নিজস্ব প্রতিবেদক:: মাঠে তো আসলেইন না, পুরোটা সময় টিম হোটেলে নিজেদের রুমগুলোতে অনেকটা বন্দীদশা কাটিয়েছেন দুর্বার রাজশাহীর বিদেশী ক্রিকেটাররা। পারিশ্রমিক না পেয়ে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ম্যাচ খেলবেন না আগেই জানিয়ে দেন বিদেশীরা।
খবর চাউর হলে নড়েচড়ে বসে বিসিবি। বিপিএলের নিয়ম অনুযায়ী একাদশে দুইজন বিদেশী রাখা বাধ্যতামূলক। তাই অন্তত দুই বিদেশীকে খেলানোর চেষ্টা করে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। শেষ মূহুর্তে তাই পারিশ্রমিকের অর্থ নগদ দিয়ে টিম মালিকদের একজন হোটেলে যান। ম্যাচ শুরুর আগে মোটরসাইকেলে করে বিদেশী ক্রিকেটারদের মাঠে আনার চেষ্টা করেন। কিন্তুু ক্রিকেটাররা নিজেদের রুমের দরজাই খুলেননি।
ম্যাচ শেষে দুর্বার রাজশাহীর অধিনায়ক তাসকিন আহমদ সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘শুনেছি দলের পক্ষ থেকে একজন নগদ টাকা নিয়ে হোটেলে ক্রিকেটারদের রুমে গিয়ে ছিলেন। তারা দরজাই খুলেননি।’
এভাবে টাকা না পেয়ে বিদেশী ক্রিকেটারদের ম্যাচ বয়কট আগে ঘটেনি। এই ঘটনা নিঃসন্দেহে বিরুপ প্রচার হবে বিপিএলের। বিদেশী মিডিয়ায়, ক্রিকেটাঙ্গণে নৈতিবাচক খবরের শিরোনাম হবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেট। দেশ ছাড়িয়ে এবার বিদেশেও বিপিএলে টাকা না দিয়ে খেলিয়ে নেওয়ার ঘটনা।
আজ রোববার ম্যাচের আগে দুর্বার রাজশাহী দেশী ক্রিকেটারদের হাতে টাকা তুলে দেয়। কিন্তুু বিদেশী ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক দেয়নি দলটি। এরপরই বিদেশীরা জানিয়ে দেন তারা মাঠে যাবেন না। ম্যাচ খেলবেন না। সেটাই ঘটেছে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটের শুরু থেকেই ‘বিতর্ক’ হয়েছে, তবে এতোটা ‘বিতর্ক’ কখনো হয়নি। পারিশ্রমিক না পাওয়ায় মাঠে নামেননি বিদেশীরা। অথচ বিপিএলের একাদশে দু’জন বিদেশীকে খেলানো বাধ্যতামূলক ছিলো।
তবে বিদেশিহীন দুবার রাজশাহী দুর্দান্ত এক জয় উপহার দিয়েছে সমর্থকদের। অথচ আজকের ম্যাচে দলটির মাঠে নামা নিয়েই ছিলো যত শঙ্কা। পারিশ্রমিক ইস্যুতে বিপিএলের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি ঘটিয়েছেন রাজশাহীর মালিকরা। টাকা না পেয়ে খেলর জন্য মাঠেই যাননি বিদেশি ক্রিকেটাররা। ফলে বাধ্যতামুলক একাদশে দুই বিদেশী রাখার কোটা পূর্ণ করতে পারেনি রাজশাহী। বিসিবির বিশেষ অনুমতিতে দেশী একাদশ নিয়ে মাঠে নেমে বিপিএলের সবচেয়ে সফল দলকে দ্বিতীয়বারের মতো হারিয়ে চমকে দিয়েছে তাসকিনের দল।
টস হেরে ব্যাট করতে নামা রাজশাহী সানজামুল ইসলামের ব্যাটে ভর করে ঠেনেঠুনে ৯ উইকেটে ১১৯ রান তুলে। স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে সানজামুল ইনিংস সর্বোচ্চ ২৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। ২৯ বলের ইনিংসে তিনি চারটি চার হাঁকিয়েছেন। উইকেটকিপার আকবর আলী দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯ রান করেছেন ২১ বলে দুই বাউন্ডারিতে। ১৩ রান করে এসেছে এনামুল হক বিজয় ও অধিনায়ক তাসিকনের ব্যাটে।
রংপুরের হয়ে খুশদিল শাহ তিনটি, রাকিবুল ও সাইফুদ্দীন দু’টি করে উইকেট লাভ করেন।
মাত্র ১২০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা রংপুর রাইডার্স শেষ পর্যন্ত হেরে যায় দুই রানের জন্য। ব্যাট হাতে সাইফুদ্দিন লড়াই করলেও দলকে শেষ পর্যন্ত জেতাতে পারেননি। খুশদিল শাহ, ইফতিখার আহমেদ, স্টিভেন টেলরদের মতো বিদেশিদের নিয়ে গড়া রংপুর রাইডার্সকে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে। চার উইকেট নিয়ে রাজশাহীর জয়ের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। হাফ সেঞ্চুরি করে অপরাজিত থেকেছেন সাইফুদ্দিন। তার ৩১ বলে ৫২ রানের ইনিংসটি অবশ্য বৃথা গেছে। ছয় চার ও তিন ছক্কা মার ছিলো তার ইনিংসে। দুই চারে ২২ বলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ রান করেছেন রাকিবুল। ১৪ রান করেছেন ইফতিখার। মৃত্যুঞ্জ, তাসকিন ও মোহর শেখদের বোলিং তোপে নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেটে ১১৭ রানে থামে রাইডার্সরা।
রাজশাহীর হয়ে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী চারটি, মোহর শেখ ও তাসকিন দু’টি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০