স্পোর্টস ডেস্ক:: জেতা ম্যাচটাই হাতছাড়া করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। উইকেটে থাকা সর্বশেষ স্বীকৃত ব্যাটিং জুটিও জুটি গড়তে পারলো না। হতাশ করেছেন তরুণ ব্যাটার আফিফ হোসেন। দুই সিনিয়র মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর মিরাজের সঙ্গে প্রতিরোধের চেষ্টায় ছিলেন তিনি। তবে কুলদ্বীপের বলে সিরাজের দারুণ এক ম্যাচে তিনিও ফিরলেন সাজঘরে।
১৮৭ রানেরটার্গেটে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ শুরু করে শান্তর গোল্ডেন ডাক দিয়ে। ইনিংসের প্রথম বলেই সাজঘরে ফিরে গেছেন বাংলাদেশের এই ওপেনার। ইনিংসের প্রথম বলেই শুন্য রানে বাংলাদেশ হারায় প্রথম উইকেট। ওপেনার শান্তকে ফিরিয়ে দেন দীপক চাহার। তার বিদায়ের পর লিটনকে সঙ্গ দিতে যাওয়া বিজয় ফিরেন দলীয় ২৬ রানে, দশম ওভারের প্রথম বলে। আগের ওভারে জীবন পেয়ে ছিলেন। ব্যক্তিগত ১৩ রানে অল্পের জন্য বেঁচে গিয়ে এবার ১৪ রানেই ক্যাচ তুলে দিলেন।
তৃতীয় উইকেটে সাকিবকে নিয়ে ৪৮ রানের জুটি গড়ে ইনিংসের ২০তম ওভারের দ্বিতীয় বলে লিটন ফিরেন সাজঘরে। ৬৩ বলে ৪১ রানের দারুণ দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন তিনি। তিন চার ও এক ছক্কায় সাজানাো ছিলো তার ইনিংসটি। অধিনায়কের বিদায়ের পর ইনিংসের ২৪তম ওভারের তৃতীয় বলে সাকিবকে ফেরান সুন্দর। তিন চারে ৩৮ বলে ২৯ রান করেন এই অলরাউন্ডার।
সাকিবের বিদায়ের পর পঞ্চম উইকেটে রিয়াদ ও মুশফিক ৩৯ রানের জুটি গড়েন। এরপরই দলীয় ১২৮ রানে পঞ্চম উইকেটে রিয়াদকে এলবিডাব্লিউ’র ফাঁদে ফেলেন শার্দুল ঠাকুর। ৩৫তম ওভারের শেষ বলে ব্যক্তিগত ৩৫ বলে ১৪ রানে ফিরেন এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। পরের বলেই অর্থাৎ ৩৬তম ওভারের প্রথম বলে মুশফিককে বোল্ড করে দেন মোহাম্মদ সিরাজ। ১২৮ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপর আফিফ-মিরাজের ব্যাটে চেয়ে ছিলেন সমর্থকেরা। সেই আফিফও ফিরেন দ্রুত। ইনিংসের ৩৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে তার বিদায়ে সপ্তম উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। দলীয় ১৩৪ রানে ব্যক্তিগত ৬ রানে তিনি ফিরেন প্যাভেলিয়নে। কুলদ্বীপের বলে সিরাজ দারুণ এক ক্যাচে পরিণত করেন তাকে। তার বিদায়ের পর হিট উইকেট হয়েছেন এবাদতও। ইনিংসের ৩৯তম ওভারের পঞ্চম বলে শুন্য রানেই তিনি ফিরেন প্যাভেলিয়নে।
এপ্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ১৩৫ রান। মিরাজকে সঙ্গ দিতে নেমেছেন হাসান মাহমুদ।
এর আগে ভারতের লম্বা ব্যাটিং লাইনআপকে চেপে ধরে বাংলাদেশ। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, শ্রেয়ার্স আয়ারদের বড় রান করতে দেননি টাইগার বোলাররা। টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া বাংলাদেশ সফরকারীদের অলআউট করে দিয়েছে ১৮৬ রানে।
ব্যাট হাতে কেবল লড়াই করেছেন লুকেশ রাহুল। হাফ সেঞ্চুরিয়ান এই ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন এবাদত। দলীয় ১৭৮ রানে নবম উইকেটে তার বিদায়ের পরই ভারতের ব্যাটিং ইনিংস বড় হওয়ার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। আগে ব্যাট করতে নামা ভারত সাকিব, মিরাজ-এবাদতদের বোলিং তোপে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। দলীয় দেড় শতক পেরুতেই দলটি হারিয়ে ফেলেছে ৮টি উইকেট। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে সাকিব তুলে নিয়েছেন আরেকটি ফাইফার। ব্যক্তিগত সপ্তম ওভারে এসে সাকিব জোড়া উইকেট শিকার করেছেন। ফিরিয়েছেন দীপক চাহার ও শার্দুল ঠাকুরকে। তাতেই হয়ে গেছে তার পাঁচ উইকেট।
ইনিংসের ৬ষ্ঠ ওভারেই হারায় প্রথম উইকেট। ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ২৩ রানে মিরাজের শিকারে সাজঘরে ফিরেন ওপেনার শিখর ধাওয়ান। ১৭ বলে ৭ রান করেন তিনি। মিরাজের পরপরই উইকেটে আঘাত হানেন সাকিব। ১১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সাজঘরে ফেরত পাঠান অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে। চার চার ও এক ছয়ে ৩১ বলে ২৭ রান করেন তিনি। একবল বিরতি দিয়ে একই ওভারের চতুর্থ বলে সাকিব ফেরত পাঠান ভারতের বড় তারকা বিরাট কোহলিকে। দলীয় ৪৯ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় ভারতীয় দল। ১৫ বলে এক চারে ১২ রান করেন এই ব্যাটার।
সাকিবের জোড়া আঘাতের পর উইকেটের খাতায় নাম লেখান এবাদত। দলীয় ৯২ রানের মাথায় চতুর্থ উইকেট হারায় সফরকারীরা। ২০তম ওভারের শেষ বলে ২৪ রান করা শ্রেয়াস আয়ার ফিরেন সাজঘরে। এরপরই সাকিব জোড়া আঘাতে তুলে নেন আরো দুই উইকেট। পঞ্চম উইকেটে ৩৩তম ওভারের তৃতীয় বলে ওয়াশিংটন সুন্দরকে প্যাভেলিয়নের পথ দেখান এই অলরাউন্ডার। দলীয় ১৫২ রানে ব্যক্তিগত ১৯ রানে আউট হন এই ব্যাটার।
সাকিবের পরের ওভারে এবাদত তুলে নেন নিজের দ্বিতীয় উইকেট। ৩৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে শাবাজকে সাজঘরে পাঠান তিনি। রানের খাতা খুলতে পারেনিন এই ব্যাটার। ভারত হারায় ৬ষ্ট উইকেট। পরের ওভারে সাকিব বোলিংয়ে এসে আবারো উইকেট তুলে নেন। ৩৫তম ওভারের প্রথম বলে দলীয় ১৫৬ রানে সপ্তম উইকেট তুলে নেন তিনি। ৩ বলে ২ রান করে প্যাভেলিয়েন যান শার্দুল ঠাকুর। একই ওভারের চতুর্থ বলে সাকিব তুলে নেন তার পাঁচ উইকেট। শুন্য রানে দীপক চাহারকে সাজঘরে পাঠান তিনি। ১৫৬ রানেই ৮ উইকেট হারায় ভারত। এরপর দলীয় ১৭৮ রানে ইনিংসের ৪০তম ওভারের পঞ্চম বলে হাফ সেঞ্চুরিয়ান রাহুলকে বিদায় করেন এবাদত। পাঁচ চার ও চার ছক্কায় ৭০ বলে ৭৩ রান করেন তিনি। ৯ রানে শেষ ব্যাটার সিরাজকে সাজঘরে পাঠান এবাদত। ৪১.২ ওভারেই শেষ ভারত।
সাকিব ১০ ওভারে ৩৬ রানে ৫টি, এবাদত ৮.২ ওভারে ৪৭ রানে ৪টি ও মিরাজ ১টি উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০