নিজস্ব প্রতিবেদক:: সিলেট টেস্টের প্রথম দিনটা পুরোপুরি বাংলাদেশের হতে পারতো। শেষ বিকেলে ওপেনার জাকির হাসান ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে এলবিডাব্লিউ’র ফাঁদে ফেলে নিজেদের হাতেই ম্যাচের নাটাই রাখলো লঙ্কানরা।
শ্রীলঙ্কার ২৮০ রানের জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ দুই উইকেট হারিয়ে দিন শেষ করেছে। ফার্নান্দোর লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে দু’জনেই ফিরেছেন সাজঘরে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ১১ রানের মাথায় ফার্নান্দোর প্রথম শিকারে সাজঘরে ফিরেন ওপেনার জাকির হাসান। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি। আম্পায়ার্স কলের শিকারে ফেরেন প্যাভেলিয়নে। ৬ বলে ৯ রান করেন টাইগার ওপেনার।
জাকিরের বিদায়ে তিনে নামা অধিনায়ক শান্তও ফার্নান্দোর এলবিডাব্লিউ’র ফাঁদে পড়েন। ইনিংসের পঞ্চম ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ১৭ রানের মাথায় তিনি পথ ধরেন প্যাভেলিয়নের। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি। একটি মূল্যবান রিভিউ হারান টাইগার অধিনায়ক। ব্যাট হাতে ১০ বলে করেন ৫ রান।
তৃতীয় উইকেটে মুমিনুল হক ও মাহমুদুল হাসান জয় পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছিলেন। তবে পারেননি। কাসুন রাজিথার বলে মুমিনুলও দ্রুত ফিরেন প্যাভেলিয়নে। ইনিংসের অষ্টম ওভারের শেষ বলে দলীয় ৩১ রানের মাথায় তার বিদায়ে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৭ বলে ৫ রান করেন এই ব্যাটার।
চতুর্থ উইকেটে নাইটওয়াচম্যান তাইজুলকে নিয়ে দিন শেষ করেছেন ওপেনার জয়। ১০ ওভারে ৩২ রানে তিন উইকেট হারিয়ে প্রথম দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। জয় ৯ রানে অপরাজিত আছেন। কোনো রান করতে না পারলেও শেষ সময়ে আর উইকেট না হারিয়ে অপরাজিত থেকেছেন তাইজুল। প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে ২৪৮ রানে।
শ্রীলঙ্কার হয়ে ফার্নান্দো ২টি ও কাসুন রাজিথা ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
দুই সেঞ্চুরিয়নের দিনে বাংলাদেশের তিন পেসারের সাত উইকেট আর দুই রান আউটের দিনে সিলেট টেস্টে প্রথম ইনিংসে লঙ্কানরা অলআউট হয় ২৮০ রানে।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সকালে টস জিতে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার দলকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে যথার্থ করে তুলেন বাংলাদেশের পেসার খালেদ আহমদ। অর্ধশতকের আগেই ভেঙে দেন লঙ্কানদের কোমর। ৪৭ রানের মধ্যে চার উইকেট হারানো অতিথিরা ৫৭ রানের মধ্যেই হারিয়ে ফেলে অর্ধক উইকেট।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে দলীয় ৩ রানের মাথায় ওপেনার মাধুশাঙ্কাকে ব্যক্তিগত ২ রানে সাজঘরে পাঠান পেসার খালেদ। দ্বিতীয় উইকেটে দিমুথ করুনারাত্মে ও কুশল মেন্ডিস ৩৭ রানের জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কা সামলানোর চেষ্টা করেন।
দলীয় ৪০ রানের মাথায় তাদের জুটি ভেঙে দেন খালেদ। ১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সাজঘরে পাঠান মেন্ডিসকে। ২৬ বলে ১৬ রান করেন তিনে নামা এই ব্যাটার। একই ওভারের শেষ বলে দিমুথ করুনারাত্মকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে দারুণ শুরু এনে দেন খালেদ। ৪১ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেটে সাজঘরে ফিরেন এই ব্যাটার। ৩৭ বলে ১৭ রান করেন তিনি।
দ্রুত উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়া লঙ্কানরা এরপর বড় ধাক্কা খায় রানআউটে অ্যাঞ্জেলা ম্যাথিউসকে হারিয়ে। দলীয় ৪৪ রানের মাথায় ১৪তম ওভারের চতুর্থ বলে রান নিতে গিয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনি। নাজমুল হোসেন শান্তর দারুণ এক রানআউটে ফেরার আগে ৭ বলে মাত্র ৫ রান করেন তিনি।
ইনিংসে এক উইকেট পাওয়া বোলার শরিফুল তুলে নেন অতিথিদের পঞ্চম উইকেট। দলীয় ৫৭ রানের মাথায় ইনিংসের ১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দিনেশ চান্দিমালকে সাজঘরে পাঠান তিনি। মিরাজের হাতবন্দী হওয়ার আগে ১৩ বলে ৯ রান করেন এই ব্যাটার।
ষষ্ট উইকেটে ঘুরে দাঁড়ায় লঙ্কানরা। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস ২০২ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে ম্যাচে ফেরান দলকে। বাংলাদেশের বোলারদের শাসন করে ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট চালাতে থাকেন দু’জনে। ইনিংসের ৫৭তম ওভারের তৃতীয় বলে দলীয় ২৫৯ রানের মাথায় কামিন্দু মেন্ডিসকে লিটনের গ্লাভস বন্দী করেন অভিষিক্ত নাহিদ রানা। এগারো চার ও তিন ছক্কায় ১২৭ বলে ১০২ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন তিনি।
কামিন্দুু মেন্ডিসের বিদায়ের পর দ্রুত সাজঘরে ফিরেন আরেক সেঞ্চুরিয়ান ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। দলীয় ২৬৪ রানের মাথায় ৫৯তম ওভারের চতুর্থ বলে অভিষিক্ত নাহিদ রানাই ফিরিয়েছেন এই সেঞ্চুরিয়নকেও। মেন্ডিসের মতো তিনিও করেছেন ১০২ রান। ১৩১ বলের ইনিংসে হাঁকিয়েছেন ১২ চার ও ১ ছক্কা। এরপরই আর বেশিদূর আঘাতে পারেনি লঙ্কানরা। ৬৮ ওভারে ২৮০ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস।
বাংলাদেশের হয়ে খালেদ ও নাহিদ রানা ৩টি করে এবং শরিফুল ও তাইজুল ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০
Discussion about this post