নিজস্ব প্রতিবেদকঃ টানা ব্যর্থতায় রেলিগেশনের শঙ্কা থেকে এবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) হ্যাটট্রিক জয়ের দেখা পেয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। সিটি ক্লাবকে ১০১ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে আসরে টানা তিন জয়ের দেখা পেল ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি। ব্যাট হাতে ইমরুল কায়েস সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। ঝড়ো ফিফটি হাঁকিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। এরপর বল হাতে সাকিব দারুণ বোলিং করেছেন।
মোহামেডানের দেওয়া ৩৪৯ রানের বিশাল লক্ষ্যে খেলতে নেমে দলীয় ১৫ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় সিটি ক্লাব। জয়রাজ শেখকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে সাকিব আল হাসান তুলে নেন প্রথম উইকেট। এরপর ঘুরে দাঁড়ালেও, হুট করে একাধিক উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে দলটি। দলীয় একশ পূরণের আগেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে সিটি।
এরপর অধিনায়ক আসিফ মাহমুদ ও আব্দুল্লাহ আল মামুনের ব্যাটে লড়াই করলেও, জয়ের দোড়গড়ায় যেতে পারেনি সিটি ক্লাব। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৪৭ রানেই ইনিংস থেমেছে দলটির। আব্দুল্লাহ আল মামুন ৬৫ বলে ৪টি করে চার ও ছয়ের মারে সর্বোচ্চ ৭০ রান করেন লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাট করতে নেমে। এছাড়া আসিফ ৯৬ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ৫২ রান করেন। ওপেনার তৌফিক খান তুষারের ব্যাট থেকে ২৪ বলে ৫ বাউন্ডারি ও ২ ছয়ে ৩৬ রান আসে।
মোহামেডানের হয়ে ৩ উইকেট নিলেও ১০ ওভারে ৬৮ রান খরচ করেন জ্যাক লিনটট। সাকিব ১০ ওভারে এক মেইডেনসহ মাত্র ৩৬ রান দিয়ে ১ উইকেট লাভ করেন। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন নাজমুল অপু, মেহেদী মিরাজ ও সৌম্য সরকার।
এর আগে সাভারের বিকেএসপিতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৫০ ওভারে মোহামেডান ৭ উইকেট হারিয়ে ৩৪৮ রানের বিশাল সংগ্রহ পায়। ওপেনার রনি তালুকদার ফিরেন দলীয় ১৯ রানেই। ২ বাউন্ডারিতে ১১ রান করেন। টপ অর্ডারে নেমে ব্যর্থ হন আগের ম্যাচেই ফিফটি হাঁকানো সৌম্য সরকার। তিনি ২ বাউন্ডারিতে ১৩ রান করেন। তবে অধিনায়ক ওপেনার ইমরুল কায়েসের সাথে ৪৫ রানের জুটি গড়েন তিনি।
চারে নামা মেহেদী হাসান মিরাজ আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ৬ রান করেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে। আউট হয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরে ক্ষুব্ধ হতে দেখা যায় মিরাজকে। চতুর্থ আম্পায়ারের সাথে ক্ষোভ ঝাড়েন। ভিডিও ফুটেজ দেখান দলের তারকা সাকিব আল হাসান ও অন্যান্য সতীর্থদের।
এরপর চতুর্থ উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সাথে নিয়ে ১২১ রানের দারুণ জুটি গড়েন ইমরুল। যেটি কিনা বড় রানের ভিত গড়ে দেয়। ফিফটি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরির পথে থাকলেও, সেটি পূরণ করার আগেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। ৫৯ বলে ৭ বাউন্ডারি ও ৪ ছক্কায় ৭১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে যান তিনি।
পরবর্তীতে পঞ্চম উইকেটে ৭৯ রানের জুটি গড়ে দলকে বিশাল সংগ্রহের জায়গাটা পোক্ত করে দিয়ে যান। ৪৪তম ওভারে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে মাঠ ছাড়েন ইমরুল। তবে ততক্ষণে লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে নিজের ১২তম সেঞ্চুরি পূরণ করে ফেলেন। একইসাথে আসরে নিজের প্রথম সেঞ্চুরিরও দেখা পান। ১২১ বলে ১০ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় ১১৪ রানের ইনিংস খেলে মাঠ ছাড়েন ইমরুল।
এরপর উইকেটে এসে ঝড় তুলেন সাকিব। অঙ্কনের সাথে ৪৬ রানের জুটি গড়ে দলের রান তিনশ পার করেন। ফিফটি হাঁকিয়ে ৫২ বলে ২ বাউন্ডারি ও ৪ ছক্কার মারে ৬৫ রানের দারুণ ইনিংস খেলে অঙ্কন আউট হলে ভাঙে সেই জুটি। ইনিংসের শেষ দিকে ১৬ বলে ২ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ২৬ রানের ক্যামিও খেলে আউট হন সাকিব। ১টি করে ছয় ও চারে মারে ১৪ রান করে আরিফুল ও ও ১ চারের মারে ৪ রান করে অপরাজিত থাকেন জ্যাক লিনটট।
সিটি ক্লাবের হয়ে রায়ান রাফসান রহমান ৩টি ও আসিফ হাসান ২টি উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/সা