নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ভারতকে হারিয়ে আবারো ওয়ানডে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। বুধবার সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টাইগারদের জয় ৫ রানে। ৪৯তম ওভারে দুই ক্যাচ ফেলে হারতে বসেছিল বাংলাদেশ। মাহমুদুল্লাহ দিয়েছিলেন ২০ রান। শেষ ওভারে ভারতের দরকার ছিল ২০ রান। শেষ বলে ৬। মুস্তাফিজুর রহমান দারুণ বল করে দলকে জয় এনে দিয়েছেন।
মিরপুরে আজ মুস্তাফিজুরের শেষ ওভারের প্রথম বলে কোনো রান নিতে পারেন নি চোট কাটিয়ে ব্যাট হাতে নামা রোহিত। দ্বিতীয় বলে অবশ্য চার হাঁকান তিনি। তৃতীয় বলও দারুণ দক্ষতায় বাউন্ডারিতে পাঠান ভারত অধিনায়ক। চতুর্থ বলে অবশ্য রান পায় নি সফরকারীরা। মুস্তাফিজের করা পঞ্চম বলে জায়গা দাঁড়িয়ে ছক্কা হাঁকান তিনি।
শেষ বলে ভারতের জয়ের সমীকরণ দাঁড়ায় ‘৬’। কিন্তু দুর্দান্ত এক ইয়র্কার ডেলিভারিতে রোহিতকে ছক্কা হাঁকানো থেকে বিরত মুস্তাফিজ। ভারত ৯ উইকেটে ২৬৬ রানে থামে। রোহিত ৩টি চার ও ৫টি ছক্কার সাহায্যে ২৮ বলে ৫১ রান করে অপরাজিত থাকেন। অপরপ্রান্তে তার সঙ্গী ছিলেন উমরান মালিক।
বল হাতে বাংলাদেশকে দারুণ শুরু এনে দেন এবাদত হোসেন ও মুস্তাফিজ। দলীয় ৬৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ভারত। তবে শ্রেয়াস আইয়ার-অক্ষর প্যাটেলের শতরানের (১০৭) জুটিতে আবার প্রতিরোধ গড়ে। দুজন ফিরলে আবার ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ভারত। আইয়ার সর্বোচ্চ ৮২ রান করেন। ১০২ বলে ৩ ছক্কা ও ৬ চারে তার এই ইনিংস সাজান। ৩ ছক্কা ও ২ চারে ৫৬ বলে ৫৬ রান করেন অক্ষর।
এরপর বাংলাদেশের বাঁধা হয়ে দাঁড়ান আঙুলে চোট নিয়ে খেলতে নামা রোহিত। ফিল্ডিংয়ের সময় আঙুলে আঘাত পাওয়া এই ব্যাটার হাসপাতাল থেকে ফিরেন ড্রেসিংরুমে। দলের প্রয়োজনে ব্যাট হাতে নেমে ২৭ বলে ফিফটি করে ছিলেন অপরাজিত। তবে ম্যাচ জিততে শেষ বলের সমীকরণ মেলাতে পারেন নি তিনি।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন এবাদত। ২ উইকেট করে নেন সাকিব-মিরাজ। এর আগে ২০১৫ সালে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। ৭ বছর পর সফরে এসে আবারও সিরিজ হারলো তারা। আজকের ম্যাচের জয়ের নায়ক মিরাজ। ব্যাট হাতে সেঞ্চুরির পর বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট ও একটি ক্যাচ।
এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এনামুল হক বিজয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমরা যখন ব্যর্থ হয়ে ফিরেন; তখন ১০০ রানের আগে অলআউটের শঙ্কা জাগে। তবে দলের হাল ধরেন রিয়াদ-মিরাজ। ভারতীয় বোলারদের মাথায় ঘাম পায়ে ফেলে লাল-সবুজের দলকে এনে দেন ২৭১ রানের পুঁজি।
খাঁদের কিনারা থেকে দলকে টেনে নিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পূরণ করেন মিরাজ। ১০০ রানে তিনি অপরাজিত থাকলেও মাহমুদউল্লাহ করেন ৭৬ রান। মিরাজের ইনিংসে ছিল ৪ ছক্কা ও ৮ চার। ৮৩ বলে ১২০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করেন এই ডানহাতি। তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়া রিয়াদ ৭ চারে করেন ৭৬ রান। শেষদিকে ব্যাট থেকে ক্যামিও ইনিংস খেলেন নাসুম আহমেদ। মাত্র ১১ বলে ১৮ করেন এই বাঁহাতি।
২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছে লিটন দাসের দল। আজ ম্যাচ শেষে অধিনায়ক লিটন দাস বললেন, আগামী শনিবার চট্টগ্রামে জয়ের লক্ষ্য নিয়েই নামবেন তারা। এদিকে দ্বিতীয়বারের মতো ভারতের বিপক্ষে টানা ম্যাচ জিতল বাংলাদেশ। দুই জয়েই সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতলেন মিরাজ।