স্পোর্টস ডেস্ক:: ভারতীয় ক্রিকেটের ঈশ্বর খ্যাত শচীন টেন্ডুলকারের উত্তরসুরী বলা হয়েছিলো তাকে। ভারতের জার্সিতে যে ভাবে মাঠ দাপিয়েছেন পরবর্তী শচীনই বলা হচ্ছিলো তাকে। সেই তিনি রঞ্জি ট্রফি থেকে বাদ পড়েন। বিজয় হাজারে ট্রফির দলেও জায়গা হয়নি। আইপিএল নিলামে থাকলেও ‘অবিক্রী’ থেকেছেন পৃথ্বী শ।
অল্প সময়ে তারকা খ্যাত পেয়ে যাওয়া এই ক্রিকেটার সব কুল হারিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এবার জানা গেলো পৃথ্বী শ’র কাণ্ড। খেলোয়াড়ী জীবনে চরম অশৃঙ্খল ছিলেন তিনি। সারা রাত পার্টি করে ভোর ৬টায় টিম হোটেলে ফিরেন। ১০ জনকে নিয়ে ফিল্ডিং করতে হয়েছে তার দলকে। পৃথ্বীর বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন মুম্বাই ক্রিকেটের এক শীর্ষ কর্তা।
বিজয় হাজারে ট্রফিতে জায়গা না পেয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে ছিলেন। এরপরই মুম্বাই ক্রিকেট এসোসিয়েশ পৃশ্বী শর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনে। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম পিটিআইকে মুম্বাইয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফি চলার সময়ে রাতে পার্টি করে পৃথ্বী টিম হোটেলে ঢুকেছে সকাল ছয়টায়। দল ফিল্ডিং করেছে ১০ জন নিয়েই। কারণ, ফিল্ডিংয়ের সময় তাঁকে রাখতে হয়েছে লুকিয়ে।’
পৃথ্বী শ’র সতীর্থরা এখন ভারতীয় ক্রিকেটে দাপট দেখাচ্ছেন। শুবমান গিলরা আলো ছড়াচ্ছেন। অথচ অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছেন ভারতীয় ক্রিকেটকে আশা দেখানো পৃথ্বী শ। আইপিএল নিলামে মাত্র ৭৫ লাখ রুপির ক্যাটাগরিতে ছিলেন। অথচ দল পাননি। এবার কারণ জানা যাচ্ছে, তাঁর ফিটনেসজনিত ও আচরণে সমস্যা।
পিটিআইয়ে নাম না প্রকাশ করার শর্তে মুম্বাই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফিতে আমাদের ১০ জন ফিল্ডার নিয়ে খেলতে হয়েছে। কারণ ওকে আমাদের লুকিয়ে রাখতে হতো। বল তার কাছ থেকেই যেত, সেই বলটি ধরার জন্যও সে চেষ্টা করত না। এমনকি ব্যাটিংয়ের সময়েও, বল পর্যন্ত পৌঁছাতে ওর কষ্ট হতো। ওর মনোভাব নিয়ে সিনিয়র ক্রিকেটাররাও অভিযোগ করেছে। পৃথ্বীর ফিটনেস, ডিসিপ্লিন ও মনোভাবেই ঘাটতি আছে, ভিন্ন ভিন্ন খেলোয়াড়ের জন্য আমরা ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম রাখব না।’
পৃথ্বী শ বিজয় হাজারে ট্রফিতে জায়গা না পেয়ে কর্মকর্তাদের সমালোচনা করে বলে ছিলেন, ‘বলুন ঈশ্বর, আর কী আমাকে দেখতে হবে। ৬৫ ইনিংসে, ৩৩৯৯ রান, গড় ৫৫.৭, স্ট্রাইকরেট ১২৬—এরপরও আমি যথেষ্ট নই! নিজের প্রতি এখনো আমার বিশ্বাস আছে, আশা করি মানুষের বিশ্বাসও আমার প্রতি আছে। কারণ, আমি নিশ্চিতভাবেই ফিরে আসব।’
এই ক্রিকেটারের অভিযোগে প্রেক্ষিতে পিটিআইকে মুম্বাইয়ের সেই কর্মকর্তা বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট মুম্বাইয়ের নির্বাচকদের ওপর প্রভাব ফেলবে না। সহমর্মিতা নয়, পৃথ্বী শর উচিত খেলায় মনোযোগ দেওয়া। একটা কথা বলি। কেউ পৃথ্বী শর শত্রু নয়, ও নিজেই ওর শত্রু।’
মুশতাক আলী ট্রফিতে মুম্বাইয়ের অধিনায়ক ছিলেন শ্রেয়াস আয়ার পৃথ্বী শ’র উপর বিরক্ত হয়ে অধিনায়ক শ্রেয়াস বলেন, ‘ওর কাজের নীতি ঠিক করতে হবে। যদি ও সেটা করে, তাহলে ও আকাশ ছুঁতে পারবে। আমরা কারও কাজ করে দিতে পারব না। দিন শেষে এটা ওর দায়িত্ব, নিজে কীভাবে কাজ করবে, সেটা তাঁরই খুঁজে বের করতে হবে।’
এস্এনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০