সাব্বিরে বাংলাদেশের স্বপ্নের রাত

    0
    110

    স্পোর্টস ডেস্ক: ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয়ের খুব কাছে বাংলাদেশ। দুই উইকেটে বাংলাদেশের প্রয়োজন মাত্র ৩৩ রান। এখনো উইকেটে আছেন স্বীকৃত ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান। দিন শেষে ৯৩ বলে ৫৯ রানে অপরাজিত আছেন সাব্বির। এখানেই স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। আজ রাতটা শেষে আগামিকাল সোমবার সকালে সাব্বির আর তার সঙ্গীদের ব্যাটে বাংলাদেশ ৩৩ রান নিলেই জিতে যাবে টেস্ট। স্বপ্ন পূরণ হবে বাংলাদেশের।

    বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া টেস্টে কখনও পাল্লা ভারি হয়েছে ইংল্যান্ডের দিকে, কখনওবা বাংলাদেশ দেখেছে ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের স্বপ্ন।

    এই টেস্টের উত্তেজনা এখনো শেষ হয়নি। গড়িয়েছে শেষ দিনে। সাব্বির রহমানের বীরত্বে আট উইকেটে ২৫৩ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। সাব্বির বীরত্বে কাল সকালেই হয়তো স্বপ্নের জয় পেয়ে যাবে বাংলাদেশ।

    আর সাব্বির রহমান রণে ভঙ্গ দিলেই স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে বাংলাদেশের। স্বীকৃত ব্যাটসম্যান সাব্বির ছাড়া টেস্টের শেষ দিনে স্পিন স্বর্গ উইকেটে যে অন্য কেউ এই রান সংগ্রহ করতে পারবেন বলে মনে হয়না। অন্তত অতীত তাই বলে।

    ২৮৬ রান, চতুর্থ ইনিংসে এটা বড় টার্গেট, বিশেষ করে জহুর আহমেদ চৌধুরীর স্পিন ট্রাকে। বাংলাদেশকে কি পারবে? শুরু থেকে দিনের শেষ পর্যন্ত এই প্রশ্ন রক্তচাপ বাড়িয়ে দিয়েছে বারবার। কখনও মনে হয়েছে না, হবে না। কখনও মনে হয়েছে হ্যাঁ, হবে। তবে চূড়ান্ত ফয়সালার জন্য অপেক্ষা করতে হবে সোমবার সকাল পর্যন্ত।

    ২০০০ সালে অভিষেকের পর (চট্টগ্রাম টেস্টের আগে পর্যন্ত) সাকুল্যে সাত টেস্টে জিতেছে বাংলাদেশ।তবে একটিও বড় দলের বিপক্ষে নয়। ৫টি জিম্বাবুয়ে ও ২টি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, র্যা ঙ্কিংয়ে যারা একেবারেই নিচের সারির দল।

    বড় দলকে হারানোর সুযোগ অবশ্য বেশ ক’য়েকবারই পেয়েছিল টাইগারার। কিন্তু প্রতিবারই হেরে যেতে হয়েছে শেষ পর্যন্ত।

    প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের ২৯৩ রানের জবাবে বাংলাদশ করেছিল ২৪৮। দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ড ২৪০ রানে অল হলে বাংলাদেশের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ২৮৬। কোনো কিছুই পক্ষে ছিল না।

    টেস্টে ২৮৬ রান অনেক বড় টার্গেট,বিশেষ করে চট্টগ্রামের স্পিন স্বর্গে।অতীত অভিজ্ঞতাও ভালো নয়।২১৫ রানের বেশি তাড়া করে কখনও জেতেনি বাংলাদেশ।

    এই মনস্তাত্ত্বিক চাপ পুরো দলের উপরই ছিল।তবে তামিম ইকবালের উপর একু বেশিই হবে। উইকেটে এসে নিজেকে গুটিয়ে ফেললেন, যেটা তামিমের চরিত্রের সঙ্গে যায় না। যতবার তিনি নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন, ততবারই তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। এদিন ফিরলেন ৯ রান করে।

    ইমরুল কায়েসকে আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিলো। মনে হয়েছিল কঠিন সময়ে অনেক দূর যাবেন। খুব সহজভাবে খেলছিলেন ইংলিশ বোলারদের। ৪৩ রান করার পর আউট হয়ে গেলেন একটা বাজে শট খেলে।

    টেস্ট দলের সেরা ব্যাটসম্যান মমিনুল। তার ব্যাটিং গড় ৫০ এর উপরে। তিনি মাটি কামড়ে উইকেটে পড়ে থাকতে পারেন। যেটা দরকার ছিল এদিন। ভালো করার আভাস দিয়েও এলবি হয়ে ফিরেন ২৭ রানে। এরপর লড়াকু মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৭ রান করে আউট হয়ে গেলে দারুণ চাপে পড়ে যায় স্বাগতিকরা।

    বড় পার্টনারশিপ যদি দাঁড়িয়ে যায়। মুশফিক- সাকিব ক্রিজে। আশাও ছিল এজন্য।  কিন্তু সে আশাতে গুড়েবালি। উইকেটে ভালোমতো সেট হলেন, ছক্কা হাঁকালেন।কিন্তু সাকিব আবারও ফিরে গেলেন হতাশ করে, ২৪ রানে।

    ৫ উইকেটে ১৪০।বাগে পেয়ে এবারও বুঝি বড় দলকে হারানো যাচ্ছে না। কঠিন এ অবস্থা থেকে আবার স্বপ্ন দেখালেন অধিনায়ক মুশফিক ও সাব্বির রহমান। আস্তে আস্তে ম্যাচ নিয়ে আসেন নিজেদের অনুকূলে। কিন্তু দু:সংবাদ। গ্যারেথ ব্যাটির অসাধারণ এক বলে ক্যাচ নিয়ে ফিরতে হয় তাকে। ৩৯ রানে আউট হবার আগে সাব্বিরের সঙ্গে গড়েন ৮৭ রানের মহামূল্যবান জুটি।

    এরপর দুই ডেব্যুট্যান্ট সাব্বির ও মিরাজের দিকে তাকিয়ে দল। কিন্তু প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ মিরাজ। পরিস্থিতির চাপ নিতে না পেরে ১ রানেই ফিরেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্নটাও ফিকে হয়ে গেল। পড়ে গেছে আট উইকেট। তখনও রান বাকি ৪৮।

    উইকেটে সাব্বির আছেন বটে কিন্তু তাকে সঙ্গ দেওয়ার তো তেমন কেই নেই। তবে দারুণ বীরত্ব দেখিয়ে তাইজুল আছেন ১১ রানে অপরাজিত।

    ইংল্যান্ডের পক্ষে গ্যারেথ ব্যাটি ৩টি, মঈন আলী, ব্রড ২টি করে উইকেট নেন।

    এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/ঢাটা/০০

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here