স্পোর্টস ডেস্কঃ বড় হার দিয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোর শুরু করল বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে আজ ৭ উইকেটে হেরেছে সাকিব আল হাসানের দল। গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৯৩ রানে শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।
রান তাড়া করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৩৫ রান তোলে পাকিস্তান। এ সময় ২০ রান করে শরিফুল ইসলামের বলে বিদায় নেন ফখর জামান। দলীয় ৭৮ রানে বাবর আজমকে তাসকিন বোল্ড করলেও রানের চাকা ঠিকই সচল রেখেছিল স্বাগতিক দল। বাবর ফেরেন ব্যক্তিগত ১৭ রানে।
এরপর ইমাম উল হক ও মোহাম্মদ রিজওয়ান মিলে গড়েন ৮৩ রানের জুটি। ৮৪ বলে ৭৮ রানের ইনিংস খেলে মেহেদী হাসান মিরাজের শিকারে পরিণত হন ইমাম। তার ইনিংসে ছিল ৫টি চার ও ৪টি ছয়ের মার। ৩৯.৩ ওভারে দলের জয় নিশ্চিত করেন রিজওয়ান ও সালমান মিলে। রিজওয়ান শেষ পর্যন্ত ৬৩ ও সালমান ১২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে লাহোরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই বিপাকে ছিল টাইগাররা। অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের ১০০ রানের জুটির সুবাদে দুইশর কাছাকাছি যেতে পেরেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় ওভারে হারায় ওপেনার মেহেদি হাসান মিরাজকে। আগের ম্যাচে ওপেনিংয়ে সুযোগ পেয়ে সেঞ্চুরি করা এই ডানহাতি ক্রিকেটারে আস্থা রেখেছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে এদিন হতাশ করেছেন মিরাজ। পাকিস্তানি পেসার নাসিম শাহর করা দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে রানার খাতা না খুলেই আউট হয়েছেন তিনি।
লেগ স্টাম্পে রাখা বলে ফ্লিক করতে গিয়ে মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ তুলে দেন মিরাজ। ফিল্ডার ফখর জামানের সহজ ক্যাচ নিতে কোনো অসুবিধা হয় নি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবার গোল্ডেন ডাক পেলেন মিরাজ। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে পঞ্চমবার প্রথম বলেই আউট হলেন মিরাজ। কিন্তু ওয়ানডেতে এই প্রথম। এরপর নাসিম-শাহিনদের বিপক্ষে খানিকটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন ওপেনার নাঈম শেখ ও লিটন। তবে দুজনের জুটি বেশি বড় হয় নি।
পঞ্চম ওভারে শাহিনের অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট অব আ লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা বলে খোঁচা দিয়েছেন লিটন। ব্যাটে কানায় লেগে ক্যাচ গেছে উইকেটকিপার রিজওয়ানের কাছে। ১৩ বলে ১৬ রান করেন তিনি। হাঁকান ৪টি চার। দ্রুত ফিরেন তাওহিদ হৃদয়ও। পেসার হারিস রউফের গতির ডেলিভারিতে পরাস্ত হয়েছেন তিনি। আউট হওয়ার আগে করেন মাত্র ২ রান। বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি নাঈম শেখ। ভালো শুরু পেলেও তিনি ইনিংস বড় করতে পারেননি। রউফের ওপর চড়াও হতে গিয়ে বাংলাদেশের এই ওপেনার টপ এজ হয়েছেন ব্যক্তিগত ২০ রানে।
মুশফিককে নিয়ে ৫৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সাকিব। হাফ সেঞ্চুরির পর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। ফাহিম আশরাফের বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ফখরকে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। আর তাতে শেষ হয়েছে মুশফিকের সঙ্গে তার ১২০ বলে ১০০ রানের জুটি। সাকিব ফিরে গেলে শামীম পাটোয়ারিকে নিয়ে ৭১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক। ক্যারিয়ারে এটি তাঁর ৪৬তম ওয়ানডে ফিফটি।
এরপর টাইগারদের ইনিংসে ঘটে আবার ছন্দপতন। উড়িয়ে মারতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে আসেন শামিম। একই পথ ধরেন মুশফিকও। হারিস রউফের বলে জায়গা বানিয়ে মারতে গিয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৬৪ রানের ইনিংস খেলা মুশফিক। পরের বলে আউট হয়েছেন তাসকিন আহমেদ। মুশফিকের ইনিংসটি সাজানো ছিল ৮৭ বলে ৫ চারে।
আফিফ হোসেনের সামনে সুযোগ ছিল লোয়ার অর্ডার ব্যাটারদের নিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ দুইশোর উপরে নিয়ে যাওয়া। অথচ তিনি উইকেট ছুড়ে এসেছেন আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে। নাসিম শাহর করা শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে মিড অনে ফাহিম আশরাফের সহজ ক্যাচ হয়েছেন তিনি। এরপর শরিফুলকে বোল্ড করে বাংলাদেশের ইনিংসে ১৯৩ রানে গুটিয়ে দিয়েছেন নাসিম।
পাকিস্তানের দুই ডানহাতি পেসার নাসিম-রউফ বাংলাদেশের ইনিংস ধসিয়ে দিয়েছেন। রউফ ৬ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন ৪ উইকেট। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের মাত্র ২৭ ম্যাচে উইকেটের ফিফটি ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। নাসুম ৩৪ রান দিয়ে নিয়েছেন তিন উইকেট। এছাড়া শাহিন আফ্রিদি, ফাহিম আশরাফ ও ইফতিখার একটি করে উইকেট নিয়েছেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/১১০
Discussion about this post