নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সমীকরণ ছিল পরিষ্কার। আবাহনী লিমিটেড ও শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের শেষ রাউন্ডের ম্যাচে যারাই জিতবে, তারাই ২৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে থেকে শিরোপা জিতবে। সেজন্য অঘোষিত ফাইনাল ধরা হচ্ছিল ম্যাচটিকে।
আর সেই ম্যাচে শেখ জামালের দেওয়া ২৮৩ রানের বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে একেবারে শেষ ওভারে গিয়ে ৪ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয় নিয়ে ডিপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আবাহনী লিমিটেড।
তানজিম হাসান সাকিবের বাউন্ডারিতে দারুণ ফিনিশিং, ৪ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের নেতৃত্বাধীন দল। জমজমাট লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত থেকেও শিরোপা ধরে রাখতে পারলো না নুরুল হাসান সোহানের শেখ জামাল। সবশেষ আসরে চ্যাম্পিয়ন ছিল শেখ জামালই। এবার রানার্সআপেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো তাদের।
এদিকে শিরোপা পুনরোদ্ধার করার পাশাপাশি ডিপিএল লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটের মর্যাদা পাওয়ার পর রেকর্ড চতুর্থবারের মতো শিরোপা ঘরে তুললো আকাশী-নীলরা। আর সব মিলিয়ে ২২তম শিরোপা। আবাহনীর ধারে-কাছেও নেই অন্য কোনো দল।
শেখ জামালের দেওয়া ২৮৩ রানের বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে দারুণ শুরু পায় আবাহনী। দুই ওপেনার নাঈম শেখ ও এনামুল হক বিজয় নিজেদের চিরচেনা ফর্ম দেখান। পুরোনো দমে ফিরে আসেন। ১৪৫ রানের দুর্দান্ত এক উদ্বোধনী জুটি গড়ে ম্যাচ জয়ের বার্তা দেন। ২৬.২ ওভার স্থায়ী সেই জুটি ভাঙে নাঈমের বিদায়ের। আসরে নিজের দশম ফিফটি হাঁকিয়ে নাঈম ফিরেন ৭৯ বলে ৩টি করে চার ও ছয়ের মারে ৬৮ রান করে।
দলীয় দেড়শ রানের আগেই বিদায় নেন আরেক ওপেনার বিজয়ও। এই ডানহাতি এদিন ৮১ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ৪ ছক্কায় ৭২ রানের ইনিংস খেলে যান। টপ অর্ডারে নেমে মাত্র ৯ রান করতে পারেন মাহমুদুল হাসান জয়। দলীয় দুইশ রান পেরোনের আগে চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে ২১ রান করা জাকের আলি অনিকের বিদায়ে।
এরপর পঞ্চম উইকেটে অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে সাথে নিয়ে ৬৮ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে দলের জয়ের পথ সুগম করেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। জয়ের কাছাকাছি এসে ২২ রান করা মোসাদ্দেক ও বিদেশি পাকিস্তানের খুশদিল শাহকে (৫) হারিয়ে বিপাকে পড়ে আবাহনী। জয়েরও শঙ্কা জাগে।
তবে সেখান থেকে তানজিম সাকিবের ১টি করে চার ও ছয়ের মারে ১২ রানের অপরাজিত ইনিংস আবাহনীকে ৪ বল বাকি থাকতেই জয়ের দোড়গড়ায় নিয়ে যায়। অপরপ্রান্তে ফিফটি হাঁকিয়ে ৫৩ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ৬০ রান করে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন আফিফ।
শেখ জামালের হয়ে পারভেজ রাসুল ও তাইবুর রহমান ২টি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮২ রানের বড় সংগ্রহ পায় শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব। যেখানে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার খেলেছেন ৮৯ রানের অপরাজিত এক দারুণ ইনিংস। তার ৭০ বলের ঝড়ো ইনিংসটি সাজানো ৮ বাউন্ডারি ও ৪ ছক্কার মারে।
এছাড়া ৮৫ বলে ৩ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ৫৩ রান করেন তাইবুর রহমান। দলের বিদেশি পারভেজ রাসুল ৪২ ও ফজলে রাব্বির ব্যাট থেকে আসে ৪০ রান। শেষ দিকে ২৯ রানের ক্যামিও খেলেন জিয়াউর রহমান। মিডল অর্ডার ব্যাটাররাই টেনেছেন দলকে।
টপ অর্ডারের তিন ব্যাটার সাইফ হাসান, সৈকত আলি ও রবিউল ইসলাম ব্যর্থ হয়েছেন। তিনজন ব্যক্তিগত রানের খাতা এক অঙ্ক থেকে বের হতে পারেননি। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ডাক মেরে ফিরেন সাইফ। এরপর চতুর্থ ওভারের প্রথম ফলে ফিরেন আরেক ওপেনার সৈকত। আর পঞ্চম ওভারের শেষ বলে রবি আউট হলেই বিপদে পড়ে দলটি। মাত্র ১৬ রানে ৩ উইকেট হারানো দলকে এরপরই টেনে তুলেন রাব্বি, তাইবুর, সোহান, পারভেজরা।
আবাহনীর হয়ে তানভীর ইসলাম ও তানজিম হাসান সাকিব ২টি করে উইকেট শিকার করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/সা
Discussion about this post