের ১৬তম ওভারের কাসুন রাজিথার ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ’র শিকার হয়ে ফিরেন তাইজুল। রিভিউ নিয়েও পার পাননি তিনি। ১৫ বলে ১ বাউন্ডারিতে ৬ রান করে ড্রেসিং রুমে ফিরে যান।
বাংলাদেশের বিপদ বেড়ে যায় এতে। সেখান থেকে দলের হাল ধরেন মুমিনুল ও মিরাজ। দুজনে মিলে বেশ ভালোই মোকাবেলা করতে থাকেন লঙ্কান বোলারদের। তবে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার ২৫ মিনিট আগে ৩৩তম ওভারের তৃতীয় বলে কাসুন রাজিথার ডেলিভারিতে স্লিপে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মিরাজ। আউট হওয়ার আগে ৫০ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৩৩ রান করেন তিনি।
শ্রীলঙ্কার সামনে বাঁধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়ানো মুমিনুল হক ও মেহেদী হাসান মিরাজের সপ্তম উইকেটে জুটির রান ছিল ৬৬। এরপর শরিফুলকে সাথে নিয়ে মুমিনুল জুটি গড়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু বিরতি শেষে ফেরার খানিক পরই ইনিংসের ৪৬তম ওভারে কাসুন রাজিথার জোড়া শিকারে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন শরিফুল ও খালেদ। শরিফুলের বিদায়ে মুমিনুলের সাথে তার ৪৭ রানের ভালো এক জুটি ভাঙে। এদিন ৪২ বল খেলে ১২ রান করে আউট হন শরিফুল। এরপর উইকেটে এসে গোল্ডেন ডাকের দেখা পান খালেদ। শেষ উইকেটে ১৮ রানের জুটি গড়ে দলের হারের ব্যবধান কমান মুমিনুল ও নাহিদ রানা।
শেষ পর্যন্ত ৪৯.২ ওভারে ১৮২ রানে অলআউট হয়। মুমিনুল হক সেঞ্চুরি মিস করেন সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে। ক্যারিয়ারের ১৭তম টেস্ট ফিফটি হাঁকিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় মুমিনুলকে। ১৪৮ বলে ১২ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ৮৭ রানের লড়াকু ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন মুমিনুল। ৫১১ রানের বিশাল লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে চার জন মাত্র দুই অঙ্কের রানের কোটা স্পর্শ করতে পেরেছেন। পাঁচ জন ব্যাটারই ডাক মেরেছেন।
কাসুন রাজিথা ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় বার ৫ উইকেট পেয়েছেন। তবে ৫৬ রানে ৫ উইকেট ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগারের দেখা পেয়েছেন। বিশ্ব ফার্নান্দো ৩টি ও লাহিরু কুমারা ২টি উইকেট লাভ করেন।
এর আগে প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার ২৮০ রানের জবাবে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় ১৮৮ রানে। ৯২ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলঙ্কা থামে ৪১৮ রানে। চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশ দল শেষ পর্যন্ত অলআউট হয় ১৮২ রানে। স্বাগতিকদের দেখতে হয় ৩২৮ রানের বিশাল হার।
Discussion about this post