নিজস্ব প্রতিবেদক:: সাফ জয়ী বাংলাদেশ নারী দলকে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নগদ এক কোটি টাকা আর্থিক পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছে। বুধবার স্বাগতিক নেপালকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার সাফ চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ নারী দল। কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে স্বাগতিক নেপালকে ২–১ গোলে হারায়। বৃহস্পতিবার কাঠমান্ডু থেকে ঢাকায় ফেরা সাফজয়ী দলটি বাফুফে ভবনে পৌঁছালে সেখানে অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের হাতে পুরস্কারের ডামি চেক তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
এ সময় উপদেষ্টা জানান, শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর বাসভবন যমুনায় সাফজয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে সংবর্ধনা দেবেন।স্বাগতিক নেপালকে হারিয়ে বৃহস্পতিবার ঢাকায় ফিরেছে বাংলাদেশ সাফ জয়ী দল। চ্যাম্পিয়ন মেয়েদেরকে ছাদখোলা বাসে করে নিয়ে যাওয়া হয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে। সেখানে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বরণ করেন চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের।
বাফুফে ভবনে ডামি চেক হস্তান্তরকালে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শনিবারই যমুনায় মেয়েদের সংবর্ধনা দেবেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইটে নেপাল থেকে ঢাকায় আসে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দল। টানা দ্বিতীয়বার শিরোপা নিয়ে ঢাকায় পা রাখে লাল সবুজের মেয়েরা। দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় মেয়েদের দল।
বিমানবন্দরে বাফুফের শীর্ষ কর্তারা ফুলেল ভালোবাসায় সিক্ত করেন মেয়েদের। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মেয়েদেরকে তুলা হয় ছাদখোলা বাসে। ২০২২ সালে প্রথমবার সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়া মেয়েরাও ছাদখোলা বাসে ঢাকা ভ্রমণ করে পৌঁছে ছিলো হোম অব ফুটবলে। এবারো বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন সাফ জয়ী মেয়েদের জন্য প্রস্তুুত রাখে ছাদখোলা বাস।
বিআরটিসির একটি বাসকে বিশেষ ব্যবস্থায় সাজিয়ে তোলা হয় ছাদখোলা করে। সেই বাসে উঠেন বাংলার জয়ী মেয়েরা। ট্রফি হাতে উচ্ছ্বাস করে ঢাকার রাস্তা ঘুরেন তারা। মেয়েদের দলটি যাবে বাফুফে ভভেন। দর্শকে পরিপূর্ণ স্টেডিয়ামে দুই দলের ফাইনাল ম্যাচটি হয়েছে টান টান উত্তেজনায়। দারুণ খেলা দুই দল প্রথমার্ধ ব্যবধান গড়তে পারেনি। আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের প্রথমার্ধ শেষ হয় গোল শুন্য সমতায়। দ্বিতীয়ার্ধেই আসে ম্যাচের তিনটি গোল। দু’টি বাংলাদেশের, একটি নেপালের।
ম্যাচের শুরুতেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিলো।তহুরা সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে। মিনিট দশেক পরেই নেপাল ভয় ধরিয়ে দিয়ে ছিলো। আমিশা কার্কির শট পোস্টে লাগলে গোলবঞ্চিত হয় স্বাগতিক মেয়েরা। ম্যাচের ২৭তম মিনিটে আবারো গোলের সম্ভাবনা তৈরি করেছিলো নেপাল। তবে এবারো পারেনি। বাংলাদেশও প্রথমার্ধে আর সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। গোল শুন্য সমতায় ম্যাচ রেখে বিরতিতে যায় দুই দল।
বিরতির পরপরই বাংলাদেশ লিড নেয়।৫২তম মিনিটে মনিকা চাকমার গোলে বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ১-০ ব্যবধানে। তবে এই লিড বেশি সময় ধরে রাখতে পারেনি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। ম্যাচের ৫৬তম মিনিটেই স্বাগতিক মেয়েরা সমতায় ফেরে। গোল করেন নেপালের আমিশা কারকি।
শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটিতে বাংলাদেশ আবারো লিডের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। ঋতুপর্না চাকমাদের আক্রমণ বারবার ঠেকিয়ে দিচ্ছিলো নেপাল। তবে দমে যায়নি বাঘিনীরা। একাধিক আক্রমণ করতেই থাকে। ম্যাচের ৮১তম মিনিটে কাঙ্খিত গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। ঋতুপর্না বাম দিক দিয়ে ঢুকে দুর্দান্ত এক শট নেন। যে শট হাতে লাগিয়েও থামাতে পারেননি নেপালের গোলরক্ষক। বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ২-১ ব্যবধানে।
পিছিয়ে পড়া নেপালি মেয়েরা গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেন। তবে দুর্দান্ত বাংলাদেশের রক্ষণে তারা আর চিড় ধরাতে পারেননি। বাংলাদেশ টানা দ্বিতীয়বার শিরোপা নিয়ে মাঠ ছাড়ে। ২-১ ব্যবধানে হেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন নেপালের মেয়েরা। শিরোপা জয়ের উচ্ছ্বাসে মেতে উঠে বাংলার মেয়েরা।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০