লঙ্কান রান পাহাড়ে চাপা পড়লো বাবর আজমের পাকিস্তান

    0
    14

    স্পোর্টস ডেস্ক:: শেষ পর্যন্ত সিরিজ জয় হলো না পাকিস্তানের। লঙ্কান রান পাহাড়ে চাপা পড়ে বাবর আজমের দল গুটিয়ে গেছে মাত্র ২৬১ রানে। ৫০৮ রানের বিশাল টার্গেট টপকাতে যাওয়া পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপকে ধ্বসিয়ে দেন স্বাগতিক বোলাররা। ২৪৬ রানের বড় জয়ে সিরিজ সমতায় ফিরলো শ্রীলঙ্কা।

    গলে নিজেদের প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কা অলআউট হয় ৩৭৮ রানে। জবাবে খেলতে নামা পাকিস্তান নিজেদের প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় ২৩১ রানে। বড় লিড নিয়ে খেলতে নামা শ্রীলঙ্কা নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস ডিক্লেয়ার করে ৮ উইকেটে ৩৬০ রানে। তাতেই চতুর্থ ইনিংসে পাকিস্তানের টার্গেট দাঁড়ায় ৫০৮ রান। বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নামা পাকিস্তান শেষ দিনে গুটিয়ে যায় ২৬১ রানে। তাতেই ২৪৬ রানের বড় জয়ে সিরিজ সমতায় আসে শ্রীলঙ্কা।

    স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ টেস্ট জিততে হলে শেষ দিনে ‘রেকর্ড’ গড়তে হতোপাকিস্তানকে। বড় লক্ষ্যে খেলতে নামা বাবর আজমের দল দ্রুত রান তোলায় মনযোগী হয়। ওয়ানডে স্টাইলে রান তুলতে থাকে দলটি। তবে শেষের দিকে একটি উইকেট হারিয়ে কিছুটা ধীরগতিতে রান তুলে। শেষ বেলা আর উইকেট হারাতে চায়নি দলটি। চতুর্থ দিন শেষে তাই পাকিস্তানের সংগ্রহ ছিলো ২৮ ওভারে এক উইকেটের বিনিময়ে ৮৯ রান।

    ৪১৯ রানে পিছিয়ে থেকে পঞ্চম দিনে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তান দ্রুতই গুটিয়ে যায়। হাতে থাকা ৯ উইকেট নিয়ে ১৭২ রান যোগ করতেই আজ শেষ দিনে দলটি অলআউট হয়ে যায় ৭৭ ওভারে ২৬১ রানে। ৫০৮ রানের বড় টার্গেটে খেলতে নামা পাকিস্তানের দুই ওপেনার শফিক ও ইমাম দ্রুত রান তুলতে থাকেন। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান আবদুল্লা শফিকী দলীয় ৪২ রানে সাজঘরে ফিরে গেলে ভেঙে যায় তাদের জুটি। ৫১ বলে ১৬ রান করেছেন তিনি। দ্বিতীয় জুটিতে ইমাম অধিনায়ক বাবরকে নিয়ে গড়ার চেষ্টা করেন। আগের দিন ৪৭ রানে অপরাজিত থাকা তাদের জুটিটি আজ সকালে থেমে যায় ৫৫ রানেই। দলীয় ৯৭ রানেই ফিরে যান ওপেনার ইমাম উল হক। এক রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি করতে পারেননি তিনি। ৪৯ রানে ফিরেন সাজঘরে।

    এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে সফরকারীরা। ব্যাট হাতে এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াইয়ের চেষ্টা করেন অধিনায়ক বাবর আজম। বিপর্যয়ে দাঁড়িয়ে তিনি ৮১ রানের ঝলমলে এক ইনিংস খেলেন। ইনিংসের ৬৬তম ওভারের তৃতীয় বলে দলীয় ২০৫ রানে ষষ্ট উইকেটে  বাবর ফিরে গেলে পাকিস্তানের জয়ের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়। ছয় চার ও এক ছয়ে ১৪৬ বলে নিজের ইনিংসটি সাজান তিনি। এছাড়াও ২৭ রান করেন ইয়াসির শাহ। ১৮ রান আসে নাঈম শাহর ব্যাট থেকে।

    শ্রীলঙ্কার হয়ে আগের ইনিংসে দারুণ বল করা প্রবাথ জয়াসুরিয়া শিকার ৫টি ও রমেশ মেন্ডিস ৪টি করে উইকেট লাভ করেন।

    এর আগে চতুর্থ দিনে ৮ উইকেটে ৩৬০ রানে ইনিংস ডিক্লেয়ার করে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। তাতে পাকিস্তানের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ৫০৮ রান। ৫ উইকেটে ১৭৬ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করা লঙ্কানরা এদিন দ্রুত রান তুলে ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দেয়। আগের দিন ৩০ রান নিয়ে অপরাজিত থাকা লঙ্কান ব্যাটার ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা আজ শতক হাঁকিয়েছেন। ১৭১ বলে ১০৯ রান করে রানআউট হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। ১৬টি চারে সাজিয়েছেন নিজের ইনিংসটি। ২৭ রানে অপরাজিত থাকা দিমুথ করুনারাত্মে আজ সাজঘরে ফিরেছেন ফিফি হাঁকিয়ে। ৬১ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।

    ২৭ রানে প্রথম উইকেট হারানো দলটি শতরান পেরিয়ে দলীয় ১১৭ রানে হারিয়েছে পাঁচ উইকেট। করুনারাত্মে ও ডি সিলভা ৫৯ রানে জুটি গড়ে ফেলেছেন। দিন শেষে ২৭ রানে অধিনায়ক দিমুথ করুনারাত্মে ও ৩০ রানে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা অপরাজিত আছেন। ৩৫ রান করে ফিরেছেন ম্যাথিউজ। ১৯ রান এসেছে ফার্নান্দোর ব্যাট থেকে। ১৫ রান করে এসেছে ডিকওয়েলা ও কুশল মেন্ডিসের ব্যাট থেকে। ৪৫ রানে অপরাজিত ছিলেন রমেশ মেন্ডিস। তাতেই দলটির হয়ে যায় ৮ উইকেটে ৩৬০ রান।

    পাকিস্তানের হয়ে নাসিম শাহ ২টি, মোহাম্মদ নেওয়াজ ২টি এবং আজহা সালমান, নুমা আলীরা ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।

    এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তান ৮৮.১ ওভারে মাত্র ২৩১ রান তুলতে সমর্থ হয়। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান আব্দুল্লা দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে রানের খাতা খুলতে পারেননি। অধিনায়ক বাবর আজমও দলের বিপদে ব্যাট হাতে উইকেটে থাকতে পারেননি। দলীয় ৩৫ রানে দ্বিতীয় উইকেটে ব্যক্তিগত ১৬ রানেই তিনি ফিরেছেন সাজঘরে। আজহা সালমান ছাড়া সফল হতে পারেননি কোনো ব্যাটার। ইনিংস সর্বোচ্চ ৬২ রান করে প্যাভেলিয়নে গেছেন এই ব্যাটার। ২৬ রান করেছেন ইয়াসির শাহ। ৩২ রান করেছেন ইমরান উল হক। ২৪ রান করে সংগ্রহ করেছেন ফাওয়াদ ও রিজওয়ান। ২১ রান এসেছেন হাসান আলীর ব্যাট থেকে।

    শ্রীলঙ্কার হয়ে রমেশ মেন্ডিস ৫টি ও প্রবাথ জয়াসুরিয়া ৩টি করে উইকেট লাভ করেছেন।

    এর আগে প্রথম দিন ৮৬ ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ৩১৫ রান করা শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় দিন অলআউট হয়ে ৩৭৮ রানে। নিরোশান ডিকেওয়ালা ফিফটি পূরণ করে ফিরেছেন ৫১ রানে। রমেশ মেন্ডিস করেছেন ৩৫ রান। এর আগে ৮০ রান করেন দীনেশ চান্দিমাল, ৫০ রান করেন ওশাদা ফার্নান্দো, ৪২ রান করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, ৪০ রান করেন দিমূথ করুনারাত্মে।

    পাকিস্তানের হয়ে ইয়াসির শাহ ও নাসিম শাহ ৩টি করে করে উইকেট লাভ করেন।

    এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here