স্পোর্টস ডেস্ক:: ৫২ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা বাংলাদেশ চতুর্থ দিন শেষ করেছে দুই উইকেট হারিয়ে। ওপেনার জাকির হাসানের বিদায়ের পর শেষ বিকেলে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা হাসান মাহমুদও ফিরেছেন সাজঘরে। দিন শেষে বাংলাদেশ দুই উইকেটে ২৬ রান তুলেছে। ৭ রানে সাদমান ও শুন্য রানে মুমিনুল হক অপরাজিত আছেন।
ইনিংসের অষ্টম ওভারের প্রথম বলে দলীয় ১৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় টাইগাররা। সাজঘরে ফিরে যান ১৫ বলে ১০ রান করা ওপেনার জাকির হাসান। তার বিদায়ের বাংলাদেশ নাইটওয়াচম্যান হিসেবে মাঠে নামা হাসান মাহমুদকে। তবে শেষ বিকেলে তিনিও টিকতে পারেননি। দশম ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ২৬ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেটে হাসান মাহমুদ ফিরেন প্যাভেলিয়নে। নয় বলে এক বাউন্ডারিতে চার রান করেন তিনি।
ভারতের হয়ে অশ্বিন ২টি উইকেট লাভ করেন।
এর আগে বাংলাদেশের ২৩৩ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমেই মারমুখী শুরু করে স্বাগতিকরা। ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করতে নামা ভারত দ্রুতই হারায় অধিনায়ক রোহিত শর্মার উইকেট। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে দলীয় ৫৫ রানে মিরাজের শিকারে রোহিত ফিরেন সাজঘরে। ১১ বলের ইনিংসে তিন ছক্কা ও একটি চারে ২৩ রান করেন তিনি।
রোহিত সাজঘরে ফিরলেও ব্যাট হাতে ধ্বংসযজ্ঞ চালান জসওয়াল। ১৪১’র বেশি স্ট্রাইক রেটে ৫১ বলে ৭১ রানের এক ঝড়ো ইনিংস খেলে থামেন তিনি। ভারত যেমন দ্রুত রান তুলতে থাকে, বাংলাদেশ নিয়মিত বিরতিতে দ্রুতই উইকেট তুলতে থাকে। ওয়ানডে মেজাজে ব্যাট করা ভারত ওপেনার জসওয়ালের পর ছয়ে নামা লুকেশ রাহুলের ঝড়ো ব্যাটে নয় উইকেটে ২৮৫ রান তুলে।
লুকেশ রাহুল উইকেটে গিয়েই মারমুখী হয়ে উঠেন। মাত্র ৪৩ বল খেলে ৬৮ রানের নান্দনিক এক ইনিংস খেলেন তিনি। সাত চার আর দুই ছক্কা ছিলো তার ইনিংসে। ভারতের সব ব্যাটার দ্রুত রান তুলার চেষ্টা করেছেন। বিরাট কোহলি চার চার আর এক ছয়ে ৩৫ বল খেলে করেন ৪৭ রান। ৩৬ বলে ৩৯ রান করেন শুবমান গিল।
বাংলাদেশের হয়ে দুই স্পিনার মিরাজ ও সাকিব ৪টি করে উইকেট লাভ করেন।
এর আগে চতুর্থ দিনে এসে কানপুর টেস্টে শেষ হয়ে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। বৃষ্টিতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন ভেসে যাওয়া ম্যাচে রীতিমতো ধ্বংস স্তুপে দাঁড়িয়ে ব্যাট করেছেন মুমিনুল হক। তার লড়াকু ব্যাটের দুর্লভ সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ পেয়েছে ২৩৩ রানের সংগ্রহ।
বাংলাদেশ মুমিনুল হকের দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে ভর করে ২৩৩ রানে থামে। তিনে নামা এই ব্যাটার ব্যাট হাতে লড়াই করেছেন, কানপুরে পেয়েছেন দুর্লভ এক সেঞ্চুরি। গ্রিণ পার্ক স্টেডিয়ামে দশ বছর পর বিদেশী ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরির দেখা মিলেছে। বিদেশের মাটিতে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি আর সব মিলিয়ে ক্যারিয়ারে ১৩তম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকেছেন মুমিনুল।
বাংলাদেশের এই ব্যাটসম্যানকে এক প্রান্তে আগলে রেখে অপর প্রান্তে চলেছে যাওয়া-আসার মিছিল। ব্যাট হাতে একাই লড়েছেন মুমিনুল। জুটি গড়ার জন্য পাননি যোগ্য সঙ্গী। দু’টি হাফ সেঞ্চুরির জুটিতে বাংলাদেশের মান বাঁচিয়েছেন শান্ত আর মিরাজকে নিয়ে।
তৃতীয় উইকেটে অধিনাক শান্তর সঙ্গে মুমিনুল গড়েন ৫১ রানের জুটি। ১০১ বলের জুটিটি ভাঙে দলীয় ৮০ রানে তৃতীয় উইকেটে শান্তর বিদায়ে। টাইগার অধিনায়খ ছয় চারে ৫৭ বলে খেলেন ৩১ রানের ইনিংস। এরপর আজ মুমিনুল জুটি গড়েন মিরাজকে নিয়ে। সপ্তম উইকেটে তাদের জুটি থেকে আসে সর্বোচ্চ ৫৪ রান। ৮২ বলের জুটিটি ভাঙে মিরাজের বিদায়ে ইনিংসের ৭০তম ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ২২৪ রানের মাথায়। চার চারে ৪২ বলে ২০ রানের ইনিংসটি খেলেন মিরাজ।
মুমিনুল ১৯৪ বলে ১০৭ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন শেষ পর্যন্ত। সেঞ্চুরির ইনিংসটিতে ১৭টি চার ও একটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে সাদমান করেন ২৪ রান। বলার মতো রানের দেখা পাননি অন্য কোনো ব্যাটসম্যানই।
মুমিনুলের আগে কানপুরে সফরকারী দলের হয়ে সবশেষ সেঞ্চুরি হয়েছিলো বছর দশেক আগে। ভারতের বিপক্ষে এটি মুমিনুলের প্রথম সেঞ্চুরি। বিদেশের মাঠে দ্বিতীয়। মুমিনুল দেশের বাইরে প্রথম তিন অঙ্কের দেখা পেয়েছিলেন ২০২১ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাল্লেকেলেতে।
ভারতের হয়ে জাসপ্রিত বুমরাহ ৩টি, সিরাজ, অশ্বিন, আকাশরা ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০