স্পোর্টস ডেস্ক:: সব আলোচনা-সমালোচনা তামিম মুশফিকুর রহিম ওয়ানডে দল থেকে বিদায় নিয়েছেন। বাংলাদেশের জার্সিতে এক দিনের ক্রিকেট আর খেলবেন না মুশফিক। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যর্থতার পর গত রাতে ওয়ানডে ফরম্যাট থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিদায়ের ঘোষণা দেন মুশফিক।
জাতীয় দলে মুশফিকের দীর্ঘ দিনের সতীর্থ তামিম ইকবাল। যিনি আগেই বিদায় নিয়েছেন জাতীয় দল থেকে। সতীর্থ মুশফিকের বিদায়ের পর আবেগপ্রবণ হয়েছেন তামিম ইকবাল। এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, মুশফিকের অবদান বছরের পর বছর মনে রাখা হবে। বাংলাদেশ তাকে মিস করবে। ভিডিও বার্তায় তামিম বলেন, ‘এখনো তুই একটি সংস্করণে খেলবি—টেস্ট সংস্করণ। আমি সত্যিই আশা করি ও প্রার্থনা করি, তুই ভালো কর। অন্তত ১০০টি টেস্ট খেল, যেটা বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ক্রিকেটার খেলে নাই। আমি এটা আশা করব, ১০০তম টেস্ট অবশ্যই খেলবি। খুব আবেগপ্রবণ লাগছে, যেটা আমি টের পাচ্ছি, তুইও পাচ্ছিস। বাংলাদেশ তোকে মিস করবে। যা কিছুই করেছিস তুই দেশের জন্য, অনেক অনেক বছর সেসব মনে রাখা হবে…ধন্যবাদ, সবকিছুর জন্য অনেক ধন্যবাদ মুশফিক।’
দেড় দশকের বেশি সময় মুশফিক-তামিম এক সঙ্গে খেলেছেন। জাতীয় দলে দু’জনের হাজারো স্মৃতি, হাজারো দুঃখ-কষ্টের গল্প। সতীর্থ মুশফিকের নিবেদনে মুগ্ধ হতেন তামিম। সেই আরেকবার স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে এমনই একটা দিন, সাধারণত কেউ যদি কোনো সংস্করণ থেকে অবসর নেয়, সবাই স্ট্যাটাস দেয়, তাদের অনুভূতিটা বোঝায়। কিন্তু এমন একজন ব্যক্তি আজ অবসর নিলেন, যার সঙ্গে আমার ২০-২৫ বছরের অভিযাত্রা। একটা স্ট্যাটাসে আমি আসলে বোঝাতে পারতাম না, তার প্রতি আমার অনুভূতি কেমন এবং এখন আমার আসলে কেমন মনে হচ্ছে। আপনারা সবাই জানেন মুশফিক কিছুক্ষণ আগে ওয়ানডে থেকে অবসর নিয়েছে। মুশফিককে আমি এতটুকুই বলতে চাই যে দোস্ত, তোর সঙ্গে আমার খেলার শুরু অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে এবং আমি তোকে ধাপে ধাপে বেড়ে উঠতে দেখেছি। তোকে দেখেছি যে সাধারণ ব্যাটসম্যান থেকে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হয়েছিস। অনেকেরই তার কঠোর পরিশ্রমটা দেখার সুযোগ হয়নি। আমি দেখেছি যে একটি ছেলে কত কষ্ট করতে পারে। একটা মানুষের পক্ষে যতটা কষ্ট করা সম্ভব, আমার কাছে মনে হয় যে সে সবই করেছে, এখনো করে যায়। আমরা এটা নিয়ে অনেক সময় হাসাহাসি করি যে একটা মানুষ এত কষ্ট করে কেন। কিন্তু তার নিবেদন, খেলার প্রতি ভালোবাসা, এটা বিশাল। এটা আমি কথায় কোনো দিন কাউকে বোঝাতে পারব না। খেলা ছেড়ে দেওয়া ওর জন্য কত কষ্টকর, আমি যেহেতু ওর কাছের একজন বন্ধু, আমি বুঝতে পারি যে এটা তার জন্য খুব খুব কঠিন।’
দুই দশকের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে মুশফিকুর রহমিন ২৭৪ ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন বাংলাদেশের জার্সিতে। ৯ সেঞ্চুরি ও ৪৯ ফিফটিতে ৩৬.৪২ গড়ে মোট ৭৭৯৫ রান করা মুশফিক বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের মালিক ওয়ানডে ফরম্যাটে। তার অবসরের ঘোষণার পর তামিম বিদায়ী বার্তায় বলেন ‘বন্ধু, তুমি যা কিছুই অর্জন করেছ, বাংলাদেশের জন্য অধিনায়ক ও খেলোয়াড় হিসেবে যা করেছ, এসব বছরের পর বছর মনে রাখা হবে।’
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০