স্পোর্টস ডেস্ক:: বৃষ্টিতে আপাতত বন্ধ আছে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড ম্যাচ। বৃষ্টি থামার পর ম্যাচ না শুরু করতে পারলে এই ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়ে যাবে। ওয়ানডে ক্রিকেটে বৃষ্টি আইনে ফলাফল পেতে হলে দুই ইনিংসেই অন্তত পক্ষে ২০ ওভার করে খেলতে হবে।
বাংলাদেশ দল ৫০ ওভার ব্যাট করতে পারলেও আয়ারল্যান্ড ২০ ওভার ব্যাট করতে পারেনি। আইরিশদের ব্যাটিং ইনিংসের ১৭তম ওভারের তৃতীয় বলেই বৃষ্টি চলে আসে। ম্যাচ বন্ধ হয়ে যায়। বৃষ্টি আইনে ম্যাচের ফলাফল পেতে হলে আয়ারল্যান্ডকে অন্তত ২০ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করতে হবে।
চেমসফোর্ডে কখনো বৃষ্টি থামছে। আবার পরক্ষণেই আসছে। তবেম্যাচ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে ম্যাচ হলে তা কার্টেল ওভারে হবে। :: দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেটে জুটি গড়েছিলো আয়ারল্যান্ড। ৩৬ রানের সেই জুটি ভাঙার পরপরই বেরসিক বৃষ্টি হাজির হয়েছে চেমসফোর্ডে। উইকেটে কাভারে ঢেকে দুই দল তাই সাজঘরে। বৃষ্টিতে আপাতত বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম ওয়ানডে।
প্রথম ওয়ানডেতে ব্যাটিংয়ে নামা আয়ারল্যান্ডকে শুরুতেই চেপে ধরেছে টাইগাররা বোলাররা। পরপর দুই ওভারে দুই উইকেট তুলে নিয়েছেন শরিফুল ও হাসান মাহমুদ।
২৪৭ রানের টার্গেটে খেলতে নামা আয়ারল্যান্ড দলীয় সংগ্রহ ২০ পেরুতেই হারায় প্রথম উইকেট। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলে দলীয় ২২ রানে আইরিশ ক্রিকেটের বড় তারকা পল স্টার্লিংকে সাজঘরে পাঠান শরিফুল। দুই চার ও এক ছক্কায় ১০ বলে ১৫ রান করেন এই ওপেনার।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারের শেষ বলে দলীয় ২৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। হাসান মাহমুদ তুলে নেন অধিনায়ক অ্যান্ডু বার্লবিনির উইকেট। ৯ বলে ৫ রান করেছেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে স্টিফেন ডোহেনি ও হ্যারি ট্যাক্টর ৩৬ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ৬৩ রানে তৃতীয় উইকেটে স্টোফেন ডোহেনীর বিদায়ে ভাঙে তাদের জুটি। দুই চারে ৩৯ বলে ১৭ রান করেছেন এই ওপেনার। তিন উইকেট হারানোর পর আরো দুই রান যোগ করে আইরিশরা। এরপরই বৃষ্টি চলে আসায় বন্ধ আছে ম্যাচ।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১৬.৩ ওভারে তিন উইকেটে ৬৫ রান তুলেছে দলটি। হ্যারি ট্যাক্টর ২১ রানে ও লরকান টাকার ২ রানে অপরাজিত আছেন।
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে লড়াকু পূঁজি পায় বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিমের হাফ সেঞ্চুরির সঙ্গে শান্ত, মিরাজ, হৃদয়দের ছোট ছোট সংগ্রহে ৯ উইকেটে ২৪৬ রান তুলেছে টাইগররা। ব্যাট হাতে দারুণ ইনিংস খেলেছেন মুশফিকুর রহিম। মিরাজ, তাইজুলদেরকে নিয়ে গড়েছেন দায়িত্বশীল জুটি। তাতেই বাংলাদেশ অলআউটের হাত থেকে বেঁচেছে। ২৪৭ রানের টার্গেট দিয়েছে আইরিশদের।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। লিটন দাস গোল্ডেন ডাকের পর দ্রুত ফিরেন অধিনায়ক তামিমও। দলীয় ১৫ রানেই দ্বিতীয় উইকেট হারিয়ে শঙ্কায় পড়া বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলো সাকিব-শান্তর ব্যাটে। দু’জনের ব্যাটে অর্ধশতক পেরিয়েছে টাইগাররা। তবে এরপরই সাজঘরের পথ ধরেছেন সাকিব।
ইনিংসের শুরুতেই গোল্ডেন ডাক মারলেন লিটন দাস। আইরিশদের বিপক্ষে নিজের প্রথম বল মোকাবেলায় ফিরেছেন সাজঘরে। প্রথম ওভারেই বাংলাদেশ হারিয়েছে এক উইকেট। টস হেরে ব্যাট করতে নামা তামিম-লিটনের উদ্বোধনী জুটি স্থায়ী হলো মাত্র ৩ রানের।
ইনিংসের চতুর্থ বলে এলবিডাব্লিউ’র ফাঁদে পড়েন লিটন দাস। প্রথম বলেই ফিরেন সাজগরে। দলীয় ৩ রানে প্রথম উইকেট হারায় টাইগাররা। জস লিটলি প্রথম ওভারেই সাফল্য এনে দেন আইরিশদের। তার বিদায়ের পর ইনিংসের চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে মার্ক অ্যাডায়ারের বলে উইকেটকিপার লরকান টাকারের হাতে ধরা পড়েন তামিম। ফিল্ড আম্পায়ার নটআউট দিলে আয়ারল্যান্ড রিভিউ নেয়। তাতেই বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ব্যক্তিগত ১৪ রানে সাজঘরে ফিরেন। ১৯ বলের ইনিংস সাজিয়েছেন দুই বাউন্ডারিতে। দলীয় ১৫ রানেই দুই উইকেট হারায় টাইগাররা।
তৃতীয় উইকেটে শান্তকে নিয়ে ৩৭ রানের জুটি গড়ে সাকিব প্যাভেলিয়নে ফিরেন। দলীয় ৫২ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় সফরকারীরা। ইনিংসের ১২তম ওভারের প্রথম বলে ব্যক্তিগত ২০ রানে সাজঘরে ফিরেন অলরাউন্ডার সাকিব। ২১ বলের ইনিংসে চার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন তিনি।
চতুর্থ উইকেটে শান্ত-হৃদয় মিলে অর্ধশত রানের জুটি গড়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। দলীয় শতরান পেরুতেই সাজঘরে ফিরেন শান্ত। মাত্র ৬ রানের জন্য ফিফটি মিস করেন তিনি। দলের ১০২ রানে ব্যক্তিগত ৪৪ রানে প্যাভেলিয়নে ফেরেন তিনি। ৬৬ বলের ইনিংস সাজান সাত চারে। তার বিদায়ের পর দ্রুত বিদায় হন হৃদয়ও। দলীয় ১২২ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় টাইগাররা। দুই চারে ৩১ বলে ২৭ রানে প্যাভেলিয়নে ফেরত যান হৃদয়।
ষষ্ঠ উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজ। দু’জনে মিলে যোগ করেন ৬৫ রান। তাতেই দুইশোর কাছাকাছি গেছে বাংলাদেশের রান। এরপরই দলীয় ১৮৭ রানে মিরাজ ফিরলে ভাঙে তাদের জুটি। ইনিংসের ৩৮তম ওভারের তৃতীয় বলে ব্যক্তিগত ৩৭ রানে ডকরেলের শিকারে সাজঘরে ফিরেন তিনি। ৩৪ বলের ইনিংসে বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন চারটি।
দলীয় ২২০ রানে মুশফিক ইনিংসের ৪৫তম ওভারের পঞ্চম বলে সাজঘরে ফিরেন। ৭০ বলে ছয় চারে খেলেন ৬১ রানের দারুণ এক ইনিংস। এটি তার ওয়ানডে ক্যারিরয়ারের ৪৪তম হাফ সেঞ্চুরি। তার বিদায়ের বড় বড় ইনিংস খেলতে পারেননি অন্য কেউ। তাইজুল করেন ১৪ রান। ১৬ রান আসে শরিফুলের ব্যাট থেকে। তাতেই বাংলাদেশ ৯ উইকেটে ২৪৬ রান তুলে।
আয়ারল্যান্ডের হয়ে জস লিটলি ৩টি, মার্ক অ্যাডায়ার ও গ্র্যান্ড হোম ২টি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০
Discussion about this post