স্পোর্টস ডেস্ক: এবারের বিপিএলে আসরে সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর গড়ে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়লে মুশফিকুর রহিমের বরিশাল বুলস। বিপিএলে ইতিহাসে বাংলাদেশী সাব্বির রহমানের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসেও হার এড়াতে পারলো না রাজশী কিংস।
রোববার মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে বরিশাল বুলসের দেওয়া ১৯২ রানের জবাবে নির্ধারিত ওভারে ৬ উইকেটে ১৮৮ রান করতে সমর্থ হয় রাজশাহী।
মুশফিকুর রহিমের বরিশাল বুলসের বিপক্ষে ১৯৩ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে সাব্বির রহমানের দুর্দান্ত শতকে জয়ের কাছে গিয়েও ৪ রানে হেরেছে রাজশাহী কিংস। শতক হাঁকিয়েও শেষ দিকের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় দলকে জেতাতে পারেননি সাব্বির। এদিন সাব্বির বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ১২২ রান করেন। ৬২ বলে তার নান্দনিক ইনিংসে ছিলো ৯ চার ও সমান সংখ্যক ছয়ে সাজানো।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে বরিশাল বুলসের মুশফিক ৫২ বলে অপরাজিত ৮১ এবং শাহরিয়ার নাফিস ৪৪ বলে ৬৩ রানে ১৯২ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে।
বরিশালের হয়ে ব্যাটিং শুরু করতে ক্রিজে আসেন দিলশান মুনাবেরা এবং ডেভিড মালান। শুরুর ওভারেই বিদায় নেন মুনাবেরা। ফরহাদ রেজার করা ইনিংসের তৃতীয় বলেই উমর আকমলের তালুবন্দি হন তিনি।
পঞ্চম ওভারে আবারো বরিশালের ব্যাটিং লাইনআপে আঘাত হানেন ফরহাদ রেজা। ফিরিয়ে দেন আরেক ওপেনার ডেভিড মালানকে। উইকেটের পেছনে সোহানের গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে তিনি ১১ বলে করেন ১৩ রান। দলীয় ২১ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় বরিশাল।
এরপর জুটি গড়েন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা শাহরিয়ার নাফিস এবং দলপতি মুশফিকুর রহিম। ম্যাচের ১৪তম ওভারে চতুর্থ বলে দলীয় শতক আসে বরিশালের। এই জুটি থেকে ৭১ বলে আসে ১১২ রান। ইনিংসের ১৬তম ওভারে বিদায় নেন নাফিস। দুর্দান্ত খেলে ৪৪ বলে চারটি চার আর চারটি ছক্কায় তিনি করেন ৬৩ রান। উইকেটের পেছনে স্যামির বলে সোহানের গ্লাভসবন্দি হন তিনি। দলীয় ১৩৩ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় বরিশাল।
মুশফিকুর রহিম রাজশাহীর বোলারদের শাসন করে অপরাজিত থাকেন ৮১ রানে। তার ৫২ বলের ঝড়ো ইনিংসে ছিল ৫টি চার আর ৪টি ছক্কার মার। শেষ দিকে মুশফিকের সঙ্গে উইকেটে থাকা থিসারা পেরেরা তিন ছক্কায় করেন ১১ বলে ২৪ রান। এ জুটি থেকে আসে ২৪ বলে ৫৯ রান।
রাজশাহীর হয়ে ফরহাদ রেজা সর্বোচ্চ ২টি উইকেট লাভ করেন।
১৯৩ রানের টার্গেটে রাজশাহীর হয়ে ব্যাটিং শুরু করেন রকিবুল হাসান এবং মুমিনুল হক। ইনিংসের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই বিদায় নেন রকিবুল। মনির হোসেনের বলে শাহরিয়ার নাফিসের তালুবন্দি হন রকিবুল। এরপর জুটি গড়েন সাব্বির-মুমিনুল। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে আল আমিন ফেরান মুমিনুলকে। দলীয় ৪৯ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় রাজশাহী। মুমিনুল ১১ বলে ১২ রান করে থিসারা পেরেরার দুর্দান্ত এক ক্যাচে ফেরেন। পরের বলেই উমর আকমলকে এলবির ফাঁদে ফেলেন আল আমিন।
এরপর জুটি গড়েন সাব্বির আর সামিত প্যাটেল। এই জুটি থেকে ৪০ বলে উঠে ৬৮ রান। ইনিংসের ১৩তম ওভারে আবু হায়দারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সামিত প্যাটেল। দলীয় ১১৭ রানের মাথায় বিদায় নেওয়ার আগে প্যাটেল ১৫ বলে ১৫ রান করেন।
ক্রিজে থেকে বরিশালের বোলারদের স্বস্তিতে থাকতে দেননি সাব্বির রহমান। মাত্র ৫৩ বলেই নিজের প্রথম বিপিএল শতক তুলে নেন তিনি। ৯টি চার আর ৯টি বিশাল ছক্কায় ১২২ রান করে বিদায় নেন সাব্বির। ইনিংসের ১৬তম ওভারের শেষ বলে আল আমিন ফেরান সাব্বিরকে। ৮৩ মিনিট ক্রিজে থেকে ৬১ বলে ইনিংসটি সাজান সাব্বির। দলীয় ১৫৯ রানে সাব্বিরের বিদায়ে রাজশাহী পঞ্চম উইকেট হারায়।
এরপর দলপতি ড্যারেন স্যামির দিকে তাকিয়ে ছিল রাজশাহী। কিন্তু, ইনিংসের ১৯তম ওভারে রায়াদ এমরিতের বলে বোল্ড হন স্যামি। ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ১৯ বলে ২৭ রান। শেষ ওভারে জয়ের জন্য রাজশাহীর দরকার হয় ৯ রান, হাতে ছিল চার উইকেট।
শেষ ওভারে বরিশালের হয়ে বল করতে আসেন থিসারা পেরেরা। এই লঙ্কানের বলে মাত্র ৪ রান নিতে পারেন আবুল হাসান এবং নুরুল হাসান সোহান।
বরিশালের হয়ে আলিন আমিন সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/বা/০০