নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বিশ্বকাপের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ভারত। নিউজিল্যান্ডকে আজ সেমিফাইনালে ৭০ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে রোহিত শর্মার দল। মুম্বাইয়ে আগে ব্যাট ৩৯৭ রানের পাহাড় গড়ে ভারত। রান তাড়ায় মোহাম্মদ শামির বোলিং তোপে ৩২৭ রানে থামে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস।
৭ উইকেট নিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন শামি। বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে সেরা বোলিং ডানহাতি এই পেসারের। আগের সেরা ছিল গ্যারি গিলমোরের ১৪ রানে ৬ উইকেট (১৯৭৫)। এদিকে এক যুগ পর বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল ভারত। ঘরের মাঠে ২০১১ সালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আবারও একই হাতছানির সামনে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা।
সব মিলিয়ে চতুর্থ ফাইনালের সামনে এখন ভারত। ১৯৮৩ সালের আসরে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ২০০৩ সালে রানার্স-আপ হয় তারা। পরে ২০১১ সালে ফের বিশ্বকাপ জেতে তারা। আগামী রোববার তৃতীয় শিরোপার লড়াইয়ে নামবে রোহিতের দল। এর আগে টানা ১০ ম্যাচ জয় তাদের। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে আসর শুরু করা দলটির শিরোপার জন্য দরকার আর একটি জয়!
আগামী ১৯ নভেম্বর আহমেদাবাদের ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ ঠিক হবে আগামীকাল। কলকাতায় দ্বিতীয় সেমিফাইনালে যেখানে মুখোমুখি হবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া। এদিকে আজ সেমিতে ভারতের রান পাহাড় টপকাতে গিয়ে শুরুতেই ডেভন কনওয়ে এবং রাচিন রবীন্দ্রকে হারিয়ে ফেলার পর কেন উইলিয়ামসন আর ড্যারেল মিচেলের ব্যাটে লড়ে নিউজিল্যান্ড। ১৮১ রানের জুটি গড়ার পর আবারও শামির জোড়া আঘাত। তাতে তিন বলের মধ্যে নেই উইলিয়ামসন ও ল্যাথাম।
৭৩ বলে ৬৯ রান করেন উইলিয়ামসন। তার ঠিক এক বল পরেই সহ-অধিনায়ক টম ল্যাথামকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন শামি। রানের খাতা খোলার আগেই ফেরার পথ ধরেন ল্যাথাম। ২২০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় কিউইরা। এরপর মিচেল ও ফিলিপসের ৭৫ রানের জুটিতে স্বপ্ন বুনেই চলছিল তাসমান সাগরপাড়ের দেশটি। বুমরার বলে ৪১ রানে ফিলিপস আউট হলে তাতে ছেদ পড়ে। আর শেষ পেরেকটা ঠোকা হয়ে যায় ড্যারিল মিচেলের উইকেটে। ১১৯ বলে ৯ চার ও ৭ ছয়ে ১৩৪ রান করে তবেই ফেরেন মিচেল। শেষ পর্যন্ত ৭ বল বাকি থাকতেই ৩২৭ রানে অলআউট হয় কিউইরা।
এর আগে বিরাট কোহলি ও শ্রেয়াস আয়ারের জোড়া সেঞ্চুরিতে ৪ উইকেটে ৩৯৭ রানের পাহাড় গড়ে ভারত। দুই ওপেনার রোহিত শর্মা এবং শুভমান গিল মিলে ৮.২ ওভারে ৭১ রানের ঝোড়ো জুটি গড়ে বিচ্ছিন্ন হন। ২৯ বলে ৪৭ রান করে আউট হন রোহিত শর্মা। টিম সাউদির বলে উইলিয়ামসনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। ২৯ বলে সমান চারটি করে ছক্কা এবং বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। রোহিত আউট হলেও ঝোড়ো ব্যাটিং চালিয়ে যান শুভমান গিল এবং বিরাট কোহলি। ১৫ ওভারেই স্কোরবোর্ডে তারা তুলে ফেলে ১১৮ রান। ২৩তম ওভারে দলীয় ১৬৪ রানের মাথায় রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফেরেন গিল।
গিল মাঠ ছাড়ার পর নতুন ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে আসেন শ্রেয়াস আয়ার। নিউজিল্যান্ডের বোলারদের বিপদ যেন আরও বাড়ে। আয়ার আরও বেশি মারমুখী ব্যাটিং করতে থাকেন। ৩৫ বলেই ফিফটি পূরণ করেন ডানহাতি এই ব্যাটার। বিরাট কোহলি দেখেশুনে খেলে ক্যারিয়ারের ৫০তম সেঞ্চুরি তুলে নেন। ছাড়িয়ে যান স্বদেশি কিংবদন্তি শচিন টেন্ডুলকারকে। ওয়ানডে ইতিহাসে ৫০টি সেঞ্চুরি করা প্রথম ব্যাটার হন কোহলি। তৃতীয় উইকেটে ১২৮ বলে ১৬৩ রান যোগ করেন কোহলি আর আয়ার। অবশেষে টিম সাউদি ভাঙেন এই জুটি।
১১৩ বলে ৯ চার আর ২ ছক্কায় ১১৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন কোহলি। এরপর সেঞ্চুরি হাঁকান মারমুখী আয়ারও। ৬৭ বলে তিনি ছুঁয়েছেন তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার। অবশেষে ইনিংসের ৭ বল বাকি থাকতে ট্রেন্ট বোল্ডের শিকার হন আয়ার। ৭০ বলে ১০৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে ৪টি চারের সঙ্গে তিনি হাঁকান ৮টি ছক্কা!সূর্যকুমার যাদব শেষদিকে নেমে সুবিধা করতে পারেননি। ২ বলে ১ করে সাজঘরে ফিরে যান এই ব্যাটার। তবে লোকেশ রাহুল ২০ বলে ৩৯ রান করে দলকে চারশর কাছাকাছি নিয়ে যান। ৭৯ রানে উঠে যাওয়া শুভমান গিল শেষ ওভারে নামলেও মাত্র এক বল খেলার সুযোগ পান, ৮০ রানে থাকেন অপরাজিত। নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদি ১০০ রান খরচায় নেন ৩টি উইকেট।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/১১০
Discussion about this post