স্পোর্টস ডেস্ক:: সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ হারলেও সমর্থকদের মন কেড়েছেন ফুটবলাররা। ম্যাচ হারের পরও হামজা-শামিতদের নামে স্লোগান হয়েছে, দর্শকেরা সমর্থন দিয়েছেন ফুটবলারদের। ম্যাচের শেষ দিকে নিশ্চিত পেনাল্টিও বঞ্চিত হয়েছে বাংলাদেশ। ২-১ ব্যবধানে হারের পর আলোচনায় এসেছে সেই পেনাল্টিও।
ম্যাচের ৯২ মিনিটে সিঙ্গাপুরের একজন খেলোয়াড় বাংলাদেশের ফাহিমকে ফাউল করেন ডি বক্সের ভেতরে। তবে রেফারি কর্নার দিয়ে বসেন। এসময় বাংলাদেশ দলের ডাগ আউটে কোচিং স্টাফের সদস্যদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। গ্যালারিও হয়ে উঠে উত্তাল। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বিপদজনক সীমানায় বাংলাদেশের ফাহিম ফাউলের শিকার হন। যা পেনাল্টিই ছিলো। রেফারি পেনাল্টি দিলে ম্যাচের ফলাফল হয়তো ভিন্নও হতে পারতো।
তবে নতুন রূপে ফেরা জাতীয় স্টেডিয়ামে নতুন এক বাংলাদেশ দেখেছেন সমর্থকেরা। একঁঝাঁক প্রবাসী ফুটবলার নিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশ হতাশ করেছে সমর্থকদের। এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে লাল সবুজরা হেরেছে ২-১ ব্যবধানে।
হামজা, শামিত, ফাহামিদুল, তারেক কাজী আর কাজেশ শাহদের নিয়ে গড়া বাংলাদেশ দুই অর্ধে হজম করেছে দুই গোল। দুর্দান্ত খেললেও একাধিক সুযোগ মিসের কারণে শেষ পর্যন্ত হারতে হয়েছে। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর।
বাংলাদেশ হেরে গেলেও লড়াই করেছে প্রাণপণ। শেষ দিকে ভাগ্যকেও পাশে পায়নি স্বাগতিকরা। বারবার বল প্রতিপক্ষের পোস্টে লেগে ফিরেছে। বাংলাদেশের স্ট্রাইকাররাও সুযোগ মিস করেছেন বেশ। তবে হারলেও হামজা-শামিতদের বাংলাদেশ সমর্থকদের মন জয় করেছে।
দুর্দান্ত খেলেও বাংলাদেম প্রথমার্ধে গোল হজম করেছে। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে প্রথমার্ধে বাংলাদেশ ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ রেখে খেললেও বিরতির আগে পিছিয়ে পড়েছে। সিঙ্গাপুর ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে গেছে।
বাংলাদেশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা একাদশে তিনটি পরিবর্তন করেন। সবশেষ ভুটান ম্যাচের একাদশ থেকে বাদ পড়েন সোহেল রানা, জামাল ভুঁইয়া ও তাজ উদ্দিন। লাল সবুজ জার্সিতে অভিষেক হয়েছে শামিত শোমের।
হামজা, ফাহামিদুল-শামিতদের বাংলাদেশ দারুণ খেলতে থাকে। একাধিক আক্রমণও করে প্রতিপক্ষের জালে। ম্যাচের ৩০তম মিনিটে বাংলাদেশ বড় বিপদ থেকে বাঁচান গোলরক্ষক মিতুল। পাল্টা আক্রমণে গোলের দারুণ সুযোগ তৈরি করে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল জালে পাঠাতে পারেননি রাকিব।
শামিত শোমরা একের পর এক আক্রমণে ব্যস্ত রাখেন সিঙ্গাপুরের রক্ষণকে। তবে শেষ পর্যন্ত বিরতির আগ মূহুর্তে গোল হজম করতে হয় লাল সবুজদের। ম্যাচের ৪৪তম মিনিটে র সং উই ইয়াংয়ের গোলে সিঙ্গাপুর ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ বিরতির আগ পর্যন্ত আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি।
বাংলাদেশকে গোল হজম থেকে রক্ষার চেষ্টা করেন হামজা। তবে সফল হননি। গোলকিপার মিতুল বল ফিস্ট করতে গিয়ে ব্যর্থ হন। সতীর্থের হেড থেকে বল পেয়ে শট নেন সিঙ্গাপুরের সং উই ইয়াং। দৌড়ে গিয়ে গোল আটকাতে ব্যর্থ হন হামজা। পিছিয়ে পড়ে স্বাগতিকরা।
বিরতির পর বাংলাদেশ আরো দারুণ ভাবে ফিরে আসে। একের পর এক আক্রমণে উঠে। একাধিক সুযোগ মিসও করে। ম্যাচের ৬৬তম মিনিটে হামজার পাস থেকে রাকিবের দারুণ এক গোলে ব্যবধান কমায় স্বাগতিকরা। ম্যাচের স্কোর লাইন হয় ২-১। এরপর গ্যালারিতেও যেনো প্রাণ ফিরে।
পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ ম্যাচে ফিরতে একাধিক পরিবর্তন আনে। মাঠে নামানো হয় মোরসালিন, হৃদয়দের। বেশ কয়েকটি সুযোগও পায় স্বাগতিকরা। তবে কাজে লাগাতে পারেনি। শেষ দিকে একের পর এক কর্নার কিক পেলেও গোলের দেখা মিলেনি। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার আগ মূহুর্তেও গর্জে উঠে জাতীয় স্টেডিয়ামে। গোল পেয়েও যেনো পায়নি লাল সবুজরা। শেষ পর্যন্ত তাই ২-১ গোলে হারে এশিয়ান কাপে খেলার স্বপ্ন বিসর্জন দিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তপুদের।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০