নিজস্ব প্রতিবেদক:: সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিনে সারা দিনে খেলা হলো মাত্র ৪৭ ওভার। তাতেও অবশ্য খুব একটা সুবিধাজনক স্থানে নেই বাংলাদেশ। চার উইকেট হারিয়ে ফেলেছে, লিড নিতে পেরেছে মাত্র ১১২ রানের। কোচ ফিল সিমন্সের জন্মদিনের উপহার চাওয়া জয় পেতে হলে বাংলাদেশকে প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ের লক্ষ্য আরো বড় করতে হবে। বাংলাদেশ দল তৃতীয় দিন শেষ করেছে চার উইকেটে ১৯৪ রান তুলে।
তৃতীয় দিনের বেশির ভাগ সময়ই চলে গেছে বেরসিক বৃষ্টির পেটে। সাড়ে তিন ঘন্টার মতো খেলা হয়নি বৃষ্টির কারণে। বৃষ্টি বাঁধা কাটিয়ে দুপুর ১টায় দিনের খেলা শুরু হয়। এক উইকেটে ৫৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা বাংলাদেশ খুব বেশিদূর যেতে পারেনি। আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান মাহমুদুল হাসান জয় ৩৩ রান করেই ফিরেন প্যাভেলিয়নে। দিন শুরু করেছিলেন ২৮ রানে অপরাজিত থেকে, আজ ৫ রান যোগ করতেই প্যাভেলিয়নে ফেরেন দলীয় ৭৩ রানে। ইনিংসের ২০তম ওভারের পঞ্চম বলে তাকে ফিরিয়ে দেন মুজারাবানি। ভেঙে যায় দ্বিতীয় উইকেটে মুমিনুলের সঙ্গে তার ৬০ রানের জুটি।
তৃতীয় উইকেটেও মুমিনুল হক হাফ সেঞ্চুরির জুটি গড়েন। অধিনায়ক শান্তকে নিয়ে ৬৫ রান যোগ করেন। এরপরই ৪৭ রান করে প্যাভেলিয়নে ফেরেন মুমিনুল। দলীয় ১৩৮ রানে, ইনিংসের ৩৫তম ওভারে শেষ বলে বাংলাদেশ হারায় তৃতীয় উইকেট। ৮৪ বলের ইনিংসে বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন ছয়্টি। চতুর্থ উইকেটে শান্ত মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। তবে আরো একবার ব্যর্থ হন এই সিনিয়র ক্রিকেটার। ব্যক্তিগত ৪ রানে, ২০ বল খেলে ইনিংসের ৪২তম ওভারের চতুর্থ বলে মুশফিকের বিদায়ে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
তবে পঞ্চম উইকেটে শান্ত জাকেরকে নিয়ে জুটি গড়া শেষ বিকেলের বিপদ সামলান। ৩৯ রানের জুটিতে দু’জনে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন। অধিনায়ক শান্ত হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। ৬০ রানে তিনি নিজে ও ২১ রানে জাকের আলী অপরাজিত আছেন। চতুর্থ দিনে দু’জনে আবারো ব্যাট করতে নামবেন।
জিম্বাবুয়ের ব্লেসিং মুজারাবানি ৩টি উইকেট লাভ করেছেন।
এর সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় দিন সকাল শুরু হয় জিম্বাবুয়ের দাপটেই। আগের দিন বাংলাদেশকে ১৯১ রানে অলআউট করে দিয়ে আজ দ্বিতীয় দিন জিম্বাবুয়ে ব্যাটিংয়ে নামে শুন্য উইকেটে ৬৭ রান নিয়ে। পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ ম্যাচে ফেরার জন্য লড়াই করতে থাকে। সকালের প্রথম সেশনে সেই লড়াইয়ে কিছুটা সফল হয়েছে বাংলাদেশ।
পেসার নাহিদ রানার গতিতে কাবু হযেছেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা। একাই তুলে নেন তিন উইকেট। বাংলাদেশ প্রথম সেশন করে করে প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ের চার উইকেট তুলে নিয়ে। দুই ওপেনার ব্রায়ান বেনেট ও বেন কারানকে ফেরানোর পর সফরকারী অধিনায়ক আরভিনকেও ফেরান নাহিদ। ইনিংসের ১৭তম ওভারের পঞ্চম বেন কারানকে ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু আনেন নাহিদ। দলীয় ৬৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় সফরকারীরা। ৫৫ বলে ১৮ রান করেন এই ওপেনার।
২১তম ওভারের শেষ বলে সফরকারীদের ওপেনার, হাফ সেঞ্চুরিয়ান ব্রায়ান বেনেটকেও ফিরিয়ে দেন নাহিদ। দলীয় ৮৮ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। দশ বাউন্ডারিতে ৬৪ বলে ৫৭ রান করেন এই ওপেনার। উইকেটের ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন হাসান মাহমুদও। পরের ওভারের তৃতীয় বলে নিকোলাস ওয়েলসে ফিরিয়ে দেন ওই ৮৮ রানেই। পরপর দুই উইকেট হারায় আরভিনের দল। ১২ বলে ২ রান করেন এই ব্যাটসম্যান।
দ্রুত তিন উইকেট পতনের পর জিম্বাবুয়ের হয়ে হাল ধরেন অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন। তবে তাঁকে থামিয়ে দেন নাহিদ। বাংলাদেশের পেসারের গতিতে কাবু হন তিনি। দলীয় ১২৯ রানে লাঞ্চ বিরতি আগেই চার উইকেট হারায় সফরকারীরা। ৩৯ বলে ৮ রান করেন তিনি।
পঞ্চম উইকেটে মাধেভেরে ও শন উইলিয়ামস ৪৮ রানের জুটি গড়ে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেন। তবে খুব একটা সফল হননি্ ৫০তম ওভারের তৃতীয় ভলে মাধভেরেকে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন খালেদ। দলীয় ১৭৭ রানে ব্যক্তিগত ২৪ রানে সাজঘরে ফিরেন মাধেভেরে। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে দারুণ ব্যাট করতে থাকেন হাফ সেঞ্চুরিয়ান শেন উইলিয়ামস। মাধেভেরের বিদায়ের পর ষষ্ট উইকেটে তার বিদায়ে বড় ধাক্কা খায় সফরকারীরা। ইনিংসের ৫৫তম ওভারের তৃতীয় বলে ১৯৩ রানের মাথায় মিরাজ সাজঘরে পাঠান সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলা এই ব্যাটসম্যানকে। ছয় চার ও দুই ছক্কায় ১০৮ বলে ৫৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
এরপর জিম্বাবুয়ে আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি। নিয়াশা মায়াভো ও রিচার্ড এনগারাভাদের শেষ দিকের ছোট ছোট ইনিংসে ৮০.২ ওভারে ২৭৩ রানে গুটিয়ে যায়। নিয়াশা মায়াভো ৫৪ বলে ৩৫ রান করেন। রিচার্ড এনগারাভা একটি করে চার ও ছক্কায় ৪৪ বলে ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন।
বাংলাদেশের হয়ে মিরাজ ৫টি, নাহিদ রানা ৩টি, খালেদ ও হাসান একটি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০