মেয়েদেরকে নিয়ে দুই উপজেলার টানাটানি, হলো না পুরস্কার বিতরণ

    0
    111

    শামসুল হক মিলাদ: বেলা ২টায় সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে বঙ্গমাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্ণামেন্টের ফাইনাল অনুষ্টিত হওয়ার কথা। কিন্তুু এর আগেই দেখা দিলো গন্ডগোল।

    ফাইনালের দুই প্রতিপক্ষ সিলেট সদর ও জৈন্তাপুর উপজেলার মধ্যে খেলোয়াড় নিয়ে সৃষ্টি হলো জঠীলতা। সিলেট সদর উপজেলা চ্যাম্পিয়ন সৈয়দ আরজুমান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঁচ জন খেলোয়াড়কে জৈন্তাপুর তাদের উপজেলার খেলোয়াড় দাবি করে বসে।

    পাঁচ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে তিন জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন, বাসন্তি, ফারজানা, মারজান।

    এনিয়ে মাঠে নামতে অস্বীকৃতি জানায় দু’দলই। উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে বিরাজ করতে থাকে উত্তেজনা। খবর পেয়ে মাঠে ছুটে যান সিলেটের জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন, সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, ইউপি চেয়ারম্যান এখলাছুর রহমান।

    টুর্ণামেন্টের আয়োজকসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা বৈঠকে বসেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় খেলা হবে। যে পাঁচ জন মেয়েকে নিয়ে অভিযোগ উঠেছে তারা খেলবে সদর চ্যাম্পিয়ন স্কুলের হয়ে। এনিয়ে পরবর্তীতে তদন্ত হবে, তদন্তে দোষী স্কুলের জয় পরাজয় কেটে নেওয়া হবে।

    জৈন্তাপুর উপজেলা চ্যাম্পিয়ন আসামপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হলে বাতিল হবে সৈয়দ আরজুমান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আর অভিযোগ প্রমানিত না হলে বাতিল হবে জৈন্তাপুর স্কুল।

    মাঠের খেলা হয়ে গেলেও তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত জয়-পরাজয় চূড়ান্ত নির্ধারিত হচ্ছে না। এজন্য খেলা শেষে খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত পুরস্কার বিতরণ করা হলেও মূল পুরস্কার চ্যাম্পিয়ন, রানার্সআপ ট্রফি বিতরণ করা হয়নি। তদন্তের পরই বিজিত দল পাবে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি। সংশ্লিষ্ট সূত্র এসএনপিস্পোর্টসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
    এবার মাঠে নামে

    সদরের স্কুলটি জৈন্তাপুর উপজেলার পাঁচ জন মেয়েকে খেলাচ্ছে অভিযোগ করেন জৈন্তাপুর স্কুল দলের কর্মকর্তরা।

    পাল্টা অভিযোগ করেছেন সদর চ্যাম্পিয়ন দলটির কর্মকর্তারা। তারা জানান, জৈন্তাপুর গত বছর এসব খেলোয়াড়দের ধার নিয়ে ছিলো। এরা সদরের খেলোয়াড়।

    জৈন্তাপুর আসামপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দলের কর্মকর্তা শফিক বলেন, আঞ্জুমানে স্কুল আমাদের উপজেলার পাঁচ মেয়েকে খেলাতে চাচ্ছে। তাদের খেলোয়াড় বাসন্তি, ফারজানা, মারাজান সহ আরো ২ জন খেলোয়াড় আমাদের জৈন্তাপুরের মেয়ে। এরা এই স্কুলটির খেলোয়াড় নয়। আমরা তা মানিনি।

    তিনি বলেন, খেলা হলেও পুরস্কার বিতরণ করা হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করা হবে। আমাদের অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমরা বিজযী হব।

    পাল্টা অভিযোগ করছে আঞ্জমন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দলটির কোচ মাসুক উদ্দিন জানান, এরা সবাই সদরের খেলোয়াড়।

    তবে নানা দেন দরবার শেষে হওয়া খেলায় জৈন্তাপুরের আসামপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ৩-১ গোলে হারিয়ে ‘আপাতদ’ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সিলেট সদর উপজেলার সৈয়দ আরজুমান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

    নির্ধারিত সময় বেলা ২ টার ঘন্টা তিনেক পর অনুষ্ঠিত ম্যাচে আসামপারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় জৈন্তাপুরকে ৩-১ গোলের বড় ব্যাবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ান হওয়ার গৌরব অর্জন করে।

    খেলা শুরু হয় বিকাল ৪:৪০ মিনিটে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এবং সিলেট জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে ম্যাচ মাঠে গড়ায়।

    খেলা শুরুর প্রথম মিনিটেই গোল খেয়ে বসে জৈন্তাপুর উপজেলা চ্যাম্পিয়ান দল। এক গোল হজম করে কিছু বুঝে ওঠার আগেই দ্বিতীয় মিনিটে আবারো তাদের জালে বল জড়ায়।

    সাদিয়ার নৈপুণ্যেই মূলত ২-০ গোলে এগিয়ে যায় সিলেট সদর চ্যাম্পিয়ন সৈয়দ আরজুমান অালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।

    প্রথমার্ধ শেষ হবার পূর্ব মূর্হতে আবারো গোল পেয়ে যায় সদর এবারের স্কোরার টুকিলা।

    ৩-০ গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতীতে যায় আসামপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিরতি থেকে ফিরে জৈন্তার মেসি খ্যাত মণির আক্রমণ থেকে গোল পায় আসামপাড়া।

    খেলার বাকি সময়ে উভয় দল আর কোন গোল করতে না পারায় ৩-১ গোলের স্পষ্ট ব্যাবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সিলেট সদরের সৈয়দ আরজুমান অালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।

    এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/০০

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here