স্পোর্টস ডেস্ক:: জয়ের জন্য শেষ দিনে ভারতের প্রয়োজন ছিলো চার উইকেট। ইংল্যান্ডের মাত্র ৩৫ রান। জয়ের পাল্লা স্বাভাবিক ভাবেই ইংলিশদের পক্ষে ছিলো। কিন্তুু সেটা আর হতে দিলেন না খলনায়ক থেকে নায়ক হওয়া সিরাজ। হ্যারি ব্রুক ১৯ রানে থাকতে তার ক্যাচ ছেড়ে ছিলেন সিরাজ। সেঞ্চুরি করে ছিলেন ইংলিশ ব্যাটসম্যান। এই টেস্ট হারলে তাই কাঠ গড়ায় দাঁড়াতে হতো সিরাজকে।
শেষ দিনে ভারতকে অবিশ্বাষ্য ভাবে জিতিয়ে শাপমোচন করেছেন সিরাজ। খলনায়ক থেকে হয়েছেন নায়ক। এক হাত নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা ক্রিস ওকস ইংলিশদের হৃদয় জিতলেও ম্যাচ জেতা হয়নি তার দলের। অ্যাটকিনসন ওকসবে ব্যাটিং করতে দেননি। কারণ চোটগ্রস্ত এই তারকার আরেক হাত যে গলায় ঝুলানো ছিলো। সোয়েটারের ভেতর রাখতে হয়েছিলো। এক হাত নিয়ে দৌড়ে রান নিয়েছেন, তাতেই স্পষ্ট দেখা যায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন ওকস।
ভীষণ ঝুঁকি নিয়ে ছিলেন ওকস। চিকিৎসকদের সায় ছিলো না ব্যাটিংয়ে নামতে। বাম কাঁধের হাড় স্থানচ্যুত গুরুতর ছিলো হাতের অবস্থা। তবুও দলের প্রয়োজনে, বড় ঝুঁকি নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে সমর্থকদের হৃদয় জিতেছেন। তরুণদের অনুপ্রেরণার উৎস হয়েছেন। ওভাল টেস্ট রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে, টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
সাদা বলের যুগে টেস্ট ক্রিকেটযে হারিয়ে যায়নি, সেটাই প্র্রমাণ দিচ্ছে সিরাজ-ওকসের দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই, দেশের জার্সিতে শেষ পর্যন্ত মাটি কামড়ে পড়ে থাকা, জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠা। ক্রিকেটারদের নিবেদন আর ত্যাগে এখনো যে টেস্ট সবার উপরে, ওভাল টেস্ট সেটা আরো একবার বুঝিয়ে দিলো। ক্রিকেট যে অনিন্দ্য সুন্দর, অনিশ্চয়তার, পঞ্চম দিনে মাত্র ৩৫ রানে চার উইকেট তুলে নিয়ে ভারত দেখিলো দিলো।
ওকসের দলের প্রয়োজনে ব্যাটিংয়ে নেমে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা তরুণদের জন্য প্রেরণার, ইংল্যান্ডের সমর্থকদের জন্য মনের ফ্রেমে গেঁথে রাখার মতো মূহুর্ত। দলের জন্য ওকসের এই ত্যাগ সত্যিই ওভাল টেস্টকে আরও মাধুর্যময় করে তোলে। ইংলিশদের ঢেরায় এসে সিরিজ হারেনি ভারত। সিরাজের দারুণ বোলিংয়ে ২-২ সমতায় শেষ করে দেশে ফিরছে শুভমান গিলের দল।