স্পোর্টস ডেস্কঃ বিশ্বকাপে টানা তৃতীয় হারের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে আজ বড় ব্যবধানে হেরেছে টাইগাররা। পুনেতে আগে ব্যাট করে ২৫৬ রানের পুঁজি পায় লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। রান তাড়ায় বিরাট কোহলির সেঞ্চুরিতে ৭ উইকেটের বড় জয় পায় ভারত। টানা চার জয়ে পয়েন্ট টেবিলে ৮ পয়েন্ট তাদের। রান রেটে অবশ্য রোহিত শর্মার দলের অবস্থান দুইয়ে।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দারুণ শুরু ভারত। দুই ওপেনার মেরে খেলতে থাকেন প্রথম থেকেই। শুভমান গিল-রোহিত শর্মা টাইগার বোলারদের পাত্তাই দেন নি। তবে ফিফটি থেকে ২ রান দূরে থাকতে হাসান মাহমুদের বলে সীমানার কাছে তাওহীদ হৃদয়কে ক্যাচ দেন রোহিত। ৪০ বলে ৭ চার ও ২ ছয়ে ৪৮ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
এরপর বিরাট কোহলির সঙ্গে ৪৪ রানের জুটি গড়ে তুলেন গিল। দলীয় ১৩২ রানে আউট হন তিনি। মেহেদি হাসান মিরাজের উইকেটে ফেরার আগে তিনি ৫৫ বলে ৫৩ রান করেন ৫ চার ও ২ ছক্কায়। এরপর ক্রিজে আসেন শ্রেয়াস আইয়ার। কোহলির সঙ্গে জুটি বেধে রানের চাকা ঘুরাচ্ছিলেন তিনি। ব্যক্তিগত ১৯ রানে মিরাজের বলে আউট হন এ ব্যাটার। আইয়ার ক্যাচ দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে।
ভারতের ৫১ বল হাতে রেখে পাওয়া জয়ে বাকি কাজটা সেরে ফেলেন কোহলি ও লোকেশ রাহুল মিলে। ম্যাচ জেতানোরর পাশাপাশি সেঞ্চুরিও করেন কোহলি। ৯৭ বলে শেষ পর্যন্ত ১০৩ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। রাহুল অপরাজিত ৩৪ রানে। বিশ্বকাপের মঞ্চে তৃতীয় সেঞ্চুরি হাঁকালেন কোহলি। এই তালিকায় ভারতীয়দের মধ্যে শীর্ষে রোহিত। এই ওপেনারের বিশ্বকাপ সেঞ্চুরি ৭টি।
এর আগে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ১৫তম ওভারে এক পর্যায়ে বাংলাদেশের রান ছিল বিনা উইকেটে ৯৩। সেখান থেকে টাইগাররা কোনোমতে আড়াইশ পেরিয়ে থামে ২৫৬ রানে। ভারতের তিন বোলার- জাসপ্রীত বুমরাহ-কুলদিপ যাদব-রবীন্দ্র জাদেজা দারুণ বল করেছেন আজ। এই তিন বোলারের কাছে ৫ উইকেট খুইয়েছে বাংলাদেশ। তাদের করা ৩০ ওভারে রান করেছে ১২৬। অন্যদিকে স্বাগতিকদের বাকি বোলারদের করা ২০ ওভারে ১২৯ রান করেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা।
দলীয় ১৩৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসা বাংলাদেশকে টানছিলেন তাওহিদ হৃদয়-মুশফিকুর রহিম জুটি। তবে তাদের জুটি ভাঙে হৃদয়ে অহেতুক এক শটে। ৩৫ বলে ১৬ রান করে ধৈর্য্য হারিয়ে আউট হয়েছেন। শার্দুল ঠাকুরের করা শর্ট ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে গিলের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। মুশফিকও এরপর ফিরে গেছেন দ্রুত। তাকে আউট করেছেন বুমরাহ। জাদেজার হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৪৬ বলে ৩৮ রান করা মুশফিক।
এরপর মোহাম্মদ সিরাজের শর্ট ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন নাসুম আহমেদ। তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৪ রান। শেষদিকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৩৬ বলে ৪৬ রানের ইনিংস খেলেছেন। তাকে দারুণ এক ইয়র্কারে বোল্ড করেছেন জসপ্রিত বুমরাহ। এরপর ইনিংসের শেষ বলে শরিফুলের ছক্কায় বাংলাদেশ লড়াইয়ের পুঁজি নিশ্চিত করে। রিয়াদ ৩টি করে ছক্কা-চারে সাজান এই ইনিংস।
ভারতের হয়ে পেসার বুমরাহ ১০ ওভারে মাত্র ৪১ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন। সিরাজ ১০ ওভারে ৬০ রান দিলেও নিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ ২ উইকেট। এছাড়া জাদেজা ১০ ওভারে মাত্র ৩৮ রান খরচা করে ২ উইকেট তুলে নেন। শার্দুল ও কুলদীপ নেন ১টি করে উইকেট। এর আগে দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিম শুরুটা বেশ রয়েসয়ে করেন। প্রথম ৫ ওভারে স্কোর বোর্ডে জমা হয় মাত্র ১০ রান। এরপরই বাংলাদেশের দুই ওপেনার হাত খোলে খেলেন। ৪১ বলে নিজের ফিফটি তুলে নেন তানজিদ।
ফিফটির পর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তামিম। কুলদীপ যাদবের গুগলিতে বিভ্রান্ত হয়ে এলবিডব্লিউ হয়েছেন তিনি। ৪৩ বলে ৫১ রান এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। ৫ চার ও ৩ ছক্কায় সাজান তানজিদ তাঁর এই ইনিংস। এরপর দ্রুত ফিরে যান অধিনায়ক শান্ত। রবীন্দ্র জাদেজার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে ৬২ বলে ফিফটি হাঁকান লিটন। তবে অন্য প্রান্তে থাকা মিরাজ ফিরেন মোহাম্মদ সিরাজের বলে। ৩ রানের বেশি করতে পারেন নি এই ব্যাটার। এরপর ফিরেন লিটনও। রবীন্দ্র জাদেজাকে লং অফ দিয়ে উড়িতে মারতে গিয়ে শুভমান গিলের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। ব্যক্তিগত ৬৬ রানে থামতে হয়েছে তাকে। ৮২ বলে ৭ চারে এই ইনিংস সাজান তিনি।
Discussion about this post