মেলবোর্নে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে পাকিস্তানকে হারালো ভারত

0
90

স্পোর্টস ডেস্কঃ কখনো এক দল এগিয়ে তো, কখনো আবার অন্য দল। কখনো ব্যাটিং বিপর্যয়ে, কখনো আবার ঘুরে দাঁড়ানো। কী ছিল না মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) ভারত-পাকিস্তানের ধ্রুপদী লড়াইয়ে! রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচের একেবারে শেষ ওভারে গিয়ে নাটকীয় এক জয় পেয়েছে ভারত। রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে পাকিস্তানকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। নখ কামড়ানো ম্যাচে ৮২ রানের ইনিংস খেলে সামনে থেকে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন বিরাট কোহলি।

শুরুর বিপর্যয় সামলে দারুণভাবে ঘূরে দাঁড়ানোর ম্যাচের শেষ ওভারে ভারতের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। মোহাম্মদ নওয়াজের করা ওভারের প্রথম বলেই আউট হার্দিক পান্ডিয়া। দ্বিতীয় বলে ১ ও তৃতীয় বলে ২ রান। ম্যাচে পুরো হেলে গিয়েছিল পাকিস্তানের দিকে। কিন্তু চতুর্থ বলে গিয়েই বিরাট কোহলির ছক্কা। কিন্তু এ কী, নো বল। আর সাথে সাথেই ম্যাচ হেলে গেল ভারতের দিকে।

পরের বল নওয়াজ করলেন ওয়াইড। এরপরের বলে ভারত নিল ৩ রান। নিশ্চিত জয়ের পথে ভারত। শেষ দুই বলে প্রয়োজন মাত্র দুই রান। কিন্তু এবার স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়ে ফিরে গেলেন দীনেশ কার্তিক। উত্তেজনার পারদ তখন তুঙ্গে। ইনিংসের একেবারে শেষ বলে ২ রান প্রয়োজন, ১ রান করলেই ড্র। কিন্তু ভুল করে বসলেন নওয়াজ। উইকেটের আশায় দিয়ে বসলেন ওয়াইড।

আত্মঘাতি এই বলে ম্যাচের সমীকরণ তখন একেবারেই ভারতের দিকে। শেষ বলে যখন এক রান প্রয়োজন জয়ের জন্য, তখন সব ফিল্ডার সামনে নিয়ে আসেন বাবর আজম। তবে লং অফে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ৯০ হাজারেরও বেশি দর্শককে সাক্ষী রেখে পাকিস্তানকে ৪ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করলো ভারত।

অথচ ইনিংসের শুরুটা ছিল বিভিষীকাময়। ১৬০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে হারিস রউফ, নাসিম শাহদের আগুনে পেসের সামনে দাঁড়াতে পারছিল ভারতের ব্যাটাররা। পাওয়ার প্লে’তে শুরুটা বাজে হয়েছিল মেন ইন ব্লু’দের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে ৮ বলে ৪ রান করা লোকেশ রাহুলকে বোল্ড আউট করেন নাসিম শাহ। দলীয় ৭ রানে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ১০ রানের মাথায় ফেরেন আরেক ওপেনার রোহিত শর্মা। তিনি করেন ৭ বলে ৪ রান।

পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে তৃতীয় বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন দারুণ শুরু পাওয়া সূর্যকুমার যাদব। ১০ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১৫ রান করেন এই ডানহাতি ক্রিকেটার। রোহিত ও সূর্যকুমার, দুজনকেই ফিরিয়েছেন হারিস রউফ। ৩১ রানেই নেই ৪ উইকেট, শুরুর সেই বিপর্যয় সামলে পঞ্চম উইকেটে হার্দিক পান্ডিয়া ও বিরাট কোহলি গড়ে তুলেন ১১৩ রানের দুর্দান্ত জুটি। আর ৭৮ বলের সেই জুটি গিয়ে ভাঙে একেবারে শেষ ওভারের প্রথম বলে হার্দিকের বিদায়।

প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ৩৭ বলে ১ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ৪০ রান করেন হার্দিক। তবে ম্যাচ শেষ করেই মাঠ ছাড়েন কোহলি। ৫৩ বলে ৬ বাউন্ডারি ও ৪ ছক্কায় ক্যারিয়ারের ৩৪তম আন্তর্জাতিক ফিফটি হাঁকিয়ে অপরাজিত থাকেন ৮২ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলে। দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন এই তারকা।

পাকিস্তানের হয়ে ২টি করে উইকেট লাভ করেন হারিস ও নওয়াজ। নাসিম ১টি উইকেট লাভ করেন।

এর আগে এমসিজিতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রানের পুঁজি পায় পাকিস্তান। শুরুটা ভালো হয়নি দলটির। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন অধিনায়ক বাবর আজম। দলীয় ১৫ রানের মাথায় ফিরেন আরেক ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান। দলের দুই ভরসাকে হারিয়ে বেশ বিপদে পড়েছিল পাক শিবির।

পরবর্তীতে ৭৬ রানের জুটি গড়ে দলকে ভরসা এনে দেন শান মাসুদ ও ইফতেখার আহমেদ। ৩৪ বল খেলে ২ বাউন্ডারি ও ৪ ছক্কায় ৫১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ইফতেখার ফিরলে, ভাঙে সেই জুটি। এরপর মিডল অর্ডারে শাদাব-হায়দার-নওয়াজ-আসিফরা ভরসা হতে পারেননি। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকেন শান মাসুদ।

অষ্টম উইকেটে শাহীন আফ্রিদি খানিকটা সঙ্গ দেন। শেষ পর্যন্ত ১৫৯ রানের পুঁজি পায় পাকিস্তান। ৪২ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৫২ রান করে অপরাজিত থাকেন শান। এছাড়া ৮ বলে ১টি করে চার ও ছক্কার মারে ১৬ রান করেন শাহীন আফ্রিদি।

ভারতের হয়ে ৪ ওভারে ৩০ রান খরচায় ৩ উইকেট শিকার করেন হার্দিক পান্ডিয়া। ৩২ রান খরচায় ৩ উইকেট লাভ করেন অর্শদীপ সিং। ভুবনেশ্বর কুমার ও মোহাম্মদ শামি ১টি করে উইকেট লাভ করেন।

এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/সা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here