যার কাছে জায়গা হারিয়েছেন, সেই এবাদতকেই স্যালুট রাহী-খালেদের

0
1

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, ক্রিকেটে এমন প্রবাদ সর্বত্রই স্বীকৃত! যার প্রমাণ মিললো আরও একবার। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ৮ উইকেটের সেই জয় বাংলার ক্রিকেটকে অনেকটা উঁচুতে নিয়ে গেছে। মাঠে ১১ জন খেলে সেই জয় ছিনিয়ে আনলেও, এর পাশে ছিল দেশের কোটি ক্রিকেটপ্রেমীরই সমর্থন ও শুভকামনা।

আর যারা পেছনে থেকে এই জয়ে অবদান রেখেছেন তারা হলেন, সাপোর্ট স্টাফে থাকা সকল সদস্য। তবে যাদেরকে কখনোই প্রশংসায় ভাসানো হবে না, তারা হলেন স্কোয়াডে থাকা ১১ জনের বাইরে অতিরিক্ত ক্রিকেটাররা। না খেললেও, দলের এই ইতিহাস গড়া সাফল্যে অবদান আছে তাদেরও।

আর তাইতো বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে, সেই বাংলার সাফল্যে উচ্ছ্বাসে ভাসছেন একাদশের বাইরে থাকা ক্রিকেটাররা। নিজের খেলার চেয়ে দলের জয়টাই মূখ্য বিষয়। আবু জায়েদ রাহী ও সৈয়দ খালেদ আহমেদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টের সেটারই প্রকাশ পেল।

যেই এবাদত হোসেনের কাছে জায়গা হারিয়েছেন একাদশে, ম্যাচের পর সেই ক্রিকেটারকে স্যালুট জানিয়েছেন রাহী ও খালেদ। সেই স্যালুটের ছবি প্রকাশ করেছেন নিজেদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা তিন জনই সিলেটের সন্তান। একসাথে খেলেছেন অনেকদিন। জাতীয় দলেও একসাথে আছেন।

বাংলাদেশের বিজয়ের দিনে তিন জনই একত্রিত হলেন, তবে একটু ভিন্নভাবে। যেখানে এবাদত প্রতিপক্ষের উইকেট তুলে নিয়েই জানান স্যালুট, সেই এবাদতকেই স্যালুট দিলেন তারই দুই সতীর্থ রাহী-খালেদ। সতীর্থের পারফর্মেন্সে, নিজেদের একাদশে জায়গা না পাবার আক্ষেপকে শেষ বিলিয়ে দিয়েছেন খুশিতে। সতীর্থের উচ্ছ্বাসে নিজেরাও উচ্ছ্বসিত রাহী-খালেদরা। কেননা দিন শেষেই দলের ভালো করাটাই আসল বিষয়। অবশ্য শুধুমাত্র এই দু’জনই নয়, পুরো দলই আজ স্যালুট জানিয়েছে এবাদতকে। স্যালুট জানাচ্ছে পুরো বাংলাদেশই।কেননা দ্বিতীয় ইনিংসে তার পেসেই যে কুপোকাত হয়েছে ব্ল্যাকক্যাপসরা। এই পেসারের আগুনে বোলিংয়েই কিউইদেরকে তাদেরই ঘরের মাঠে স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে টাইগাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে ২১ ওভার বল করে ৬ মেইডেনে ৪৬ রান খরচায় শিকার করেন ৬ উইকেট। যেটি তার নিজের ক্যারিয়ার সেরা ফিগার তো বটেই, সঙ্গে গড়েছেন নতুন রেকর্ডও।

দীর্ঘ ৯ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়েছেন এবাদত। ৪৭ টেস্ট পর বাংলাদেশের কোনো পেসার হিসেবে ক্রিকেটের মর্যাদাপূর্ণ এই ফরম্যাটে ৫ উইকেট শিকার করলেন তিনি। এর বাইরে তার ৪৬ রান খরচায় ৬ উইকেট শিকার, দেশের বাইরে বাংলাদেশি কোনো পেসারের সেরা বোলিং ফিগার। আর দেশের মাঠ কিংবা বিদেশের মাঠ সব মিলিয়ে পেসারদের মধ্যে দ্বিতীয় সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড এটি।

আরেকটি বিষয়, যেটা হয়তো রেকর্ডের খাতায় থাকবে কিন্তু শুনলেই তৃপ্তি দেবে যেকোনো ক্রিকেটপ্রেমীরই। সেটা হলো, নিউজিল্যান্ডের মতো কন্ডিশনে বাংলাদেশি পেসার এমন দুর্দান্ত বোলিং ও দুর্দান্ত সব স্পেল, টিম সাউদি-ট্রেন্ট বোল্ট-নেইল ওয়াগনার-কাইল জেমিইসনদেরর মতো বিশ্ব মানের পেস অ্যাটাককে ছাপিয়ে নিজেকে সেরা প্রমাণ করেছেন এবাদত।

অথচ সেই এবাদতই গেল কয়েক টেস্ট, এমনকি ম্যাচের প্রথম ইনিংসেরও নির্বিকার ছিলেন। যা নিয়ে বেশ সমালোচনাও হয়েছিল। একাদশে কেন সবকিছু বিবেচনায় এগিয়ে থাকা রাহীকে কেন একাদশে নেওয়া হলো না, সেই নিয়ে উঠেছিল প্রশ্ন। তবে এবাদত যেনো অপেক্ষা করছিলেন সব সমালোচনার জবাব দেওয়ার। সুযোগটাও পেলেন বড় মঞ্চে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষেই করলেন বিধ্বংসী বোলিং। যে লাইন-লেন্থ নিয়ে ছিল সবচেয়ে বেশি সমালোচনা, সেটাকে শুধরেই প্রমাণ করেছেন নিজেকে। আর এতে বাংলাদেশও পেয়েছে সাফল্যের দেখা।

এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/সা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here